লক্ষ্মীপুরে প্রাচীন ঐতিহ্যের একটি অনন্য নিদর্শন দালাল বাজার জমিদার বাড়ি । ৭ দশমিক ৮৬ একর জায়গার উপর থাকা এ বাড়িটি নয়নাভিরাম বৈচিত্র্য সৌন্দর্যয়-পিপাসু মনকে আমোদিত করত। কিন্তু একটি স্বার্থান্বেষী কুচক্রী মহলের কারণে দীর্ঘদিন যাবত বাড়িটি বেদখল অবস্থায় পড়ে ছিল। অযত্নে অবহেলায় আর বন জঙ্গলে ভরা ছিল বাড়িটি। অসামাজিক কার্যক্রমও চলত কখনো কখনো।
জানা গেছে, ১৯৬৬-৬৭ সালে জমিদার বাড়িটি অর্পিত সম্পত্তি হওয়ার পর একসনা বন্দোবস্ত দেয় তৎকালীন নোয়াখালী জেলা প্রশাসক। বিগত ৪৭ বছর যাবত লীজমানি না দিয়ে অবৈধ দখলে থাকার চেষ্টা করে কিছু অসাধু ব্যক্তি। এরপর ২০১৫ সালে ওই লিজ বাতিলের পাশাপাশি ২১ জুন ২০১৫ সনে অবৈধ দখল উচ্ছেদ করে বাড়িটি সংস্কারের উদ্যোগে নেয় লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক।
পরবর্তীতে জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবৈধ দখলদারি কুচক্রী মহল উচ্চ আদালতে রিট করে। দীর্ঘ শুনানির পর গত ২৯ আগস্ট তা খারিজ করে দেয় আদালত। অবশেষে উচ্চ আদালতে রায় পেয়ে লক্ষ্মীপুর দালাবাজারে দুশ বছরের সেই পুরনো জমিদার বাড়ি সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন। ২০১৮ সালের ৪ঠা জানুয়ারি ঐতিহাসিক নিদর্শন বিবেচনা করে প্রত্নতাত্বিক অধিদফতর স্থাপনাটিকে সংরক্ষণ-যোগ্য ভূমি হিসেবে তা গেজেট প্রকাশ করে।
জমিদার বাড়িটি সংস্কার করে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হলে জেলা ঐতিহ্য হিসেবে দৃষ্টান্তের পাশাপাশি কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হবে বলে মনে করেন স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও বিশেষজ্ঞরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক অঞ্জন চন্দ্র পাল বলেন, প্রাচীন এই নিদর্শনকে সাধারণ মানুষসহ ভ্রমণ পিপাসু ও পর্যটন প্রেমীদের আকর্ষণ করতে সংস্কার ও সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ করা হচ্ছে। বাড়ি সংস্কারের জন্য কিছু বরাদ্দও এসেছে। প্রতিদিন জমিদার বাড়ির এসব সৌন্দর্য বর্ধনের তদারকি করা হচ্ছে। বাড়িটির চার পাশ মেরামত করে তৈরি করা হবে সুন্দর বাগিচা।
তিনি বলেন, লক্ষ্ণীপুরের কোন সংরক্ষিত অতীত ঐতিহ্যের স্থান নেই। পাশের খোয়া সাগর দিঘি সৌন্দর্যের পাশাপাশি সবার অনুপ্রেরণা পেলে ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন জমিদার বাড়িটিও পর্যটন বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যায়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন