নদীখেকোদের দখলের কবলে মেঘনা নদীর সোনারগাঁয়ের অংশটি বর্তমানে অস্তিত্ত¡ সঙ্কটে। বহুদূর থেকে মেঘনা নদীর দিকে তাকালে চোখে পড়ে নদীর তীরবর্তী বিশাল এলাকাজুড়ে শুধু দখলদারিত্ব আর বিশাল বিশাল স্থাপনা। শুধু নদীর জায়গা নয়, শাখা নদী, খাস সম্পত্তি, নদী তীরবর্তী ফোরসোর ল্যান্ডভূক্ত জমি ও সরকারি খালের জমি এবং কৃষকের কৃষি জমি জোরপূর্বক দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে বিশাল বিশাল স্থাপনা। প্রভাবশালী নদীখেকোরা মেঘনা নদী অবৈধভাবে দখল-দূষণ করে বিভিন্ন ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করে পরিবেশকে মারাত্মক হুমকির মধ্যে ফেলেছে। অভিযোগ রয়েছে, প্রভাবশালীরা কোটি কোটি টাকা অবৈধ লেনদেনের মাধ্যমে উপজেলা প্রশাসন, বিআইডব্লিউটিএসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করেই সবকিছু করছে। যে কারণে বর্তমান সরকারের একশ’ দিনে সারাদেশে নদীর জায়গা উদ্ধারে অভিযান শুরু হলেও মেঘনার ক্ষেত্রে কিছুই হয়নি। এ নিয়ে দৈনিক ইনকিলাবে ছয় পর্বের ধারাবাহিক সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পরেও প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। ভুক্তভোগিদের ধারণা, শেষ পর্যন্ত টাকার কাছে হার মানবে সবকিছু। মেঘনা হয়তো দিন দিন অন্যান্য নদীর মতোই অস্তিত্ত¡বিলীন হয়ে হারিয়ে যাবে।
এদিকে, নদীখেকোরা যখন নদীসহ আশপাশের জায়গা দখলে ব্যস্ত, তখন উপজেলা প্রশাসন, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এবং পরিবেশ অধিদপ্তর নিজেদের দায় অন্যের উপর চাপাতে ব্যস্ত। নদী দখলের বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে, পরিবেশ অধিদপ্তরের নারায়ণগঞ্জ জেলা কার্যালয় ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) নারায়ণগঞ্জ জেলার যুগ্ম পরিচালক জেলা প্রশাসন ও সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। আবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) কার্যালয়ে যোগাযোগের পরামর্শ দেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার নদী খেকোদের সাথে পরিবেশ অধিদপ্তরের নারায়ণগঞ্জ জেলা কার্যালয় ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) কার্যালয়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় এবং সহকারি কমিশনার (ভূমি) এর কার্যালয়ের একাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সাথে গভীর সু-সম্পর্ক বিদ্যামান রয়েছে। সরকারের এই তিন সংস্থার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগীতায় প্রকাশ্যে চলছে নদী দখল। মোটা অঙ্কের ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট তিন সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে।
সোনারগাঁও উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা গেছে, নদী দখলের অভিযোগে মেঘনা ঘাট এলাকার মেঘনা গ্রুপ অব কোম্পানি, বারদী এলাকায় বেঙ্গল সিমেন্ট এবং হাড়িয়া এলাকার আমান সিমেন্ট, মেঘনা ঘাট এলাকায় মদিনা গ্রুপ, হোলসিম সিমেন্ট এবং বৈদ্যেরবাজার ঘাট এলাকায় অবস্থিত ইউরো মেরিন শিপবিল্ডার্স এবং হেরিটেজ পলিমার এন্ড ভেজিটেবলস লিমিটেডকে নদী, নদী তীরবর্তী ফোরসোর ল্যরান্ডভূক্ত সম্পত্তি এবং খাস জমির দখল ছেড়ে দিতে ৩ দিনের সময় দিয়ে চূড়ান্ত নোটিশ প্রদান করেছে সহকারি কমিশনার (ভূমি) এর কার্যালয়। তবে উক্ত নোটিশের প্রায় ৮ মাস অতিবাহিত হলেও রহস্যজনক কারণে ব্যবস্থা নেয়নি উপজেলা প্রশাসন। তবে এই শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো নদী তীরবর্তী ভূমি, ফোরশোর ল্যান্ড ভূক্ত ভূমি, খাসজমি, ভিপি জমি, শাখা নদী ও খাল দখলের সুস্পষ্ট অভিযোগ ও প্রমান পাওয়ার পরও নোটিশ প্রদান ছাড়া দৃশ্যত কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি উপজেলা প্রশাসন। আবার হাজার হাজার একর নদীর জমি দখলের পর নামজারী ও জমাভাগের পূর্ব অনুমতি দিচ্ছে জেলা প্রশাসন। একই সাথে নামজারী করে ভূমি উন্নয়ন কর নিচ্ছে সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তার কার্যালয়। নদীর হাজার হাজার একর জমি দখল হলেও নদীখেকোদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত একটি মামলাও দায়ের করতে পারে নি উপজেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিআইব্লিওটিএ। নদী খেকোদের উচ্ছেদে সোনারগাঁও উপজেলা প্রশাসনের ভূমিকাও রহস্যজনক। এমনকি কোন শিল্প প্রতিষ্ঠান কতটুকো নদী দখল করেছে এবং নদী দখলদারদের কোনো তালিকা ও তথ্য নেই উপজেলা প্রশাসনের কাছে।
জানা গেছে, বাংলাদেশ পরিবেশ আইন অনুযায়ী, যেকোনো আবাসন বা বড় উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য পরিবেশগত প্রভাব সমীক্ষা (ইআইএ) করে এর অনুমোদন নিতে হয়। প্রয়োজন হয় অবস্থানগত ছাড়পত্রের। এসবের পর পরিবেশ ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করতে হয়। এসব ছাড়পত্র পেলে তবেই মাটি ভরাটসহ অন্যান্য উন্নয়নমূলক কাজ করতে হয়। কিন্তু মেঘনা নদীখেকো শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো এই প্রক্রিয়া ও পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়াই বালু ভরাট করে নদী ও কৃষকদের জমি জোরপূর্বক দখল করেছে। তবে এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের নারায়ণগঞ্জ জেলা কার্যালয় নিজেদের দায় নিতে নারাজ। তারা উল্টো দায় চাপাচ্ছে জেলা প্রশাসনের উপর।
জানা গেছে, হাইকোর্ট বিভাগের রীট মামলা নং ৩৫০৩/২০০৯, ১১৪৫৪/১৮ এবং ১১৬১৯/১৮ এর আদেশ এবং হাইকোর্টের সর্বশেষ নির্দেশনা অনুযায়ী নদী তীরবর্তী ফোরশোর ল্যান্ডভূক্ত ৫০ মিটার ভূমিতে বালি ও মাটি ভরাটসহ যে কোন স্থাপনা নির্মাণ করা সম্পূর্ন অবৈধ। এমনকি, নদীখেকো কয়েকটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের কাজ বন্ধে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্তে¡ও উপজেলা প্রশাসনের সহযোগীতায় তারা বীরদর্পে নদী দখল ও ভরাট করে বড় বড় স্থাপনা নির্মাণ করছে।
এদিকে, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ও সচিব ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার আকস্মিকভাবে সোনারগাঁয়ে মেঘনা নদীর তীরবর্তী এলাকা পরিদর্শন করে মেঘনা নদী দখলের ভয়াবহতা দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেন। পরে তিনি সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে স্থানীয় নদী রক্ষা কমিটির সঙ্গে মতবিনিময়কালে বলেন, বর্তমানে মেঘনা নদীর অবস্থা অত্যন্ত ভয়াবহ। যেভাবে কোম্পানিগুলো নদী দখল করে আছে, তাতে মনে হচ্ছে তারাই নদীর মালিক। এসব দখলদার যতই ক্ষমতাশীল হোক না কেন, আগামী দু’দিনের মধ্যে তাদের স্থাপনা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে। প্রয়োজনে নদী রক্ষা কমিশন থেকে অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট ও আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী সঙ্গে এনে অভিযান পরিচালনা করা হবে।
নদী দখলের ভয়াবহতা দেখে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে সোনারগাঁও উপজেলা প্রশাসনকে ভর্ৎসনা করে বলেন, আপনারা প্রশাসনের কর্তাব্যক্তি হয়ে কী করেন? আপনাদের সামনে নদী দখল হয়ে যাচ্ছে। দখলদারদের বিরুদ্ধে অতি দ্রুত ব্যবস্থা নেন। তাদের বিরুদ্ধে একটা মামলাও করলেন না। শুধু নোটিশ দিয়ে দায়িত্ব শেষ করেছেন। শুধু নোটিশ দেওয়া তো আপনাদের কাজ নয়। অভিযানে নেমে যান। আমি আপনাদের সঙ্গে আছি। প্রয়োজন হলে এসব দখলদারের তালিকা আমি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠাব। কারও হুমকি-ধমকিতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। কিন্তু তাতেও দৃশ্যত কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি নদীখেকোদের বিরুদ্ধে।
স্থানীয়রা জানায়, নদীখেকোরা ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় প্রভাবশালী নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের সহযোগীতায় নদী দখল করে চলেছে। এ নিয়ে কোন কথা বললে, হুমকি ও মামলা দেয় নদীখেকোরা। নদী খেকোদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিতে জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা প্রশাসনের কাছে ঘুরেও কোন প্রতিকার পায়নি ভূক্তভোগী জনগণ। নদী, সরকারি খাল ও কৃষি জমি উদ্ধারে স্থানীয় এলাকাবাসি ও পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো একাধিকবার মানববন্ধন, বিক্ষোভ সমাবেশ, রাস্তা অবরোধ ও স্মারকলিপি প্রদান করেও কোন ফল পায়নি।
সরেজমিনে মেঘনা নদীতে গিয়ে দেখা যায়, মেঘনা নদীর কোনো কোনো অংশে পাঁচশ ফুট আবার কোনো অংশে সাতশ ফুট নদী দখল করেছে মেঘনা গ্রুপ। মেঘনা নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন স্থানে নদী, ঘরবাড়ি আর খাস জমি সবই সমান তালে দখল করে নিচ্ছে মেঘনা গ্রুপ। উপজেলার আষাড়িয়ার চর এলাকায় মেনী খালি নদীর অধিকাংশ বালু ভরাট করে ফেলেছে মেঘনা গ্রুপ। উপজেলার ঝাউচর এলাকায় বিশাল পরিমান নদী দখল করেছে মেঘনা গ্রুপ। উপজেলার আনন্দবাজার এলাকায় নদীর প্রায় ৫০ একর জমি দখল করে নিয়েছে মেঘনা গ্রুপ। নদীগর্ভের প্রায় ৭০০ ফুট দখলে নিয়ে বর্তমানে বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণ করেছে মেঘনা গ্রুপ। উপজেলার হাড়িয়া এলাকার আমান সিমেন্ট লিমিটেড মেঘনা নদীতে অবৈধ স্থাপনা ও জেডি নির্মাণ করে দখল করেছে। নদী গর্ভের প্রায় সাতশ’ ফুট ভিতরে বাঁশের বেড়া দিয়ে বালু ভরাট করে সিটি পাইলিং করে স্থায়ী ভাবে নদী দখল করছে। মেঘনা নদীর শাখা ঐতিহাসিক সরকারী রান্দীর খালের প্রায় ২ কিলোমিটার বালু দিয়ে ভরাটসহ নদীর প্রায় ১ হাজার ৫ শত বিঘা জমি ভরাট করে চারদিকে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হচ্ছে। উপজেলার বৈদ্যেরবাজার ঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, আল মোস্তফা গ্রুপের মালিকানাধীন ইউরো মেরিন শিপবিল্ডার্স ও হেরিটেজ পলিমার এন্ড ভেজিটেবলস লিমিটেড মেঘনা নদী, নদীর তীরবর্তী খাস ভূমি, সরকারি দুইটি খাল এবং ফোরশোর ল্যান্ডভূক্ত ভূমিতে বালু ভরাট করে প্রাচীর নির্মাণ করছে। বৈদ্যেরবাজার এলাকায় নদীর পশ্চিম দিকে ২০০০ বাই ৭০০ বর্গফুট পরিমাণ মেঘনা নদীর তীরভূমি ভরাট করে বিশালাকার এই নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে। বালু ভরাটের কারণে মেনীখালী নদীর মুখ ইতিমধ্যে শুকিয়ে গেছে। ইউরো মেরিন শিপবিল্ডার্স এবং হেরিটেজ পলিমার এন্ড ভেজিটেবলস লিমিটেডের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের স্থিতিবস্থা বজায় থাকা সত্তে¡ও তারা উপজেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিআইডব্লিওটিএ-এর সহযোগীতায় প্রকাশ্যে বালু ভরাটসহ শিল্প প্রতিষ্ঠান নির্মাণের কাজ করে যাচ্ছে।
নদী দখলের পাশাপাশি ইউরো মেরিন শিপবিল্ডার্স ও হেরিটেজ পলিমার এন্ড ভেজিটেবলস লিমিটেড নামক প্রতিষ্ঠানটির মালিক আল মোস্তফা সড়ক ও জনপদ বিভাগের জমিও দখল করেছে। ইতিমধ্যে সড়ক ও জনপদ বিভাগ দখলকৃত রাস্তা ছেড়ে দেওয়ার জন্য নোটিশ দিলেও তা আমলে নেয়নি আল-মোস্তফা গ্রুপ। এছাড়া, বারদী এলাকায় বেঙ্গল সিমেন্ট এবং মেঘনা ঘাট এলাকায় মদিনা গ্রুপ ও হোলসিম সিমেন্ট নদী, নদী তীরবর্তী ভূমি এবং ফোরশোর ল্যান্ডভূক্ত জমি দখল করেছে। এদিকে, প্রতিনিয়ত দখলে-দূষণে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে মেঘনা। তীর ঘেঁষে গড়ে ওঠা অসংখ্য কলকারখানা থেকে নির্গত দূষিত পানি ও আবর্জনা অবাধে মিশছে মেঘনা নদীতে। দূষণ আর দখলে হারাতে বসেছে প্রমত্তা মেঘনার পূর্বের জৌলুস। অবৈধ দখলদারের দৌরাত্মে ক্রমেই সরু হয়ে আসছে নদীটির আকার। মাটি আর আবর্জনা ফেলে ভরাট হচ্ছে নদী। আর বিভিন্ন স্থানে বাঁধ ও পাড়ে বালু দিয়ে অবাধে ভরাট হচ্ছে মেঘনা। অতিরিক্ত দখলের কারণে বদলে যাচ্ছে নদীর স্বাভাবিক গতিপথ। মেঘনা নদীতে অবাধে মিশছে কলকারখানার বিষাক্ত বর্জ্য। ময়লা আবর্জনা বদলে দিয়েছে পানির রং আর গন্ধ। তৈরি হচ্ছে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি। আর বিভিন্ন শাখা নদী ও খাল দখল করায় মারাত্মক পানিবদ্ধতায় পড়েছে স্থানীয় এলাকাবাসী।
বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি কবি জামান ভূঁইয়া বলেন, মেঘনা যেন বুড়িগঙ্গা বা শীতলক্ষা না হয়। পরিবেশ অধিদপ্তর, বিআইডব্লিওটিএ ও স্থানীয় প্রশাসনকে নদী রক্ষায় দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। সবাইকে বুঝতে হবে, নদী বাঁচলে, দেশ বাঁচবে। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে নদী উদ্ধারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। তা না হলে মেঘনা নদী বুড়িগঙ্গা হতে খুব বেশি সময় লাগবে না।
নদী দখলের বিষয়ে কোন জবাব দিতে পারেননি পরিবেশ অধিদপ্তর নারায়নগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. নয়ন মিয়া। তিনি বলেন, নদীর মালিক জেলা প্রশাসক ও বিআইডব্লিওটিএ। কোন সমস্যা থাকলে তাদের সাথে যোগাযোগ করুন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সোনারগাঁয়ের কোন শিল্প প্রতিষ্ঠানেরই পরিবেশ ছাড়পত্র নাই। নদীখেকোদের পরিবেশ দূষণ সম্পর্কে জানতে চাইলে সরাসরি দেখা করার কথা বলেন এই কর্মকর্তা।
নদী রক্ষায় গৎবাঁধা বুলি বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এর নারায়ণগঞ্জ জেলার যুগ্ম পরিচালক গোলজার হোসেনের। তিনি বলেন, আপনারা বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের সাথে আলোচনা করেন। আমরা নদীখেকোদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ইতিমধ্যে থানায় চিঠি দিয়েছি। আগামী এক মাসের মধ্যে নদী দখলদারদের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে নদী দখল মুক্ত করা হবে।
সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অঞ্জন কুমার সরকার বলেন, বিষয়টি নিয়ে আপনারা বিআইডব্লিওটিএ এর সাথে আলোচনা করেন। ইতিমধ্যে নদীর সীমানা চিহ্নিত করে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছি। খবর পেয়েছি, তারা নদী দখল অব্যাহত রেখেছে। খুব শিগগিরি আমি নদী দখলদারদের আমার কার্যালয়ে ডাকাবো এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন