ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন পেছানোর কোনো সুযোগ নেই। ভোটগ্রহণের তারিখ পেছানো হবে কি-না, সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এদিকে ৩০ জানুয়ারি দুই সিটিতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে ইসি।
এদিকে নির্বাচন উপলক্ষে আগামী ২৭ জানুয়ারি দিবাগত রাত ১২টা থেকে ৩১ জানুয়ারি সকাল ৬টা পর্যন্ত রাজধানীতে মোটরসাইকেল চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে বৈধ কার্ডধারী সাংবাদিকরা এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকবেন না।
গতকাল রোববার বিকেল সাড়ে ৩টায় প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) কক্ষে বৈঠক হয়। সিইসি কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন চার নির্বাচন কমিশনার। এ নিয়ে সোমবার বৈঠক হতে পারে বলে জানা গেছে। বৈঠক শেষে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচন পেছানোর ব্যাপারে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
কবিতা খানম বলেন, ৩০ জানুয়ারি নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছিল। নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনের বিষয়টি আদালতেও গেছে। কিন্তু আদালত নির্বাচন পেছানোর কথা বলেননি। আমরাও আমাদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসছি না। নির্বাচন ৩০ জানুয়ারিই থাকছে। বৈঠকের আগে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেছেন,ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন পেছানোর কোনো সুযোগ নেই। সিটি নির্বাচন পেছানোর বিষয়ে এখন পর্যন্ত কমিশনে কোনো প্রস্তাবনা উত্থাপন করা হয়নি। ফলে নির্বাচন পেছানোর সুযোগ নেই। তিনি বলেন, এরই মধ্যে এটা নিয়ে উচ্চ আদালতে রিট হয়েছে। তবে আদালত যদি কোনো সিদ্ধান্ত দেন, তাহলে সে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে আদালতের নির্দেশনা না এলে সিটি নির্বাচন পেছানোর কোনো সুযোগ নেই।
নির্বাচন কমিশনের তফসিল অনুসারে, আগামী ৩০ জানুয়ারি ডিএনসিসি-ডিএসসিসিতে ভোটগ্রহণ হওয়ার কথা। কিন্তু সেদিন সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সরস্বতী প‚জা উদযাপন হবে। নির্বাচনের তারিখ পেছাতে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ ও বাংলাদেশ প‚জা উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে দাবি তোলা হয়। পরে ডিএসসিসির রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে চিঠি দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মিহির লাল সাহা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ভোটের তারিখ পরিবর্তনের বিষয়টি বিবেচনা করতে ইসিতে চিঠি দেন ডিএসসিসির রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল বাতেন।
ইসির অতিরিক্ত সচিব মুখলেছুর রহমান বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটির রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল বাতেন সরস্বতী পূজা উপলক্ষে ভোট পেছানোর সুপারিশ করে একটি চিঠি দিয়েছে। চিঠির বিষয়টি আমরা নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছি। তবে কমিশন ভোট পেছানোর কোনো চিন্তা করছে না। সরস্বতী পূজা ২৯ জানুয়ারি। সে অনুযায়ি সব হওয়ার কথা।
অতিরিক্ত সচিব বলেন, একটি রিটের কারণে আজ হাইকোর্টের আদেশ দেয়ার কথা ছিল। হাইকোর্ট যদি কোনো আদেশ দেন তাহলে ভিন্ন কথা। তবে পূজার কারণে ভোট পেছানোর সুযোগ নেই। এদিকে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করর্পোরেশনের ভোটগ্রহণ উপলক্ষে দুই সিটিতে আগামী ৩০ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। ওইদিন ঢাকার দুই সিটি করর্পোরেশনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
গতকাল নির্বাচন কমিশন থেকে জারি করা এক পরিপত্রে এ তথ্য জানানো হয়েছে। নির্বাচন উপলক্ষে ২৯ জানুয়ারি দিবাগত রাত ১২টা থেকে ৩০ জানুয়ারি রাত ১২টা পর্যন্ত ঢাকা সিটিতে সকল প্রকার বেবিট্যাক্সি/অটোরিকশা, ট্যাক্সি ক্যাব, মাইক্রোবাস, জিপ, পিকআপ, কার, বাস, ট্রাক ও টেম্পো চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। একই সময়ে লঞ্চ, ইঞ্জিনচালিত সকল ধরনের নৌযান ও স্পিডবোর্ড চলাচলের উপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। আগামী ৩০ জানুয়ারি দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ওই দিন সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের সরস্বতী প‚জা হওয়ায় এই ভোটগ্রহণের দিন পরিবর্তনের দাবি উঠেছিল। বিষয়টি নিয়ে আদালতে রিট করা হয়েছে। কমিশন এখন রিটের শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন