ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুর পথযাত্রী চুনারুঘাট উপজেলার বড়াব্দা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ ইদ্রিস মিয়ার পুত্র সৈয়দ আরমান হোসেন (১৮)।
আরমান হোসেনের পরিবার সুত্রে জানা যায়, গত ২১ জুন বাড়ির কাজ করার সময় নিজ হাতে দা-এর আঘাতে আরমানের পায়ের গোড়ালি সামান্য কেটে যায়। ওই দিনই বিকাল সাড়ে তিনটায় আরমানকে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে যান তার স্বজনরা।
হাসপাতালের কর্তব্যরত ডা. মেহেদী হাসান আরমানকে দেখে ওষুধ লিখে দিয়ে হাসাপাতালের ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী মহিবুর রহমানকে দিয়ে আরমানের কাটা জায়গায় সেলাই ও হাটু পর্যন্ত প্লাস্টার করান। মহিবুর আরমানকে তিন দিন পর দেখা করতে বলেন।
তার পায়ের আঘাতের মূল সমস্যার বিষয়ে স্বজনরা জানতে চাইলেও তারা কিছুই বলেন নি। বাড়িতে আসার পর আরমানের গায়ে প্রচন্ড জ্বর ও পায়ে তীব্র ব্যথা হয়। যার দুদিনের মাথায়ই স্বজনরা পূণরায় আরমানকে সদর হাসপাতালে নিয়ে যান।
সেখানে গিয়ে ডাক্তারদের কোনো সাড়া না পেয়ে তারা পাশবর্তী প্রাইভেট ক্লিনিক বদরুন্নেসায় নিয়ে যান। বদরুন্নেসার ডা. রেজাউল করিম রোগীর চিৎকারে প্লাস্টার খুলে সেলাইয়ের ওপর চাপ দিলে পুঁজ বেরুতে দেখলে তিনি আরমানকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। স্বজনরা আরমানকে অক্সিজেন যুক্ত এ্যাম্বুল্যান্স যোগে সিলেটের নর্থ ইস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। নর্থ ইস্ট হাসপাতালের ডাক্তার মির্জা উসমান বিন জানান, ভুল চিকিৎসায় আরমানের পায়ের হাঁটু পর্যন্ত পচন ধরেছে।
মুক্তিযোদ্ধা ইদ্রিস জানান, কয়েক বার তার পায়ে অপারেশন করার পরও তা রোধ হচ্ছে না। আরমানের জ্বর কমছে না কিছুতেই। বমিবমি ভাবের সাথে হাঁচির সঙ্গে নাক দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। দরিদ্র পিতা হিসাবে আরমানের ব্যয়বহুল চিকিৎসা চালিয়ে যেতে তাকে প্রতিনিয়ত ধারদেনা করতে হচ্ছে। তিনি তার ছেলেকে ভুল চিকিৎসা দিয়ে মৃত্যুমুখে ঠেলে দেয়া চিকিৎসকের তদন্ত সাপেক্ষ বিচার চেয়ে গত ৩০ জুন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে ডা. মেহেদী হাসান ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী মহিবুরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে সিভিল সার্জনসহ বিভিন্ন দপ্তরে অনুলিপি প্রেরন করেন।
এ ব্যাপারে সদর হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী মহিবুরের সাথে ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি তাদের সাথে তিনদিন পর যোগাযোগ করা হয়নি বলে এমনটা ঘটেছে বলে জানান। ডা. মেহেদী হাসান ফোন রিসিভ করে এ বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানাতে বলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন