ঘরোয়া ফুটবলের মর্যাদাপূর্ণ আসর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) নতুন মৌসুমকে সামনে রেখে খেলোয়াড় দলবদল কার্যক্রম শুরু হয়েছে ১ অক্টোবর। তবে অন্যান্য বছরের ন্যায় এবারো দলবদল কার্যক্রমের শুরুটা উত্তাপহীনই দেখা গেছে! দলবদল কার্যক্রম শুরু হলেও এখন পর্যন্ত কোন ক্লাবই মতিঝিলস্থ বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) ভবনে আসেনি ফুটবলারদের নিবন্ধন করাতে। তাই গেল তিনদিনে মতিঝিল পাড়ার ফুটবলপ্রেমীরা ঘোড়ার গাড়ীর দেখা পাননি। কোন বাদ্য-যন্ত্রের শব্দও তাদের কানে পৌঁছায়নি। অথচ প্রতিবছরই ঘোড়ার গাড়ীতে বসে বাদ্য-যন্ত্রের তালে তালে দলবদলে আসেন বড় ক্লাবগুলোর ফুটবলাররা। অবশ্য ক্লাবগুলোর সুত্র জানায় ইতোমধ্যে তারা নিজেদের ঘর গুছিয়ে ফেলেছে।
বিপিএলের সর্বশেষ আসরে টিম বিজেএমসি ও নোফেল স্পোর্টিং ক্লাব অবনমনে গিয়ে ঠাঁই নিয়েছে চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে। তবে বিপিএলের দল সংখ্যা কমেনি। আগের ১৩টি ক্লাবই খেলছে লিগের দ্বাদশ আসরে। ২০১৮-১৯ মৌসুমে বিজেএমসি-নোফেল অবনমনে গেলেও চ্যাম্পিয়নশিপ লিগ থেকে উঠে এসেছে বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাথলেটিক ক্লাব ও উত্তর বারিধারা। সর্বশেষ আসরের পয়েন্ট টেবিলের উপরের সারির ১১ দলের সঙ্গে বিপিএলের ২০১৯-২০ মৌসুমে যোগ হচ্ছে পুলিশ ও উত্তর বারিধারা। ২০ নভেম্বর দলবদল কার্যক্রম শেষে ডিসেম্বরে ফেডারেশন কাপের মধ্য দিয়ে নতুন মৌসুমের পর্দা উঠার কথা। ১ জানুয়ারি শুরু হবে বিপিএলের খেলা। আর লিগের মাঝপথে হবে স্বাধীনতা কাপ টুর্নামেন্ট। এমনই সিদ্ধান্ত বাফুফে’র। আগের মতো আসন্ন লিগেও চারজন বিদেশি খেলতে পারবেন একটি ক্লাবে। তবে নিবন্ধন করা যাবে পাঁচজনের নাম। বিপিএলে খেলার যোগ্যতা অর্জনকারী পুলিশ দল এরইমধ্যে পাঁচ বিদেশীকে নিয়ে অনুশীলন শুরু করেছে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে সম্প্রতি মতিঝিল ক্লাব পাড়ায় জুয়ার বোর্ড ও ক্যাসিনো কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে ঐতিহ্যবাহী ঢাকা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ও আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ বিধ্বস্ত। গুলিস্তান এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্রেও অভিযান চালায় র্যাব। সেখান থেকে ক্যাসিনো সামগ্রীসহ ৪ লাখ ১৫ হাজার টাকা ও একটি কষ্টি পাথরের মুর্তি উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতার করা হয়েছে ৪০ জুয়ারিকে। ফলে দলবদলে এই তিন ক্লাবের ভবিষ্যত কী তা বলা যাচ্ছেনা। ক্যাসিনো কান্ডে নাম জড়িয়ে পড়ায় আরামবাগের সভাপতি একেএম মমিনুল হক সাঈদ এখনো সিঙ্গাপুর থেকে ফেরেননি। মোহামেডানের ডাইরেক্টর ইনচার্জ লোকমান হোসেন ভূঁইয়া রয়েছেন আইন শৃংখলা বাহিনীর হেফাজতে। আর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের এমন কেউ নেই যিনি দলের হাল ধরবেন। তবে মোহামেডানের সাবেক অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক ও স্থায়ী সদস্য মোস্তাকুর রহমান বলেন, ‘মোহামেডানের ঐতিহ্যকে ধুলিস্যাত হতে দেবো না আমরা। কিভাবে আসন্ন বিপিএলে দলবদল করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করতে প্রতিদিনই আমরা বসছি ক্লাবে। তাছাড়া স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অধিনায়ক জাকারিয়া পিন্টু ভাই রয়েছেন। উনিও চেষ্টা করছেন দল গোছাতে।’
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ আগেই ২২ ফুটবলারকে টোকেন মানির চেক দিয়েছিল। তাদের মধ্যে ৪-৫ ফুটবলারের চেক ফেরত এসেছে। এ প্রসঙ্গে ক্লাবের ফুটবল ম্যানেজার আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মহোদয় আ ক ম মোজাম্মেল হকের কাছে গিয়েছিলাম। উনি দল গঠনের বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন।’ তবে আরামবাগের হাল কে ধরবেন তা এখনো জানা যায়নি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন