রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ০৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

প্রথমের খোঁজে বাংলাদেশ

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

২০০১ সাল থেকে ২০১৭ সাল- দেড় যুগের এই পথচলায় চারবার নিউজিল্যান্ডে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ। টেস্ট, ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে ম্যাচ থেলেছে ২১টি। তিন সংস্করণে জয় তো দূরে থাক, সেখান থেকে একটি প্রস্তুতি ম্যাচ জয়ের রেকর্ডও নেই বাংলাদেশের। এমনকি ড্র করতেও পারেনি একটি ম্যাচ। ওয়ানডে ক্রিকেটে বেশ শক্ত অবস্থায় থেকে আরেকটি নিউজিল্যান্ড সফর। এবার সেই ইতিহাস বদলাতে চায় বাংলাদেশ। দেশ ছাড়ার আগে কোচ স্টিভ রোডস বলে গেলেন, এবার কিছু ম্যাচ জিততে চায় দল। তবে সেটি যে খুব একটা সহজ হবে না তা-ও জানিয়ে গেলেন এই ইংলিশ। তার মতে বিশ্ব ক্রিকেটে বাংলাদেশের অবস্থান আসলে কোথায়, এটা এবার দেখা যাবে নিউজিল্যান্ডের পারফরম্যান্সে।

নিউজিল্যান্ডে ওয়ানডে সিরিজ খেলতে বাংলাদেশ স্কোয়াডের প্রথম ভাগ ঢাকা ছেড়েছে গতকাল দুপুরে। বিপিএলের ফাইনালের লড়াইয়ে না থাকা ৮ ক্রিকেটারের সঙ্গে গিয়েছেন কোচ রোডস ও ম্যানেজার খালেদ মাসুদ পাইলট। বাকি ৭ জন যাবেন আগামী শনিবার রাতে। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ দিয়ে শুরু সফরে তিনটি টেস্টও খেলবে বাংলাদেশ।

নিউজিল্যান্ডের মাঠে বাংলাদেশ ওয়ানডে খেলেছে মোট ১১টি। ৯টি দ্বিপাক্ষিক সিরিজে। সব ম্যাচেই যথারীতি হার। ২০১৫ বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের মাঠে খেলেছিল দুই ম্যাচ। স্বাগতিকদের সঙ্গে সেবারও পেরে উঠেনি মাশরাফি মর্তুজার দল। তবে ওই বিশ্বকাপেই স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে নেলসনে জিতেছিল বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের মাঠে বাংলাদেশের একমাত্র জয় হয়ে আছে এটি। ওখানে স্বাগতিকদের বিপক্ষে দুই দফায় চারটি টি-টোয়েন্টিও খেলেছে বাংলাদেশ। লড়াই করতে পারেনি কোনটিতেই।

বাংলাদেশের জন্য নিউজিল্যান্ড সফর কতটা কঠিন, সেটি ফুটিয়ে তুলছে পরিসংখ্যানই। তবে এবার জয়ের শূন্য খাতায় কিছু ছাপ রাখার প্রত্যয় জানিয়ে গেলেন রোডস। নিউজিল্যান্ডের মাঠে এত সব তেতো স্মৃতি কথা খুব ভালো জানা আছে রোডসেরও। বাস্তবতা মাথায় নিয়েও রোডস তবু আশা দেখছেন এবার ভিন্ন কিছু করার, ‘হ্যাঁ, এটা (এই সিরিজের ফল) আসলে দেখাবে যে বিশ্ব ক্রিকেটে আমরা কোন জায়গায় আছি। আমাদের লক্ষ্য বিশ্বকাপ। আয়ারল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টুর্নামেন্টটা অবশ্য বিশ্বকাপের বেশি কাছের। ওটা হবে বিশ্বকাপ প্রস্তুতির একদম চূড়ান্ত ধাপ।’

চার দফায় নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মোট সাতটি টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। হার সবগুলোতেই। সর্বশেষ সফরের ফল বাদ দিলে লড়াই হয়নি কোনটিতেই। ওয়ানডেতে সম্ভাবনা বেশি, জান প্রাণ দিয়ে লড়ে ফল আদায় করার পণটাও সেখানে তাই থাকবে বেশি। নিউজিল্যান্ডের মাঠে যেখানে পেসারদের স্যুয়িং আর বাউন্সে নাকাল হতে হয় ব্যাটসম্যানদের সেখানে লাল বলে আরও কঠিন পরীক্ষা দেখছেন রোডস, ‘টেস্ট আরও অনেক কঠিন হবে। দেশের বাইরে খেলার জন্য আমরা আগের চেয়ে ভালো অবস্থায় আছি যদিও। আশা করছি টেস্টেও কিছু ইতিবাচক ফল আনতে পারব।’ কোচের বেশি আশা তাই ওয়ানডেকে ঘিরেই, ‘আশা করি, এবার কিছু ম্যাচ জিতব। জিততে পারলে দারুণ হবে। কাজটা খুব সহজ নয়, আমাদের সবশেষ সফরেও সেটি প্রমাণ হয়েছে। তবে দল নিয়ে আমরা খুশি এবার। ক্রিকেটারদের সা¤প্রতিক পারফরম্যান্সে আমরা খুশি। ওয়ানডেতে আমরা ভালো খেলি, এই সংস্করণে আমরা গর্ব খুঁজে নেই। ওয়ানডেতে তাই সেরা ফলের আশা করছি। টেস্ট ম্যাচগুলি খুব কঠিন হবে। তবে, দেশের বাইরে খেলতে আগের চেয়ে আমরা এখন বেশি প্রস্তুত। আশা করি, টেস্ট ম্যাচেও এবার ভালো করতে পারব।’
সবশেষ ২০১৬-১৭ মৌসুমে নিউ জিল্যান্ডে পূর্ণাঙ্গ সফরে গিয়েছিল বাংলাদেশ। এবার তাই দুই সফরের মাঝে বিরতি অনেক লম্বা ছিল না। অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজের আশা, আগের অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে এবার, ‘আমরা বেশ কিছু দিন আগেই যাচ্ছি। অনুশীলনের কয়েকটি দিন সময় পাব। নিউ জিল্যান্ডে আমরা আগেও গিয়েছি। কন্ডিশন সম্পর্কে আমার একটু ধারণা আছে। যত দ্রæত মানিয়ে নেওয়া যায়, সেই চেষ্টা করব। আমরা যারা আগে যাচ্ছি, আশা করি প্রস্তুতি ভালো হবে।’ আগের সফরগুলোর অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর কথা শোনা গেল ভাগ্যচক্রে দলে ঠাঁই পাওয়া সাব্বির রহমানের কণ্ঠেও, ‘এর আগে দুইবার গিয়েছি নিউজিল্যান্ডে, অভিজ্ঞতা আছে। আবহাওয়া কেমন, ধারণা আছে। আশা করি, দ্রæত মানিয়ে নিতে পারব ও ভালো খেলার চেষ্টা করব।’

আগামী বুধবার নেপিয়ারে শুরু হবে ওয়ানডে সিরিজ। তার আগে ১০ মার্চ লিংকনে একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। প্রথম ভাগে যাওয়া ৮ ক্রিকেটারের সঙ্গে স্থানীয় ক্রিকেটারদের নিয়ে ওই ম্যাচ খেলবে দল। দ্বিতীয় ভাগে যারা যাবে, সেই সাত জন সরাসরি দলের সঙ্গে যোগ দেবে নেপিয়ারে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন