সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

আবাদি জমির মাটিতে ইট তৈরি রাউজানে কাঠ জ্বলছে ভাটাগুলোতে

এম বেলাল উদ্দিন, রাউজান (চট্টগ্রাম) থেকে | প্রকাশের সময় : ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:৩৫ এএম


চট্টগ্রামের রাউজানে ইটভাটার মাটির জোগান দিতে নির্বিচারে কাটা হচ্ছে ফসলী জমি। জ্বালানো হচ্ছে কাঠ। বাদ যাচ্ছে না ডাবুয়া রাবার বাগানের মালিকানাধীন টিলাভুমিও। স্থানীয়রা জানিয়েছেন রাউজানের অধিকাংশ ইটভাটা কৃষি জমির উপর প্রতিষ্ঠিত। বেশির ভাগ ভাটার অবস্থান উপজেলার ডাবুয়া রাবার বাগানের সঙ্গে। বনাঞ্চলের কাঠকে জ্বালানির উৎস করে প্রতিষ্ঠিত ভাটাসমূহ ইট তৈরির মাটির জোগান দিচ্ছে ফসলি জমি থেকে।
ইট তৈরিতে বেপরোয়াভাবে মাটি কেটে নেয়ায় কারণে শহীদ জাফর সড়কের একটি অংশ ধসের আশংকার মধ্যে রয়েছে। ভাটাসমূহের পাশে থাকা কৃষি জমি বিশাল বিশাল পুকুর দিঘীতে পরিণত হয়েছে।
ডাবুয়া ইউনিয়নের মেলুয়া এলাকার একটি ইটভাটায় মাটি কাটার ভয়াবহ চিত্র দেখা গেছে। এ ভাটায় তৈরি ইটের ট্রেডমার্ক এমবিসি। মালিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে জমির প্রকৃত মালিককে না জানিয়ে মাটি উঠিয়ে নেয়ার। এমন অভিযোগ করেছেন হাটহাজারী উপজেলার মেখল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। তিনি জানান, হালিমা খাতুন ও ফটু আকতার নামের তার দুই আত্মীয়ের মালিকানাধীন প্রায় চার একর কৃষিজমির মাটি এরই মধ্যে মাটি উঠিয়ে নিয়েছে জমির মালিকদের না জানিয়ে। এমন অভিযোগ করেছেন হালিমা বেগমের পুত্র শহীদুল্লাহ সিকদারও। রাউজানের আরো বেশ কয়েকটি ইটভাটায়ও কৃষি জমি থেকে মাটি উঠিয়ে নেয়ার দৃশ্য দেখা গেছে।
হলদিয়ার বৃক্ষবানুপুর এলাকায় দেখা যায়, এমবিসি নামের আরো একটি ইটভাটায় মাটির জোগান দিচ্ছে রাস্তার কিনারায় থাকা কৃষি জমি থেকে। ঐ এলাকার ৮/৯ টি ব্রিক ফিল্ডে জ্বালানো হচ্ছে হাজার হাজার মনের লাকড়ী কাঠ। প্রতিদিন রাতে শত শত জিপ (চাঁদের গাড়ি) করে জ্বালানী কাঠগুলো আসছে ফটিকছড়ি থেকে। জ্বালানী কাঠ গুলো দেখেও উদাসিন ফটিকছড়ির বন কর্মকর্তাগন। সিন্ডিকেট তৈরি করে সমগ্র ব্রিকফিল্ডে জ্বালানো হচ্ছে কাঠগুলো। এভাবে মাটি কেটে নেয়ার ফলে রাউজান উপজেলা সদর থেকে পার্বত্য উপজেলার সঙ্গে যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম শহীদ জাফর সড়ক এখন ধসে পড়ার হুমকির মধ্যে পড়েছে। ভেঙে পড়ার ঝুঁকিতে আছে দুটি বিদ্যুৎ খুটিও।
জানা যায়, পৃথক স্থানে দুটি ইটভাটা প্রতিষ্ঠা করা হলোও কোনোটিতে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই। কৃষি জমি থেকে মাটি উঠানো নিয়ে কথা বললে মালিক মোহাম্মদ লোকমান দাবি করেন, মালিকের সঙ্গে চুক্তি করে মাটি উঠানো হচ্ছে। ভাটা চালানোর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ট্রেড লাইসেন্স ও ভ্যাট দেয়া আছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই।
কৃষি জমি থেকে মাটি কাটার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে রাউজান উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেনায়েদ কবির সোহাগ বলেন, কৃষি জমি রক্ষায় সরকার ও উপজেলা প্রশাসন সব সময় সচেষ্ট। ফসলি জমি থেকে মাটিকাটা ও ভরাট করা বেআইনী। তিনি বলেন, মাটি কাটার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন