দেশে হৈ হৈ রৈ রৈ এক কান্ড বেঁধেছে। সংবাদপত্র খুললেই চোখ জুড়িয়ে যাচ্ছে আশ্চার্য এক খবরে! সিনেমার মন্দা অবস্থার জন্য দীর্ঘদিন ধরে যেখানে প্রেক্ষাগৃহ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সেখানে সূর্য যেন ভিন্ন দিক দিয়ে উঠতে শুরু করেছে! একের পর এক যেখানে সিনেমা হলের গেটে তালা ঝুলছে। সেখানে অত্যাধনিক মানের প্রেক্ষাগৃহ নির্মাণেও এগিয়ে আসছেন অনেকে! ইতোমধ্যেই খুলনা এবং নারায়নগঞ্জে দুইটি সিনেপ্লেক্স নির্মাণের ঘোষণা এসেছে। এছাড়া রাজধানীর মহাখালীতেও একটি সিনেপ্লেক্স নির্মাণের কাজও সম্পন্ন হয়েছে। খুব শীঘ্রই এই সিনেপ্লেক্সে বসে দর্শক সিনেমা উপভোগ করতে পারবেন। এটা নিশ্চই সিনে ইন্ডাস্ট্রির জন্য একটি স্বস্থির নি:শ্বাসও বলা যেতে পারে।
শুধু তাই নয়, রাজধানীর মিরপুরে অবস্থিত সনি সিনেমা হলও করা হচ্ছে সিনেপ্লেক্স মানের। অন্যদিকে শ্যামলী সিনেমা হলেও জায়গা রাখা হয়েছে আরেকটি ব্লকবাস্টার মানের প্রেক্ষাগৃহ নির্মাণের জন্য। এছাড়া সরকারের তরফ থেকেও প্রতিটি উপজেলাতে একটি করে তথ্য কেন্দ্র নির্মাণের ঘোষণাতো আছেই। যে তথ্য কেন্দ্রতে একটি করে সিনেপ্লেক্সও রাখা হবে। অচিরেই সরকার এই প্রকল্পের কাজ শুরু করবেন বলে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়।
প্রবাদ বাক্য আছে ‘রাত যতো গভীর হয়, প্রভাত ততই সংনিকটে’ এটাই যেন অক্ষরে অক্ষরেই ঘটতে যাচ্ছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে। ইনকিলাবকে সম্প্রতি এমনই একটি সুখবর জানিয়েছেন প্রদর্শক সমিতির সভাপতি ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ। অবশ্য নওশাদের এই সুখবরটি ঢালিউড ইন্ডাস্ট্রি সংশ্লিষ্ঠ নেতাদের গলার কাঁটাও হতে পারে।
অর্ধশত বছরের পুরোনো সিনেমা হল মধুমিতার এই মালিক বলেন, ‘খুব শিগগিরই আমার হল মধুমিতার আধুনিকায়নের কাজ শুরু করবো। ইচ্ছা আছে মধুমিতার পাশেই আরেকটি সিনেপ্লেক্স মানের হল নির্মাণের। তবে সেটা সময় লাগবে। তবে শীঘ্রই মধুমিতার সংস্কার কাজ যে শুরু করছি এটা নিশ্চিত। শুধু মধুমিতাই নয়, আমার জানা মতে দেশের আরও বেশ কয়টি হল মালিক ইতোমধ্যেই তাদের হলগুলোও সংস্কারের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।’
কিন্তু সিনেমার এই মন্দা অবস্থায় কেনো এতো তোড়জোড়? বাংলাদেশের কোনো সিনেমা ব্যবসা করতে পারে না। হাতে গোনা দু’একটি বাদে। আর নতুন সিনেমার খরাতো আছেই। এ অবস্থায় কেনো এতো দ্রুত হল সংস্কার করা হচ্ছে। আর কেনোই বা নতুন করে সিনেপ্লেক্স নির্মাণের স্বপ্ন দেখছেন। জানতে চাইলে ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ বললেন, ‘সেই দিন আর দুরে নয়, যে দিনে বাংলাদেশের দর্শক ভারতের দর্শকদের সঙ্গে একই সময় সালমান, আমির এবং শাহরুখ খানদের সিনেমা উপভোগ করতে পারবেন। ইতোমধ্যেই হিন্দি সিনেমা আমদানির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বলতে পারেন প্রক্রিয়াটি বাস্তবায়ন এখন সময়ের ব্যপার। আমার (হল মালিক) সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছিলাম সিনেমার বাজার মুক্ত করে দিতে। তা না হলে অচিরেই ধ্বংশ হবে এই ইন্ডাস্ট্রি। সরকার আমাদের ডাকে সাড়া দিয়েছেন। বছরে কমপক্ষে ৮ থেকে ১২ টা হিন্দি সিনেমা আমদানির জন্য সরকার অনুমতি দিতে যাচ্ছেন। আর সে কারণেই আগে ভাগেই হলগুলো প্রস্তুত করছি। কারণ আমি বিশ্বাস করি আন্তর্জাতিক মানের সিনেমা আমাদের দেশে এলে অবশ্যই দর্শক সেগুলোকে গ্রহণ করবেন। সেই সঙ্গে আমাদের সিনেমার মানও ভালো হবে। প্রতিযোগিতা করে আমাদের পরিচালকরাও ভালো ভালো সিনেমা বানাবেন।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন