শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

বেনাপোল বন্দরে যানজটে আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে বড় ধরনের ধ্বস নেমেছে : ৮০০ কোটি টাকার রাজস্ব ঘাটতি

বেনাপোল সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১২ অক্টোবর, ২০১৯, ৪:২৫ পিএম

বেনাপোল বন্দর এলাকায় ভয়াবহ যানজটের কারণে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য। বন্দর থেকে খালাশকৃত পণ্য সময় মত পরিবহন করতে না পারায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিজ সহ বিভিন্ন শিল্প-কারখানার উৎপাদন প্রক্রিয়া। যান জটের কারণে সড়কে আটকা পড়ে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন ভারত গমনাগমনকারী পাসপোর্ট যাত্রীরা । ফলে আমদানি রফতানি বাণিজ্যে বড় ধরনের ধ্বস নেমেছে।

দীর্ঘদিন ধরে এ সমস্যা বিরাজ করলেও সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষের খুব একটা নজরদারি নেই। বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছেন বন্দর এলাকায় যানজট নিরসনে তারা জমি অধিগ্রহণসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। এসব কর্মকাণ্ড শেষ হলে অনেকাংশে যানজট নিরসন সম্ভব বলে বন্দর কর্তৃপক্ষ জানান।

বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ৫/৬’শ পণ্য বোঝাই ট্রাক মালামাল ভারতে আমদানি রফতানি হয়ে থাকে। এসব ট্রাক আমদানি -রফতানির সময় বন্দর এলাকায় সৃষ্টি হয় ভয়াবহ যানজট। বন্দরের নিজস্ব কোন ট্রাক টার্মিনাল না থাকায় এধরনের পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।

বেনাপোল সড়কে দিন-রাত আমদানি পণ্যের যানজট লেগেই আছে। বন্দর থেকে আমদানিপণ্য খালাস নিয়ে পণ্যবাহী ট্রাক ও ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াতকারী যাত্রীবাহী সোহার্দ্য পরিবহনগুলো যানজটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকছে। ব্য¯ততার কারণে বাধ্য হয়ে ছোট খাট যানবাহনগুলো ঝুঁকি নিয়ে চলছে ফুটপাতের উপর দিয়েই যাত্রী সহ চলাচল করছে।ফলে পৌর সভার সধ্য নির্মিত ফুটপাত গুলো ভেংগে চুড়ে পথচারী চলাচলে বিঘ্নিত হচ্ছে । কয়েক বছর ধরে বেনাপোল বন্দরে যানজটের এই ভয়াবহ অবস্থা লেগেই আছে যদিও বন্দর কর্তৃপক্ষ ভারত থেকে আমদানি করা ট্রাক ও বাস চেসিজ গুলো রক্ষনা বেক্ষনের জন্য তাদের নিজস্ব জায়গায় রাখার ব্যবস্থা করেছেন।
বেনাপোল সিএন্ড এফ এজেন্টস এসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন জানান, যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় আমদানিকারকরা বেনাপোল বন্দর ুদিয়েই ৮০ শতাংশ শিল্প কলকারখানার কাচা মাল আমদানি করে থাকেন। দেশে স্থলপথে যে পণ্য আমদানি-রফতানি হয় তার৭০ শতাংশ পণ্য বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি হয়। মাত্র ৪ ঘণ্টায় সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে একটি পণ্য চালান ভারতের কলকাতা থেকে পেট্রাপোল স্থলবন্দর হয়ে বেনাপোল স্থলবন্দরে প্রবেশ করতে পারে।
তেমন একই সময়ে বেনাপোল বন্দর থেকে রফতানি করা বাংলাদেশি পণ্য নিয়ে ট্রাক পৌঁছায় কলকাতা শহরে। ভারতের সাথে এ কারণে বাণিজ্যে আগ্রহ বেশি বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের। প্রতিবছর এ বন্দর থেকে সরকার সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আয় করে থাকে। বেনাপোল বন্দরে যানজট সহ অবকাঠামোগত তেমন একটা উন্নয়ণ না হওয়ায় বাণিজ্য ব্যাহত হচ্ছে দু দেশের মধ্যে আমদানি রফতানি বানিজ্য।

বেনাপোল শ্যামলী পরিবহনের ম্যানেজার গিয়াস উদ্দিন জানান, বেনাপোল থেকে ঢাকা যেতে সময় লাগে ৬ ঘণ্টা। কিন্তু বেনাপোল বন্দরে যানজটে আটকে থাকতে হয় দুই ঘণ্টা। ফলে তারা যাত্রীদের সময়মতো গšতব্যে পৌঁছে দিতে পারেন না। বন্দরের নিজস্ব কোন টার্মিনাল না থাকায় খাল ট্রাক গুলো ফলে রাখা হয় যত্র ত্রত্র । ফলে যানজট লেগেই থাকে বছরের পর বছর।

বেনাপোল আমদানি রফতানি কারক সমিতির সহ সভাপতি নুরুজ্জামান লিটন জানান, বর্তমানে বন্দরের ধারণক্ষমতা ৩০ হাজার মেট্রিক টন থাকলেও পণ্য রাখা হয় ১ থেকে দেড় লাখ মে:টন। বন্দরে স্থান সংকটের কারণে বারত থেকে আসা আমদানি পণ্য বোঝাই ্রটাক গুলো পণ্য আনলোডের জন্য দিনের পর দিন দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে বন্দর এলাকায়। আমদানিকারকরা ট্রাক ড্যামারেজের কারনে মোটা অংকের আর্থিক লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছেন। ব্যবসায়ীদের ক্ষতির পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব আয়েও বড় ধরনের প্রভাব পড়ছে। চলতি অর্থবছর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৮০ কোটি টাকার রাজস্ব ঘাটতি রয়েছে। বন্দরের প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়ন হলে বর্তমানে যে রাজস্ব আদায় হচ্ছে তার চেয়ে দ্বিগুণ রাজস্ব আয় সম্ভ বলে তিনি জানান।

বেনাপোল বন্দর’র উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) আ: জলিল জানান, যানজট নিরসনের জন্য ইতিমধ্যে ২৫ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। যানজট নিয়ে স্থানীয় বন্রদ ব্যবহারকারী ব্যবসায়ী ও প্রশাসনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক হয়েছে। বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়ন কাজ শেষ হলে যানজট নিরসন সম্ভব হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন