চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেইনার খালাসে স্টোর রেন্ট আপতত মওকুফের সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে। এরফলে বন্দরে আমদানি পণ্যভর্তি কন্টেইনার ও জাহাজের তীব্র জট কমবে। গতকাল বুধবার বন্দর থেকে কন্টেইনার ডেলিভারি পরিবহন হয়েছে অন্যদিনের চেয়ে বেশিহারে। একই সঙ্গে শিল্প-প্রতিষ্ঠান, কল-কারখানা পরিচালনায় তা সহায়ক হবে। একে দেশের ব্যবসা-বান্ধব পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করেছেন বন্দর ব্যবহারকারীগণ এবং বন্দর কর্তৃপক্ষ।
এ সিদ্ধান্ত অনুসারে কন্টেইনার খালাসে স্টোর রেন্ট বা ইয়ার্ডে মজুদ রাখার ওপর ভাড়া-চার্জ আগামী ৪ মে পর্যন্ত শতভাগ মওকুফ থাকবে। গতকাল নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পর বন্দর কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে তা কার্যকর করেছে। এরআগে শুধু বিজিএমইএ-বিকেএমইএ’র সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে এ সুবিধা দেয়ার ঘোষণা ছিল। এরপর এফবিসিসিআই ও চিটাগাং চেম্বারের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে সবধরনের কন্টেইনারের স্টোর রেন্টে শতভাগ ছাড়ের ঘোষণাটি এলো।
তাছাড়া গত ২৭ মার্চ থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত একই ধরনের ছাড় থাকলেও বেশিরভাগ আমদানিকারক পণ্যছাড় না করেই বন্দরে মজুদ ফেলে রাখেন। ফলে বন্দর কর্তৃপক্ষ ২১ এপ্রিল থেকে ছাড় সুবিধা বন্ধ করে দেয়। কন্টেইনার খালাসে শতভাগ স্টোর রেন্ট ছাড় সুবিধা তথা মওকুফের ফলে চট্টগ্রাম বন্দরকে নিট আয় ছাড় দিতে হচ্ছে প্রায় ১৩৮ কোটি টাকা।
গতকাল চট্টগ্রাম বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক ইনকিলাবকে জানান, কন্টেইনার খালাসে স্টোর রেন্ট ৪ মে পর্যন্ত মওকুফ হওয়ায় পণ্য খালাস, ডেলিভারি পরিবহন গত ২৪ ঘণ্টায় আশানুরূপ বেড়ে গেছে। এখন ব্যবসায়ীরা বন্দর-ব্যয় হ্রাসে কন্টেইনার খালাস নিচ্ছেন। এরফলে বন্দরজটও কমে আসছে।
গতকাল বন্দরের সবক’টি ইয়ার্ড মিলিয়ে কন্টেইনার মজুদ ছিল ৪৬ হাজার ১৪৫ টিইইউএস কন্টেইনার। সর্বোচ্চ স্বাভাবিক ধারণক্ষমতা হচ্ছে ৪৯ হাজার ১৮ টিইইউএস। গত ২৪ ঘণ্টায় কন্টেইনার ডেলিভারি হয়েছে ৪৪৪০ ইউনিট। হ্যান্ডলিং করা হয় ৫৮৭১ ইউনিট। বর্তমানে আমদানি কন্টেইনারবাহী ১০টি জাহাজে খালাস কাজ চলছে। আর জেটি-বার্থে ভিড়ার জন্য জটে অপেক্ষা করছে আরও ২৪ টি জাহাজ।
এ প্রসঙ্গে চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাহবুবুল আলম ইনকিলাবকে বলেন, কন্টেইনারের স্টোর রেন্ট শতভাগ মওকুফের সিদ্ধান্তে বন্দর কর্তৃপক্ষ তথা সরকারকে ধন্যবাদ। এরফলে ব্যবসা ও শিল্প-কারখানা পরিচালনায় ব্যয় কিছুটা সাশ্রয় হলো। বিশেষ করে করোনা পরিস্থিতিতে এটা খুবই প্রয়োজন ছিল। এখন ব্যবসায়ীরা কন্টেইনার খালাস করতে আগ্রহী হয়েছেন। তাতে বন্দরজটেরও উন্নতি হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন