নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশনে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই টিকিট কাউন্টারের সামনে দুই সারিতে নারী-পুরুষের দীর্ঘ লাইন। টিকিট সংগ্রহ করতে আসা বিভিন্ন বয়সী মানুষের ভিড় সামলাতে হিমসিম খাচ্ছে সৈয়দপুর রেলওয়ে থানা পুলিশে বেশ কয়েকজন সদস্য।
ঘড়ির কাটায় ঠিক নয়টা বেজে উঠার সঙ্গে সঙ্গে টিকিট কাউন্টার খুলে টিকিট দেয়ার দিতে প্রস্তুতি নেন সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশনের প্রধান বুকিং সহকারি মো. মাহ্বুবুল হক মাহবুব। কিন্তু শুরুতেই ঘটে বিপত্তি ইন্টারনেট সমস্যার কারণে কাজ করছিল না কম্পিউটার। ফলে টিকিটও দেয়াও সম্ভব হচ্ছিল না। এরপর প্রায় ২০/২৫ মিনিট পরে টিকিট দেওয়া শুরু হয়। কিন্তু এর ঠিক ঘন্টাখানেক পরেই স্টেশনের টিকিট কাউন্টার থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা টিকেট প্রত্যাশীদের বলা হয় চিলাহাটি থেকে ঢাকাগামী আন্তঃনগর নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনের বরাদ্দকৃত সব টিকিটই শেষ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দেয়া হয় ৮ জুনের যাত্রার আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট। এর আগে গত বুধবার দুপুরের পর থেকে সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশনে টিকিট কাউন্টারের সামনে টিকিট নিতে আগ্রহী মানুষ অবস্থান নেন। বুধবার সারারাত কাটিয়ে পরদিন গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টা পর্যন্ত দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও মিলেনি একটি টিকিটও। আশায় থেকে অবশেষে টিকিট সংগ্রহ করতে না পেরে অনেকেই ফিরে যান ব্যর্থ মনোরথে। এ সময় তাদের চোখে মুখে ছিল চরম ক্ষোভ হতাশা।
তেমনই একজন শহরের ক্যান্টনমেন্ট এলাকার মোছা. লাইলী বেগম বলেন, টিকিট সংগ্রহ করতে আসা মানুষের মধ্যে তার অবস্থান ছিল মধ্যভাগে। কিন্তু কয়েকজনকে টিকিট দেওয়ার পর বলা হয় বরাদ্দকৃত আন্তঃনগর নীলসাগর ট্রেনের টিকিট শেষ। একই অভিযোগ টিকিট নিতে আসা সৈয়দপুর শহরের আল-ফারুক একাডেমির সিনিয়র শিক্ষক মো. আমিনুল ইমলাম।
রেলওয়ে স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, সৈয়দপুর রেলওয়ের জন্য আন্তঃনগর নীলসাগর ট্রেনের শোভন চেয়ার ১৭৬টি, এসি সিগ্ধা ৮ টি এবং এসি বার্থ ৮টি সিটের বরাদ্দ রয়েছে। এ সবের মধ্যে আবার অর্ধেক টিকিট অলনাইনে রেলওয়ে সেবা অ্যাপে এবং বাকিটা রেলওয়ে স্টেশনের কাউন্টার থেকে বিক্রির নিয়ম রয়েছে। একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ ৪টি টিকিট এক সাথে কিনতে পারবেন।
বুকিং সহকারি মাহবুবুল ইসলাম মাহবুব জানান, কাউন্টারে অনলাইনে কম্পিউটার থেকে একটি টিকিট বের করতে সময় লাগে সর্বোচ্চ ৩০ সেকেন্ড। সেই হিসেবে এক ঘন্টার কিছু বেশি সময়ই বরাদ্দকৃত সব টিকিটই দেয়া সম্ভব। তবে স্টেশনে সরেজমিনে গিয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ভিন্ন কথা সৈয়দপুর স্টেশনে ভিন্ন কায়দায় টিকিট কালোবাজারির ঘটনা ঘটছে। অনেকে অভিযোগ করে বলেন, এখানে টিকিট কালোবাজারিচক্র বেশ শক্তিশালী। এ নিয়ে সৈয়দপুর রেলওয়ের স্টেশন মাস্টার মো. শওকত আলীর সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, প্রতি ঈদের এ স্টেশনে টিকিটের অনেক চাহিদা থাকে। বিশেষ করে আন্তঃনগর নীলসাগর ট্রেনের টিকিটের চাহিদা সবচেয়ে বেশি হয়। কিন্তু এ স্টেশনে নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনের আসন বরাদ্দ যাত্রী সাধারণের তুলনায় অনেক কম। ফলে যাত্রীদের চাহিদামতো টিকিট সরবরাহ দেওয়া সম্ভব হয় না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন