ফ্রান্সের দক্ষিণ উপকূলীয় শহরে বসে কান চলচ্চিত্র উৎসবের জমজমাট আয়োজন। এরইমধ্যে কান এর ৭২তম আসর জমে উঠেছে। কারণ গত ১৪ মে শুরু হওয়া উৎসবটিতে ইতোমধ্যেই ছুটে গিয়েছেন বিশ্বের খ্যাতনামা ব্যক্তিরা। আর তাইতো ফ্রান্সের এ উৎসবটির দিকে তাকিয়ে আছে বিশ্ব চলচ্চিত্রপ্রেমীরা। কথা ছিল এবার কানে হাজির হবেন আর্জেন্টাইন ফুটবলের জীবন্ত কিংবদন্তি ডিয়েগো ম্যারাডোনা। কারণ এই তারকা খেলোয়ারের ওপর নির্মিত হয়েছে একটি প্রামাণ্যচিত্র। প্রামাণ্যচিত্রটি কান উৎসবে অংশগ্রহণ করেছে। সেকারণেই মূলত কানে যাওয়ার কথা ছিল এই জীবন্ত কিংবদন্তির। তবে দু:খের বিষয় হলো তিনি ফ্রান্সে যেতে পারেননি। জানা গিয়েছে কাঁধের ইনজুরির কারণে দক্ষিণ ফরাসি উপকূলে আসতে পারেননি ম্যারাডোনা। তিনি এখন চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে আছেন।
দারিদ্র্যের বেড়াজাল ভেঙে সাফল্যের শিখরে কিভাবে পৌঁছান ডিয়েগো ম্যারাডোনা? তার ওপর নির্মিত নতুন এ প্রামাণ্যচিত্রটি প্রশংসিত হয়েছে কানসৈকতে। প্রামাণ্যচিত্রটির নাম ‘ডিয়েগো ম্যারাডোনা’। গত বরিবার ১৯ মে কান চলচ্চিত্র উৎসবের আউট অব কম্পিটিশন বিভাগে এই ছবি প্রিমিয়ার অনুষ্ঠিত হয়েছে। যদিও আশা করা হচ্ছিল, লালগালিচায় তাকে ঘিরে উন্মাদনা ছড়াবে। তবে কানে আসতে না পেরে ৫৮ বছর বয়সী এই কিংবদন্তি অনুতপ্ত বলে জানিয়েছেন প্রামাণ্যচিত্রটির নির্মাতা ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক আসিফ কাপাডিয়া।
ডিয়েগো ম্যারাডোনা ২ ঘণ্টা ১০ মিনিট ব্যাপ্তির প্রামাণ্যচিত্রটিতে ইতালিয়ান দল নেপোলি ও আর্জেন্টিনার অধিনায়ক হিসেবে বিশ্বকাপ জয়ের গৌরবময় ক্যারিয়ারের পাশাপাশি ম্যারাডোনার বেহিসেবি জীবন ও মাদকাসক্ত অধ্যায় তুলে ধরা হয়েছে। তার ব্যক্তিগত সংগ্রহশালায় থাকা ৫০০ ঘণ্টারও বেশি অদেখা ফুটেজ থেকে বাছাই করে এটি সাজানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
১৯৮৪ সালে ৫ জুলাই ইতালির নেপোলিতে বিশ্বরেকর্ড দামে যোগ দেন ম্যারাডোনা। বাকিটা ইতিহাস। ইউরোপের দলটিকে প্রথমবার শিরোপা এনে দেন ফুটবলের এই জাদুকর। কিন্তু নেপলসে থাকাকালেই মাদকের অন্ধকার দিক গ্রাস করেছিল তার জীবন। বেশি বিখ্যাত হয়ে গেলে কেমন খেসরাত দিতে হয়, এই প্রামাণ্যচিত্রে সেই বক্তব্য রয়েছে বলে উল্লেখ করেন নির্মাতা।
আশির দশকের শুরুতে আর্জেন্টাইন দুই চিত্রগ্রাহককে ভাড়া করেছিলেন ম্যারাডোনার প্রথম এজেন্ট। তার ইচ্ছে ছিল, বড় পর্দার জন্য একটি পূর্ণদৈর্ঘ্য কাহিনীচিত্র বানানো। ম্যারাডোনা যখন কৈশোরে আর্জেন্টিনায় বোকা জুনিয়রসের হয়ে খেলা শুরু করেন, তখন থেকে এই দুই চিত্রগ্রাহকের ফুটেজ সংগ্রহের কাজ চলতে থাকে। কিন্তু ছবিটি আর শেষ হয়নি। প্রামাণ্যচিত্রে সেইসব ফুটেজ রয়েছে।
প্রমাণ্যচিত্রটি নির্মাণ প্রক্রিয়ায় সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলেন ম্যারাডোনা। দুবাইয়ের বাড়িতে দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে তার সাক্ষাৎকার নেন নির্মাতা আসিফ কাপাডিয়া। তিনি এর আগে দক্ষিণ আমেরিকার আরেক কিংবদন্তি ব্রাজিলিয়ান রেসিং ড্রাইভার আইর্তো চেনার ওপর একটি প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেন। এছাড়া ২০১৫ সালে কানের আউট অব কম্পিটিশনে প্রদর্শিত হয়েছিল ব্রিটিশ গায়িকা এমি ওয়াইনহাউসের ওপর তার নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন