করোনা মহামারীর এই দুর্দিনে অনেক বন্ধু চাকরি হারিয়েছে। কেউবা অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসাব্যয় বহন করতে গিয়ে বিপর্যস্ত অবস্থায় পড়েছে। বন্ধুদের এমন আপৎকালীন অবস্থায় আর্থিক সহায়তার মাধ্যমে পাশে দাঁড়ানোর লক্ষে এই তহবিল গঠন করেছে ৩১ ব্যাচ। যারা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০১-০২ সেশনের শিক্ষার্থী। এই ব্যাচের ১ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী স্বপ্রণোদিত হয়ে যার যার সাধ্যমতো ফান্ডে জমা দিয়েছে। পরবর্তীতে বাহ্যিক অনুদান বা সহযোগিতার মাধ্যমে কলেবর আরো বৃদ্ধি করা হবে।
জানা গেছে, ৩১ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা দুটি মিটিং এর মাধ্যমে তহবিল প্রদান ও গ্রহনের বিষয়ে নীতিমালা চুড়ান্ত করেছে। আপৎকালীন ফান্ড ৩১ গঠনতন্ত্র ও পরিচালনা নির্দেশিকার আলোকে একটি পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়েছে। ব্যাচের সব বন্ধুদের গনতান্ত্রিক মতামতের ভিত্তিতে সামনের দিনে এই কমিটি কার্যক্রম পরিচালনা করবে। এই ফান্ড শুধুমাত্র ৩১ ব্যাচের ছাত্র-ছাত্রীদের আপৎকালীন ব্যয় মেটানো ও কল্যানে ব্যয় করা হবে। ফান্ডের মাধ্যমে ব্যাচের কোন বন্ধুর চিকিৎসা, সড়ক দুর্ঘটনা, করোনা মহামারীর ফলে সৃষ্ট আর্থিক সংকট, প্রাকৃতিক দুর্যোগ অথবা দুর্ঘটনার ফলে সৃষ্ট সংকট এবং দুর্যোগকালীন পরিবারের ভরনপোষণ, শারীরিক বিকলাঙ্গতার জন্য কর্মহীন/উপার্জনহীন হয়ে পড়লে সেই সংকট উত্তরণে বিনিয়োগ পরিকল্পনায় আর্থিক সহায়তা করবে এই ফান্ড।
এ বিষয়ে আপদকালীন ফান্ড ৩১ কমিটির মুখপাত্র ও অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থি সাহানোয়ার সাইদ শাহীন বলেন, এর আগে আমাদের বন্ধুদের বিপদের সময় ব্যক্তিগত ও সামষ্টিকভাবে পাশে দাড়িয়েছি। আরো বৃহৎ পরিসরে বন্ধুদের সহযোগিতা করার উদ্দেশ্যে এই তহবিল গঠন করা হয়েছে। আমাদের ব্যাচের বন্ধুরা ছাড়াও নিংস্বার্থভাবে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান অনুদান বা সহযোগিতা করতে চাইলে এই ফন্ডে অর্থ প্রদানে স্বাগত জানানো হবে।
জানা গেছে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্যতম সফল ব্যাচ হিসেবে চিহ্নিত করা হয় ৩১ ব্যাচকে। গত প্রায় দুই দশকে নানান সামাজিক কর্মকান্ড ও নিজেদের মধ্যে বন্ধুপ্রতিম সৌহার্দ বজায় রাখতে অনুষ্ঠান পরিচালনার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ব্যাচটি। আর এ ব্যাচের নতুন নতুন কার্যক্রম গ্রহন ও সামাজিক অনুষ্ঠান পরিচালনা করতে পিছন থেকে কাজ করে যাচ্ছে একটি টিম।
এ বিষয়ে কমিটির আহবায়ক ও বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী কবি ফারুক সুমন বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দুই দিনের পুনর্মিলনী করেছে ৩১ ব্যাচ। এর পর থেকে বন্ধুদের মধ্যে আন্তঃসংযোগ আরো সুদৃঢ় হয়। বন্ধুদের সুখেদুঃখে আগের তুলনায় আমরা আরো সক্রিয় হয়েছি। বেশ কিছুদিন ধরে আমাদের নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে করোনাকালীন বন্ধুদের দুর্যোগ ছাড়াও বিভিন্ন সময় বন্ধুদের অসুস্থতা, দূর্ঘটনা সহ নানাবিধ সমস্যার কথা উঠে এসেছে। হৃদয়স্পর্শী এসব ঘটনা-দুর্ঘটনায় আমরা সবাই ব্যথিত। আমরা ৩১ ব্যাচের বন্ধুরা সুসংগঠিত এবং উদারমনা একটা ব্যাচ হিসেবে বন্ধুদের দুঃসময়ে পাশে দাঁড়ানোর দৃঢ় সংকল্প নিয়েছি। আশা করি আমরা পারবো।
কমিটির অনান্য সদস্যরা হলেন- মডারেটর-আশেক এলাহী চৌধুরি বিমান, গাজি সালাহ উদ্দিন হিমেল, শেখ আল-মাহমুদ অলোক, হাবিব আহসান (দর্শন), আহবায়ক ফারুক সুমন, সহ-আহবায়ক মেহেরুন্নেসা তাহমিনা, কোষাধ্যক্ষ ও দফতর সম্পাদ সুরাইয়া ফেরদৌস, সহ-কোষাধ্যক্ষ- মাহেবুল্লাহ সজল, ফান্ড পরামর্শক- আইরিন পারভীন ডায়না ও আহসান হাবীব (ইংলিশ), মো. কাউসার আজম সজিব, মো. রেজাউল করিম, ফান্ড সিগনেটরি- মো. আওলাদ হোসেন, শাহরিয়ার মোস্তফা তন্ময়, ব্যাংক মুখপাত্র- আহসান হাবীব (ইংলিশ), মো. আওলাদ হোসেন, তালুকদার রেজওয়ান পলাশ, নাইম ইসলাম, ফান্ড মুখপাত্র-সাহানোয়ার সাইদ শাহীন ও মামুন আবদুল্লাহ লাচ্চু, কমিউনিকেটর-ওমর ফারুক ও রবিউল ইসলাম, আইনি পরামর্শক নাজনীন সুখি, সহ-দপ্তর সম্পাদক- তালুকদার রেজওয়ান পলাশ, ক্যাম্পাস প্রতিনিধি-মোস্তফিজ জুয়েল ও মো. রেজাউল করিম।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন