শরণখোলায় ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে কাঁচা ঘরবাড়ি, অসংখ্য গাছপালা, রবিশষ্য আর আমন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। রবিবার সকাল সাতটার দিকে ঘূর্ণিঝড়টি অতিক্রম করার সময় প্রবল বৃষ্টি আর ঝড়ো হাওয়ায় এ ক্ষয়ক্ষতি হয়। বিদ্যুতের খূঁটি উপড়ে পড়ে শুক্রবার রাত ১০ টা থেকে বিদ্যুৎ গোটা উপজেলা বিদ্যুৎ বিহীন অবস্থায় রয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (রাত ১০টা) বিদ্যুৎ পুনঃ সংযোগ হয়নি। এছাড়া, মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ রয়েছে।উপজেলার ভাঙনকবলিত সাউথখালী ইউয়িনের বগী থেকে দক্ষিণ সাউথখালী আশার আলো মসজিদ পর্যন্ত পাউবোর প্রায় দুই কিলোমিটার রিংবাঁধ বলেশ্বরের প্রবল ঢেউয়ের আঘাতে ধ্বসে গেছে। ইউএনও সরদার মোস্তফা শাহিন বেরিবাঁধ এলাকা পরিদর্শন করেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বুলবুলের প্রভাবে বলেশ্বর নদের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে চার থেকে পাঁচ ফুট উচ্চতায় প্রবাহিত হওয়ায় ব্যাপক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ৩৫/১ পোল্ডারের বেড়িবাঁধ উপচে জোয়ারের পানি ফসলের মাঠ ও বসতবাড়িতে ঢুকে পড়ে। জলোচ্ছাসে কয়েক শত পুকুর ও ঘেরের মাছ ভেসে গেছে। এদিকে, ঝড়ের প্রভাব কেটে যাওয়ায় দুপুরের পর থেকে লোকজন আশ্রয় কেন্দ্র থেকে ঘরে ফিরতে শুরু করেছে। তবে কিছু এলাকায় শিশু, বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধিরা এখনো আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করছে। দুপুরে আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে খিচুড়ি সরবরাহ করা হয়েছে।
খোন্তাকাটা ইউনিয়নের রাজৈর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর জব্বার জানান, ঝড়ের গাছ পড়ে তার বসতঘরসহ রেইনট্্ির, চাম্বল, সুপারি ও অন্যান্যসহ ১০-১৫টি গাছ পড়ে গেছে। সাউথখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন, রায়েন্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মিলন, খোন্তাকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন খান মহিউদ্দিন এবং ধানসাগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মইনুল ইসলাম টিপু জানান, তাদের চারটি ইউনিয়নে ঝড়ে দুই হাজারেরও বেশি ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। গাছ উপড়ে পরে বেশির ভাগ ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া, কয়েক হাজার বিভিন্ন প্রজাতির ছোটবড় গাছ ভেঙ্গে ও উপড়ে পড়েছে। সহ¯্রাধিক পুকুর ও ঘেরের মাছ ভেসে গেছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৌমিত্র সরকার ও জ্যষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা বিনয় কুমার রায় জানান, কৃষি ও মৎস্য সেক্টরের ক্ষয়ক্ষতি নিরুপনে কাজ চলছে।
শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সরদার মোস্তফা শাহীন বলেন, ঝড়ে উপজেলার সার্বিক ক্ষয়ক্ষতি নিরুপনে প্রসাশনের গঠিত টিম মাঠে নেমেছে। পূর্ব প্রস্তুতি থাকায় ক্ষতি বহু অংশে কম হয়েছে। বগীর ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ, ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন এলাকা এবং আশ্রয় কেন্দ্রগুলো পরিদর্শন করে আশ্রিতদের খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন