শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

এই শীতে ঘুরে আসুন সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের বেলাভূমি

কলাপাড়া(পটুয়াখালী)সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১ জানুয়ারি, ২০২০, ৬:১১ পিএম

“ঘরের বাইরে দু’পা ফেলিয়া, যা দেখেননি চক্ষু মেলিয়া, তাই দেখিবেন চক্ষু ভরিয়া”। একই স্থানে দাড়িয়ে সূর্যোদয় আর সূর্যাস্তের দৃশ্য একমাত্রই কুয়াকাটা সৈকতে। এখানে আসলে দেখতে পারবেন দখিনের অথৈই সমুদ্র, সমুদ্রের জলরাশি। রয়েছে আন্ধার মানিক নদী মোহনা, সুন্দর বনের পূর্বাংশ টেংরাগিরির ফাতরার বন, ফকির হাট, পায়রা নদীর মোহনা, লাল দিয়ার চর, কচিঁখালী, কটকা, সুন্দর বন, রাবনাবাদ চ্যানেল, পায়রা বন্দর। এছাড়া রাবনাবাদ চ্যানেলের ওপারে চর মৌডুবী। যেখানে রয়েছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা সবুজ অরণ্য ও বন্য প্রানী। এছাড়া আরও রয়েছে সোনার চর, চর কুকরি, চর মুকরী, সমুদ্রের মাঝে জেগে ওঠা চর বিজয়, ক্রাবল্যান্ড। এসব স্পটে অতিথি পাখিদের কিচিঁর মিচির কোলাহল আর লাল কাকঁড়ার ছুটোছুটি। রয়েছে আদিবাসী রাখাইন, রাখাইনদের শ্রী মঙ্গল বৌদ্ধ বিহার, কুয়াকাটার কুয়া। যে কুয়ার নামে কুয়াকাটার নাম করণ করা হয়েছে। মিশ্রিপাড়ায় রয়েছে এশিয়ার অন্যতম বৌদ্ধ মুর্তি, রাখাইনদের তাতঁ পল্লী। রাখাইনদের কৃষ্টি কালচার ও জীবনযাত্রা সম্পর্কে জানতে ইচ্ছুক হলে জানতে পারবেন পর্যটকরা। রয়েছে রাখাইন মহিলা মার্কেট। রয়েছে প্রতœতাত্বিক নিদর্শণ প্রায় ৩শ’ বছরের পুরোনে নৌকা। যে নৌকাটি রাখাইনদের আগমনের ইতিহাসের স্বাক্ষী স্বরুপ আজও রয়ে গেছে। এসব দৃশ্য দেখতে শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষাসহ বারো মাসই কুয়াকাটায় ভ্রমন পিপাসসুদের ভীড় থাকে। তাই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরুপ লীলাভূমি উপভোগ করতে আপনিও আসতে পারেন কুয়াকাটায়।

কুয়াকাটায় এসে শীতের সকালে কোথায় যাবেন: খুব সকালে হোটেলর রুম থেকে বেড় হয়ে কুয়াকাটার জিরো পয়েন্ট। বীচ থেকে বেড়িয়ে পড়বেন চর গঙ্গামতি। চর গঙ্গামতির বীচে দাড়িয়ে দেখতে পারবেন সমুদ্রের বুক চিরে লাল দগদগে সূর্য উদিত হওয়ায় দৃশ্য। আরও দেখবেন লাল কাকড়া অবাধ ছোটাছুটি সাথে রয়েছে ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল। সেখানে সকালের নাস্তা সেরে মিশ্রী পাড়ায় গিয়ে দেখবেন এশিয়ার অন্যতম বৌদ্ধ বিহার। সেখানে রয়েছে আদিবাসী রাখাইনদের কৃষ্টিকালচার। সেখান থেকে ফিরে হোটেল কক্ষে এসে দুপুর খাবার খেয়ে কিছুটা বিশ্রাম।

শীতের দুপুরে কোথায় যাবেন: হোটেল থেকে বের হয়ে ফের কুয়াকাটা জিরো পয়েন্ট। সেখান থেকে পাঁচশ গজ দূরে গিয়ে দেখতে পারবেন কুয়াকাটার ঐতিহ্য কুয়া, সীমা বৌদ্ধ বিহার, প্রতœতাত্বিক নিদর্শণ প্রায় ৩শ’ বছরের পুরোনে নৌকা। সেখান থেকে লেবুর চর। লেবুর চরে দেখতে পারবেন বিশাল এলাকা নিয়ে ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল। রয়েছে শুটকি পল্লী, জেলেদের জীবন জীবিকার দৃশ্য। সেখান থেকে ফিরে সন্ধ্যায় সৈকতের বীচ।

শীতের সন্ধ্যায় কি করবেন: বীচের দাড়িয়ে দেখবেন সূর্য অস্তের বিরল দৃশ্য। পরে বীচে পাতা সাড়িবদ্ধ বেঞ্চিতে বসে দেখবেন সাগরের অথাল পাতাল ঢেউ আর সমুদ্রের শো শো গর্জন। রাতে বীচের সাথেই রয়েছে মাছ ফ্রাইয়ের দোকান। সেখানে বসে খেতে পারবেন কাকড়াসহ দেশী বিদেশী বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ফ্রাই। এছাড়া ফাতরার বন, চর বিজয়, পায়রা বন্দরসহ একটু দুরের দর্শনীয় স্থানে যেতে চাইলে হাতে সময় বাড়ি নিতে হবে আরও দুই একদিন।

কোথায় থাকবেন: কুয়াকাটায় অবোকাঠামোগত উন্নয়ণ হয়েছে। ফাইভ স্টার ও থ্রি স্টার মানের হোটেলসহ শতাধিক আবাসিক হোটেল গড়ে উঠেছে এখানে। পর্যটকদের থাকার জন্য এখন রুমের কোন সংকট নেই। খাবার হোটেলসহ পর্যটক বান্ধব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও বেড়েছে। পরিবর্তণ হয়েছে মানুষের জীবন যাত্রার।
কিভাবে যাবেন কুয়াকাটা: দেশের যে কোন স্থান থেকে সড়ক পথে পরিবহন যোগে সহজেই কুয়াকাটায় আসতে পারবেন পর্যটকরা। খুলনা যশোর, বেনাপোল, রাজশাহী, বগুরা, পবনা, সিরাজগঞ্জ, দিনাজপুর, লালমনির হাট, ঢাকা, চট্রগ্রামসহ দেশের যে কোন জায়গা থেকে পরিবহন যোগে কুয়াকাটার সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে ওঠেছে। শাকুরা পরিবহন, কনক পরিবহন, তুহিন পরিবহন, সৌদিয়া, কুয়াকাটা এক্সপ্রেস, ইগল পরিবহন সহ প্রায় অর্ধ শতাধিক এসি নন এসি প্রতিদিন আসে কুয়াকাটায়। এছাড়া ঢাকা থেকে বিলাস বহুল লঞ্চ যোগেও কুয়াকাটা আসতে পারবেন। ঢাকা থেকে বরিশাল, পটুয়াখালী, আমতলী অথবা কলাপাড়া হয়ে কুয়াকাটা এখন সহজ রুট। এ্যাডভেনচার ভ্রমণে উৎসাহীদের জন্য লঞ্চ ভ্রমণ আলাদা রোমাঞ্চ বয়ে আনবে। বিলাস বহুল এই লঞ্চ ভ্রমণের পাশাপাশি পদ্মা মেঘনা বড় বড় নদী এবং পাশে থাকা সৌন্দর্য পর্যটকদের বাড়তি বিনোদন দিবে। পদ্মা ব্রীজ, লেবু খালী ব্রীজের কাজ সম্পন্ন হলে সড়ক যোগে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরো উন্নত হবে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন