টঙ্গী ইজতেমা মাঠে বিভিন্ন মাদরাসার কর্তব্যরত ছাত্র, সাথী, জিম্মাদার এবং মাঠের মকতবের ছাত্রদের উপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা ছিল পূর্বপরিকল্পিত। এ হামলায় অন্তত দুইহাজার বা তারও বেশি আহত এবং গুরতর আহত হয়। এখনো শতাধিক আহত বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন আছে। কেউ কেউ আইসিইউতে চিকিৎসাধীন আছে। সাদপন্থীদের জুলুম এবং নির্যাতনের শিকার দাওয়াতের সাথী ও ওলামাদের পক্ষ থেকে ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটির সাগর-রুনি হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোক করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তাবলীগের দায়িত্বশীল মুফতি আমানুল হক। সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, মাওলানা নুর ইসলাম, মুফতি জহির ইবনে মুসলিম, মাওলানা মোঃ ফয়সাল, মাওলানা মোঃ জাকারিয়া, গুরুতর আহত মোহাম্মদ আলী হোসেন, মোঃ মোহসীন, আব্দুল জলিল, আবুল হাসেম, মোঃ হাবিবুর রহমান, মাওলানা এমদাদ, মোঃ আব্দুল কাদেরসহ অর্ধশতাধিক সাথী। সংবাদ সম্মেলনে টঙ্গী ইজতেমা মাঠের গেটের পাহারায় নিয়োজিত জিম্মাদার মুমিনুল হক ভূঁইয়া, ইঞ্জিনিয়র মামুন ও মুফতি আমানুল হক তাদের বক্তব্যে বলেন, হামলার পূর্ব রাতে ওয়াসিফ ও নাসিম পন্থীরা চৌধুরীপাড়া একটি মাদরাসায় ও কয়েকটি মসজিদে আবস্থান নিয়েছিল। তারা বলেন, এতো সকালে হাজার হাজার হামলাকারী বাইরে থেকে এসে লাঠি, রড ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ন্যাক্কারজনক হামলার বিষয়টি গোয়েন্দাসংস্থার জানা থাকার বাইরে নয়। তাছাড়া হামলার পূর্বে পরিচয় দেয়া ডিআইজি পদবির একজনসহ চারজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা উপস্থিত হন। কিছুক্ষণ পর টঙ্গী ইজতেমার মাঠে উত্যপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এসময় জিম্মাদাররা আতঙ্কিত হয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের নিকট প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এমতাবস্থায় মাঠে কোন অঘটন ঘটবে না এমন নিশ্চয়তা দিলে মাঠের ভিতরের সাথীরা নামাজের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। নামাজের শেষ পর্যায়ে হামলাকারী ওয়াসিফ পন্থীরা আশরাফ সেতু প্রকল্পের ছাদে পূর্ব থেকে জমা করা
ইটের টুকরো দিয়ে হামলার সূচনা করে চূড়ান্ত হামলা শুরু করে। আর তাদের এ হামলাতেই দুই হাজার বা তারও বেশি আহত ও গুরুতর আহত হয়েছে। যা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।
সংবাদ সম্মেলনে দাবীসমূহ হচ্ছে, হামলার নির্দেশদাতা ওয়াসিফ, নাসিম গংদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান। ওয়াসিফ, নাসিম গংদের কাকরাইলের শুরা থেকে বহিষ্কার। টঙ্গী ময়দান কাকরাইলের ওয়াসিফ বিরোধী শুরার হাতে হস্তান্তর। সারা দেশে ওলামায়ে কেরাম ও শুরাভিত্তিক পরিচালিত সাথীদের উপর হামলা-মালমা বন্ধ। আগামী ইজতেমা ১৮,১৯,২০ জানুয়ারি এবং ২৫,২৬,২৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা নেয়া। টঙ্গীর মাঠে নামাজ, শবগুজারী ও মকতব চালু করা। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশে এ সাদ পন্থীরা এত বড় ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটানোর পর প্রায় এক সপ্তাহ পার হয়ে গেছে। এ হামলার নির্দেশদাতা ওয়াসিফ, নাসিম ও হামলার সাথে সরাসরি জড়িত কেউ এখনো গ্রেফতার হয়নি। প্রশাসনের এই নিরব ও রহস্যজনক ভূমিকায় বাংলার আলেম সমাজ ও তাওহীদি জনতা হতবাক। কোনো থানাতে তাদের নামে মামলা গ্রহণ করা হচ্ছে না। উপরন্তু তারা আমাদের সাথী, আলেম, ওলামাকে হামলা মামলার হুমকি প্রদান করছে। প্রকাশ করছে বিজয় উল্লাস। সাংবাদিক সম্মেলনে ও টকশোর মাধ্যমে প্রচার করছে মিথ্যা ও বিভ্রান্তমূলক খবর। অথচ তাদের মুখপাত্র মাওলানা আশরাফ আলী টিভি টকশোতে স্বীকার করেছে তারা গেট ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে তান্ডব চালিয়েছে। এমতাবস্থায় তাওহীদি জনতার ধৈর্যের বাধ ভেঙ্গে যাচ্ছে। যদি কোনো অপ্রীতিকর অবস্থার সৃষ্টি হয় তাহলে এর দায়-দায়িত্ব সরকার এবং প্রশাসনকে বহন করতে হবে। -প্রেস বিজ্ঞপ্তি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন