সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জে আইন কানুনের তোয়াকাকা না করে চলছে জমজমাট ক্লিনিক (ডায়াগনস্টিক) ব্যবসা। হাওর বেষ্টিত এ উপজেলায় ৬ টি ইউনিয়নের দুই লক্ষাধিক মানুষের বাস। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রয়োজনীয় সেবা না পেয়ে রোগীরা উপজেলা সদরে বিভিন্ন নিম্নমানের ক্লিনিকগুলোতে দৌড় ঝাপ করেন।
সরেজমিন জামালগঞ্জ গিয়ে দেখা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান ফটকের কাছেই জামালগঞ্জ ডায়াগনস্টিক সেন্টার এন্ড এক্স-রে নামের একটি ডায়াগনস্টিক। এ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ভেতরে গিয়ে দেখা গেছে পরিবেশ নোংরা। ল্যাব ও এক্স-রে রুমের পরিবেশ নিয়ম নীতির কোন কিছুই মানা হয়নি। এক্স-রে রুমের চারিদিকে ম্যানহাইট পর্যন্ত ১০ ইঞ্চি উচ্চতা দেওয়াল দেওয়ার কথা থাকলে ১০ ইঞ্চি দেওয়াল দেয়া হয়েছে এক দিকে। অন্য ৩ দিকে ৩ ইঞ্চি দেওয়াল।
এছাড়াও এক্স-রে মেশিন কক্ষ যেখান থেকে টেকনিশিয়ান এক্সপোজ দেন। সেখানে ১০ ইঞ্চি দেওয়াল দেওয়ার কথা থাকলেও সেখানে নাম মাত্র দেওয়াল দেয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, কোন ল্যাব টেকনিশিয়ান না থাকলেও দেওয়া হচ্ছে রক্ত, মলমূত্র পরীক্ষার ফলাফল। শুধু তাই নয়, ওই ডাযাগনস্টিকের মালিক তার স্ত্রীর সিনিয়র স্টাফ নার্স হওয়ার সুবাধে তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্টাফ কোয়াটারে বসবাস করছেন। সেখানে থাকার সুবাধে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা রোগীদের সহজেই ম্যানেজ করে নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে নিয়ে আসেন।
সূত্র জানায়, এক্স-রে টেকনিশিয়ানের রেডিয়েশন প্রটেকট-এর জন্য বাংলাদেশ পরমানু শক্তি কমিশন থেকে টেকনিশিয়ানের জন্য টিএলডি ব্যাজ নিতে হয়। যা প্রতি ৩ মাস অন্তর অন্তর ওই টিএলডি ব্যাজ বাংলাদেশ পরমানু শক্তি কমিশনে পাঠিয়ে দেওয়ার নিয়ম নীতি থাকলেও এ নিয়মটি মানছেন না তারা। শুধু তাই নয় এক্স-রে রুমের মধ্যেই কোন ধরনের ঔষধপত্র রাখার নিয়ম না থাকলেও ওই রুমে রাখা হয়েছে ল্যাবরেটরির বিভিন্ন রিএজেন্ট।
জানা যায়, ১৯৯৬ সালে জামালগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রানী হালদার নার্স হিসেবে যোগদান করেন। এর পর থেকে তার স্বামী সজ্ঞিব কান্তি বড়–য়া কোন প্রকার লাইসেন্স ছাড়াই জামালগঞ্জ ডায়াগনস্টিক সেন্টার এন্ড এক্স-রে নামের ক্লিনিক খুলে ব্যবসা শুরু করেন।
জামালগঞ্জ ডায়াগনস্টিক সেন্টার এন্ড এক্স-রে-এর মালিক সঞ্জিব কান্তি বড়–য়া জানান, তিনি নিয়ম অনুযায়ী সব কিছু কাজ করছেন। একটি মহল তার বিরুদ্ধে কুৎসা রটাচ্ছে। এর এক্স-রে রুম দেখতে চাইলে তিনি এক্স-রে রুমের নিয়ে যান। তার সঙ্গে ওই কক্ষে গিয়ে দেখা গেছে কক্ষে রাখা হয়েছে ল্যাবরেটরির রিএজেন্ট ও টেস্টটিউব। এক্স-রে রুমের কেন রিএজেন্ট ও টেস্টটিউব রাখা হয়েছে, এর উত্তরে সঞ্জিব বড়–য়া জানান এখন থেকে এ রুমের এসর আর রাখবেন না।
এ ব্যাপারে জামালগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মনিসর চৌধুরী জানান, এ বিষয় তার কোন হাত নেই। তিনি কোন ব্যাবস্থা নিতে পারেন না। ডায়াগনস্টিক বা ক্লিনিক-এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেন সিভিল সার্জন। সুনামগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. বিশ্বজিৎ গোলদার জানান, ডায়াগনস্টিক বা ক্লিনিকগুলোর বিরুদ্ধে অনিয়ম পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন