: শুষ্ক মৌসুমে সিরাজগঞ্জে শুরু হয়েছে নদী ভাঙন। বন্যার সময় স্রোতের তোরে যেমন নদী ভাঙ্গে তেমনি পানি শুকিয়ে যাবার সময়ও নদী ভাঙে। শুষ্ক মৌসুমেও বিভিন্ন স্থাপনা বিশেষ করে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিভিন্ন স্থাপনা, ঘরবাড়ি বসত ভিটা নদীর ভাঙনের মুখে পড়েছে এবং দিশেহারা হয়ে পড়েছে মানুষ।
সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরে শুরু হয়েছে যমুনার তীব্র ভাঙন। অসময়ে ভাঙন শুরু হওয়ায় বেশ কিছু বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। গত তিনদিন ধরে থেকে এনায়েতপুরের খুকনী ইউনিয়নের ব্রাহ্মনগ্রাম, আড়কান্দি ও জালালপুরে ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙনে ১২টি বসত ভিটা নদীগর্ভে চলে গেছে। এছাড়াও নদী তীর সংরক্ষণ কাজের দুটি এলাকার বেশ কিছু অংশ ধসে গেছে।
খুকনী ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য সোহরাব আলী বলেন, গত রোববার থেকে হঠাৎ করেই যমুনার পশ্চিম তীরে ভাঙন শুরু হয়। শুষ্ক মৌসুমে যমুনায় ভয়াবহ গর্জন ও ভাঙন দেখে এলাকায় আতঙ্ক শুরু হয়েছে। গত সোমবার দুপুর পর্যন্ত ব্রাহ্মনগ্রামে ডাম্পিং করা জিও ব্যাগের দু’টি স্থানে প্রায় ২শ’ মিটার এলাকা ধসে গেছে। মুহূর্তেই নদীগর্ভে বিলিন হয়েছে আড়কান্দি এলাকার নজরুল ও হোসেন আলীর বাড়িসহ ১০/১২টি বসতভিটা।
খুকনী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বলেন, হঠাৎ অসময়ে নদী ভাঙন শুরু হওয়ায় এলাকাবাসী আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। হুমকির মুখে পড়েছে খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতাল ও বিশ্ববিদ্যালয়, নার্সিং ইনস্টিটিউড, দেশের সর্ববৃহৎ এনায়েতপুর তাঁত কাপড়ের হাট, সিরাজগঞ্জ আঞ্চলিক সড়ক, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, তাঁতকারখানাসহ বহু ঘরবাড়ি।
বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলন সিরাজগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক রফিক মোল্লা জানান, যমুনায় নতুন নতুন চর জেগে ওঠায় পশ্চিম তীরে তীব্র স্রোতে আছড়ে পড়ার ফলে এই নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে।
ভাঙনরোধে যথাসময়ে কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়ায় হুমকির মুখে পড়েছে বিভিন্ন স্থাপনা। তবে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, ব্রাহ্মনগ্রাম ও আড়কান্দি এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে বলে আমরা শুনেছি। ওই এলাকায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পাবে যমুনার পশ্চিম তীরের অন্তত ৫ কিলোমিটার এলাকা।
এদিকে, সিরাজগঞ্জ জেলার নদী তীরবর্তী উপজেলার কাজীপুর, শাহজাদপুর, বেলকুচি ও চৌহালিতে ভাঙন অব্যহত রয়েছে। ফি বছর কোটি কোটি টাকা ব্যয় হলেও নদী ভাঙন রোধ সম্ভব হচ্ছে না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন