শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

আ.লীগের প্রার্থীরা দলীয় টিকিট চান, ভোট হলে জিতবে বিএনপি

ঢাকা দক্ষিণ সিটি নির্বাচন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:০০ এএম

চাঁদাবাজি ও দুর্নীতির মামলায় ৩৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ময়নুল হক মঞ্জু কারাগারে থাকায় তিনি নির্বাচন করবেন না। তাই আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বেশ সক্রিয়, পাশাপাশি বিএনপির প্রার্থীরাও প্রচারণা চালাচ্ছেন নিজেদের মত করে। বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান, ক্লাব, মসজিদের কার্যক্রমে প্রার্থীরা নিজের অংশগ্রহণ বাড়াচ্ছেন। কাউন্সিলর প্রার্থী হিসেবে নিজেদের জানান দিয়ে পাশে থাকার ওয়াদা দিচ্ছেন। নির্বাচিত হলে কী কী করবেন তা জনগণের সামনে উপস্থাপন করছেন। তবে বিএনপির প্রার্থীরা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে দল কি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন সেদিকে তাকিয়ে আছেন। দল যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণা দেয় তবেই তারা প্রার্থী হবেন।
এই এলাকায় এক সময় বিএনপির আধিপত্য থাকলেও এখন মোটামুটি আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণে। ওয়ার্ডটি কে.এম.দাস লেন, অভয়দাস লেন, টয়েনবি সার্কুলার রোড, জয়কালী মন্দির রোড হোল্ডিং নং- ১৯ হতে শেষ), ভগবতী ব্যানার্জী রোড, ফোল্ডার ষ্টীট, হাটখোলা রোড, আর. কে. মিশন রোড নিয়ে গঠিত। এই ওয়ার্ডে বিভিন্ন ক্লাবের নিয়ন্ত্রণ, মার্কেটের কমিটি, ব্যবসায়ীক সমিতি, মসজিদ কমিটি নিয়ে পুরো রাজনীতির সমীকরণ ওতপ্রোতভাবে জড়িত।

ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর প্রার্থীরা হলেন, প্রবীন আওয়ামী লীগ নেতা ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির কার্যনির্বাহি সদস্য মুজিবুর রহমান, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের দফতর উপ-কমিটির সাবেক সদস্য রাসুরুল হক শাহীন, ৩৯ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি রোকন উদ্দিন আহমেদ।

বিএনপির দুইজন নেতা এখন পর্যন্ত ৩৯নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে নির্বাচনে অংশগ্রহণে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তাদের একজন ওয়ারী থানা বিএনপিসাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল হক মুক্তো। তিনি এর আগেও এই ওয়ার্ডে কমিশনার ছিলেন। অন্যজন হলেন বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহ-সভাপতি সাব্বির হোসেন আরিফ। তবে দুইজনই তাকিয়ে আছেন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে দল কি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। দল যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণা দেয় তবেই তারা প্রার্থী হবেন।

মুজিবুর রহমান এই ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের ২৪ বছর সাধারণ সম্পাদক, পরে বৃহত্তর সূত্রাপুর থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবং ঢাকা দক্ষিণ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহি সদস্য ছিলেন। মুজিবুর রহমান ইনকিলাবকে বলেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতি করি তাই দলের মনোনয়ন চাই। মনোনয়ন পেলে নির্বাচন করবো তা না হলে করবো না। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন এই এলাকায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, মহিলা লীগ, ছাত্রলীগের নেতৃত্ব দিয়েছে আমাদের পরিবার, যখন এখানে আওয়ামী লীগ করার লোক ছিল না। বর্তমানে এখানে আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমি ও আমার পুরো পরিবার ঋণী, প্রধানমন্ত্রী বোনের বিয়েতে আমাদের বাসাতেও এসেছিলেন। আজীবন দলের জন্য কাজ করে যাব।

রাসুরুল হক শাহীন শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র (ক্রিকেট) এর সভাপতি এবং শেরে বাংলা বালিকা মহাবিদ্যালয়ের গভার্নিং বডির সভাপতি। শাহীন দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে না থাকলেও এই এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা হিসেবেই পরিচিত। দলের বিভিন্ন কর্মসূচী, জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে দলের পক্ষে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ব্যবসায়ী হিসেবে এলাকার মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্ব। শেরে বাংলা বালিকা মহাবিদ্যালয়ের গভার্নিং বডির সভাপতি হবার পর থেকে এলাকায় তার বিশেষ সুনাম তৈরী হয়েছে। শাহীন ইনকিলাবকে বলেন, এলাকার জনগণ চায় আমি নির্বাচন করি। তারা আমাকে বিশ্বাস করে যে আমি তাদের আমানতের খেয়ানত করি না। তাই এলাকার মানুষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, বিভিন্ন ব্যবসায়ীক সমিতিতে আমাকে যুক্ত করেছে। নিজে ব্যবসা করি, সাধ্যমত মানুষকে সহযোগীতা করি। রাজনীতির জন্য ব্যয় করি। নির্বাচনে যখন দলের দায়িত্ব পেয়েছি তা যথাযথভাবে পালন করেছি। দলের মনোনয়ন প্রত্যাশা করি, যেন জনগণের সেবা করার পথ প্রসস্থ হয়।

রোকন উদ্দিন আহমেদ এই ওয়ার্ডের দীর্ঘদিন সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। এক সময় যুবলীগও করেছেন তিনি। রোকন ইনকিলাবকে বলেন, দলের জন্য রাজনীতি করছি। যখন এই এলাকায় আওয়ামী লীগের কথা বলার লোক ছিল গুটি কয়েক তখন থেকেই বুকে সাহস নিয়ে দলে কর্মসূচীতে অংশ নিয়েছি। গতবার দলের মনোনয়ন পাইনি কিন্তু দলের প্রার্থীর জন্য কাজ করেছি। এবার দলের মনোনয়ন প্রত্যাশা করি।


জানতে চাইলে মোজাম্মেল হক মুক্তো বলেন, মানুষের মধ্যে ভোট নিয়ে এখন আর আগের মতো উৎসাহ, উদ্দীপনা, উৎসবের আমেজ দেখা যায় না। কারণ বর্তমান সরকার ভোটের উৎসবকে নষ্ট করে দিয়েছেন। একতরফা নির্বাচনের কারণে মানুষ ভোট কেন্দ্রেও যেতে আগ্রহী হয় না। অতীতের মতো এবারও যদি একই প্রক্রিয়ায় সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হয় তাহলে এই নির্বাচন হওয়া না হওয়া নিয়ে কোন কিছু যায় আসে না। নির্বাচন হলে দলের প্রার্থী হিসেবে কি প্রত্যাশা করছেন জানতে চাইলে মুক্তো বলেন, মানুষ যদি ভোট দিতে পারে, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যদি নির্বাচন হয় তাহলে বিএনপির প্রার্থী আবারও নির্বাচিত হবে। কারণ ওই এলাকায় আমি সাবেক কমিশনার ছিলাম। যে অবস্থায় রেখে এসেছিলাম আর এখনকার অবস্থা দেখলে কষ্ট পাই। চাঁদাবাজী, ফুটপাত দখল, সন্ত্রাসে ভরে গেছে ওয়ার্ডটি। এলাকার মানুষ প্রতিবাদও করতে পারে না। নিজেদের অধিকারের কথা বলতে পারে না। তিনি মনে করেন ভোট দিতে পারলে ৩৯নং ওয়ার্ডের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে চলা অপকর্মের রায় ব্যালটের মাধ্যমে দেবে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (3)
Kabir Ahmed ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১১:০১ এএম says : 0
আ.লীগের প্রার্থীরা দলীয় টিকিট পেলে জয় নিশ্চিত
Total Reply(0)
Habib Ahsan ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১১:০১ এএম says : 0
ভোট হলে বাংলাদেশের কোথাও আওয়ামীলীগ জিততে পারবে না
Total Reply(0)
Tajul Islam ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১১:০৫ এএম says : 0
মানুষের মধ্যে ভোট নিয়ে এখন আর আগের মতো উৎসাহ, উদ্দীপনা, উৎসবের আমেজ দেখা যায় না।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন