কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে প্রায় ১২ বিঘা জমিতে পেঁয়াজের চাষ করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন কৃষক মনছুর আলম। আর এই পেঁয়াজ চাষে সাফল্যের স্বপ্ন বুনছেন ওই কৃষক। তবে পেঁয়াজের দাম ও ক্ষেতের রোগবালাই নিয়ে শঙ্কাও রয়েছে তার। এজন্য উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বিভিন্ন পরামর্শসহ সার্বিক সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।
কৃষক মনছুর আলী জানান, তিনি একজন হোটেল ব্যবসায়ী। তার বাড়ি পাশবর্তী ভ‚রুঙ্গামারী উপজেলার আন্ধারীঝার গ্রামে। স্থানীয় আন্ধারীঝার বাজারে তার একটি হোটেলের দোকান রয়েছে। সেখানে প্রতিদিন প্রায় ১০ থেকে ১৫ কেজি পেঁয়াজের প্রয়োজন হয়। সাম্প্রতিক সময়ে লাগামহীন দামে পেঁয়াজ কিনে ব্যবসায় ক্ষতির মুখে পড়েন তিনি। তাই এবার হোটেলের কাজে লাগানোর জন্য এবং বাড়তি আয়ের জন্য বাণিজ্যিকভাবে পেঁয়াজের চাষ করেছেন।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, নাগেশ্বরী উপজেলার সন্তোষপুর ইউনিয়নের রায়চান্দারপাড় হাজীপাড়া গ্রামে ৮ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ লাগিয়েছেন। এখনো সেখানে পেঁয়াজের চারা রোপনের কাজ করছেন কৃষি শ্রমিকরা।
কৃষক মনছুর আলী আরও জানান, কারো পরামর্শ ছাড়াই পেঁয়াজ চাষে আগ্রহী হয়েছেন। তাই চারা উৎপাদনের জন্য আধা বিঘা জমিতে বীজ বপন করে সে চারা দিয়ে ২ বিঘা জমিতে পেঁয়াজের চাষ শুরু করেন। পরে কুষ্টিয়া থেকে প্রতি হাজার চারা ২শ’ টাকা দরে এনে আরও প্রায় ১০ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ লাগিয়েছেন। এর মধ্যে রামখানা ইউনিয়নের আজমাতা এলাকায় ৪ বিঘা জমিতে যৌথভাবে চাষ করছেন মরিচ ও পেঁয়াজ। এছাড়াও প্রায় আড়াই বিঘা জমিতে চাষ করেছেন অন্যান্য শাক-সবজি। প্রতি বিঘা জমি লিজ নিয়েছেন বছরে ৭ হাজার টাকায়। আর এসব ক্ষেতে দৈনিক ৩শ’ টাকা মজুরিতে কাজ করে আয়ের সুযোগ পেয়েছেন ১০ থেকে ১৫ জন কৃষি শ্রমিক। তবে পেঁয়াজ উৎপাদনের পর সঠিক দাম পাবেন কিনা এ নিয়েও শঙ্কাও কম নয় ওই কৃষকের। শুধু তাই নয় ক্ষেতের রোগবালাই হলে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ার আশঙ্কায় হতাশ তিনি। তবে এ বছর পেঁয়াজ চাষে লাভবান হলে আগামীতে ব্যাপকভাবে চাষাবাদের পরিকল্পনা রয়েছে তার।
উপজেলা কৃষি অফিসার শামসুজ্জামান বলেন, এ বছর ২শ’ ৪০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও তা অতিক্রম করে অর্জিত হয়েছে ৫শ’ ৩০ হেক্টর জমিতে। তবে আমাদের কৃষি অফিস থেকে পেঁয়াজ চাষে কৃষকদেরকে সার, বীজ দেয়াসহ সার্বিক সহযোগিতা করা হয়েছে এবং ক্ষেতের রোগবালাই দমনে বিভিন্ন পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন