প্রশ্ন : বিয়ের সুন্নত তরিকা নিয়ে বিস্তারিত জানতে চাই।
উত্তর : বিয়েতে প্রস্তাব দেয়া ও কবুল করা। দেনমোহর নির্ধারিত করা এবং কমপক্ষে দু’জন সাক্ষীর সামনে এ বন্ধনটি হওয়া। সম্ভব হলে ছেলে বিয়ের পর নিজ লোকজনকে একবেলা খানা খাওয়ানো। এ পর্যন্তই বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। এর বাইরে আর কিছুই শরিয়তের বিধান নয়। কোনো গুনাহের কাজ তো সমর্থন করার প্রশ্নই উঠে না। প্রয়োজনের বাইরে জরুরি কাজেও অপচয় করা, মেয়ের বাবার ওপর কোনো আর্থিক চাপ, সামাজিকতার চাপ ইসলামী বিয়েকে কলুষিত করে। দেশীয় অপসংস্কৃতি কিংবা বিধর্মীদের কালচার বিয়েকে অভিশপ্ত করে। সুন্নত তরিকার বিয়ে খুবই সহজ। কোনো ভালো আলেমের কাছ থেকে জেনে নিন। একখানা হাদিস মনে রাখবেন, নবী করিম (সা.) বলেছেন, সবচেয়ে বেশি বরকত সেই বিয়ে হয়, যাতে খরচের চাপ সবচেয়ে কম থাকে।
প্রশ্ন : আমাকে এক লোক প্রশ্ন করেছে। বিয়ের আগে প্রেম করে মিলিত হয়ে তারা সন্তান জন্ম দিয়েছে। এমতাবস্থায় মেয়ে সন্তানটি সমাজে মুখ দেখাতে পারে না। এখন ওরা দুই জন কী করতে পারে?
উত্তর : সমাজে মুখ দেখাতে না পারা উচিত ছিল, ওদের দু’জনের। প্রশ্নে মনে হয়, মুখ দেখাতে পারছে না অবৈধ সন্তানটি। শরিয়তে এ ধরনের সন্তানের কোনো পাপ বা দোষ থাকে না। তাদের দায় ওই বাবাকে নিতে হবে, যে তাকে অবৈধ উপায়ে জন্ম দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে শরিয়ত যদি ব্যাভিচারীদের সাজা দেয় আর তারা মৃত্যুদণ্ড পায়, তা হলে মেয়েটির দায়িত্ব সরকারের। যদি ব্যাভিচারীরা বিবাহিত হয়, তাহলেই সাজা মৃত্যুদণ্ড। অবিবাহিত হলে বেত্রাঘাত। একই অপরাধ পুনরায় সংঘটিত হওয়ার আশঙ্কা থাকলে বিচারক তাদের দু’জনকেই দূরে দূরে থাকার নির্দেশ দেবেন এবং যাকে সম্ভব এলাকা ছাড়া করে দেবেন। যে সমাজে শরিয়তি আইন চালু নেই, সেখানে এ দুই নারী-পুরুষকে সামাজিকভাবে বিয়ে বন্ধনে বাধ্য করা হবে, যাতে বিয়ে পূর্ব সন্তানটি মা-বাবার আশ্রয়ে জীবন কাটাতে পারে। সমাজে তাকে লজ্জা দেয়ার বা অবৈধ বলার ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। কারণ, আমরা আগেই বলেছি, বাবা-মায়ের দায় সন্তানের ওপর আসে না। এসব ঘোর প্যাঁচওয়ালা প্রশ্নের জবাব লিখে শেষ করা যাবে না। বললে, বুঝিয়ে বলা যায়। সম্পূরক অনেক প্রশ্ন থাকে। সেসব না জানলে জবাবটি পূর্ণ হয় না। আশা করি আলোচনার ভেতর থেকে যাদের প্রশ্ন তারা তাদের সমাধানটি খুঁজে নেবেন।
-আল্লামা মুফতী উবায়দুর রহমান খান নদভী
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন