জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) আগুন ঘুরিয়ে কপালে জোরপূর্বক তিলক লাগিয়ে নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ করার ঘটনায় সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন ধর্মপ্রাণ মুসলিম সমাজ। এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নবীন শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকেরাও। ফেইসবুকে চলছে প্রতিবাদের ঝড়।
জানা যায়, গত মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৯ ব্যাচের স্নাতক প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু হয়। সেদিন বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটে নবীনরা ক্লাস করতে গেলে সিনিয়ররা লাইন ধরিয়ে সকলের কপালে আগুন নাড়িয়ে নাড়িয়ে তিলক দিয়ে হিন্দুরীতিতে বরণ করে। তিলক দিয়ে বরণের এসব ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানান অনেকেই।
এ ঘটনায়র প্রতিবাদে আলামিন আহমেদ লিখেছেন, ‘‘এটা দুঃখজনক। এতে কারো কোন মাথাব্যাথা নেই। যেই দেশে একটি কারখানায় নামাজ বাধ্যতামূলক করার কারণে চেতনাবাজদের চেতনা খাড়া হইছিল। সেটা নাকি ধর্ম পালনে বাধ্য করা হয়। তারা তো মুসলমানদের জন্য এই নোটিস দিয়েছিল। কিন্ত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের যে ঘটনা ঘটিয়েছে তাতে নিঃসন্দেহে এটা বিজাতীয় ধর্ম পালনে জবরদস্তি করছে। এই কর্মকাণ্ডে যারা জড়িত তাদের শাস্তি দাবি করছি।’’
এমএ মান্নান লিখেছেন, ‘‘নবীন বরণের সাথে তীলকের সম্পর্ক কি? সন্তানেরা ধর্ম দূরের কথা মানুষ হিসেবেও যোগ্যতা হারাচ্ছে। জবরদস্তীর প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই।’’
এনাম আজাদ লিখেছেন, ‘‘দায়িত্বশীলদের নিকট প্রশ্ন ৮৫% মুসলিমের দেশে এটা কি করে সম্ভব? হিন্দুদের সংস্কৃতি মুসলমানদের জোরপূবক চাপাবে আপনারা চুপ থাকবেন? অথচ মুসলমান মুসলমানকে নামাযের দিকে ডাকলে, পর্দার কথা বললেই আপনাদের ঘায়ে আগুন লেগে যায়। জোর জবরদস্তি বা অন্য ধর্মের তো প্রশ্নই আসে না। তখনই নানা জাতে কথায় আপনারা মুখরিত হয়ে উঠেন। কিন্তু এতো বড় অপরাধ আপনাদের চেতনায় লাগে না কেন?’’
মাহমুদুল হাসান লিখেছেন, ‘‘হিজাবধারী ছিলো। পর্দাশীল তো ছিলো না ভাই! আজকালকার হিজাবধারীরা পর্দাশীলদের তালিকায় কোনোভাবেই পড়ে না।’’
আবু আব্দুল্লাহ আলতাফ হোসাইন লিখেছেন, ‘‘আচ্ছা! নবীনবরন, ইত্যাদি বরন, ইত্যাদি দিবসে কলেজে না গেলেই তো হয়! আমি আগুনে ঝাপ দিয়ে বলবো এই আগুন তুই আমাকে পুড়লি কেন তাইলে কেমন অইবো ব্যাপারটা!’’
ইমরান হোসাইন লিখেছেন, ‘‘ইহুদী-নাসারারা ইসলামের যতটা ক্ষতি করছে তার থেকে কয়েকগুন বেশি ক্ষতি করছে এই নামধারী হিজাবী, নামধারী ইসলামী লেবাসধারী। প্রতিটা সার্কেলেই এই রকম দুই-চারটা হিজাবী দেখি, লেবাসধারী দেখি যেগুলা হিজাবও পড়ে আবার নন-মাহরামের কোলেও ওঠে।’’
তিলক দিয়ে নবীনবরণের ব্যাপারে একজন অভিভাবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘‘আমরা ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা করতে পাঠিয়েছি। কিন্তু পড়ালেখা করতে গিয়ে যদি নিজ ধর্মমতের বিরুদ্ধে কিছু চাপিয়ে দেওয়া হয়, তবে সেটা নিশ্চয়ই মঙ্গল বয়ে আনবে না। তিলক লাগিয়ে এই নবীনবরণ একজন মেয়ের বাবা হিসেবে আমাকে কষ্ট দিয়েছে। এককথায় এটাকে আমি ধর্মীয় আগ্রাসন বলতে চাই।’’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন