চার গুণ ভাড়া আরোপের হুঁশিয়ারির পর চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেইনার খালাস ডেলিভারিতে গতি ফিরছে। আমদানিকারকেরা জরিমানা গুণার ভয়ে কন্টেইনার খালাস নিতে শুরু করেছেন। এর ফলে আপাতত চট্টগ্রাম বন্দরে জট পরিস্থিতির কোনো আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সম্প্রতি বন্দর থেকে এফসিএল কন্টেইনার খালাস অস্বাভাবিক হারে কমে যেতে থাকে। এতে বন্দরের ইয়ার্ডে কন্টেইনারের স্তুপ জমে যায়। একশ্রেণির আমদানিকারক বন্দরকে গুদাম হিসাবে ব্যবহার করা শুরু করেন। এতে বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম বিঘিœত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। এ প্রেক্ষিতে গত ২ মার্চ চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি সামাল দিতে চার গুণহারে স্টোররেন্ট আরোপের সিদ্ধান্ত নেয়। স্বাভাবিকহারে ভাড়া দিয়ে ২০ দিন পর্যন্ত ইয়ার্ডে রাখা যাবে কন্টেইনার। এর মধ্যে খালাস না নিলে ২১তম দিন থেকে গুণতে হবে জরিমানা। আগামী ১৫ মার্চ থেকে এ চার গুণহারে ভাড়া কার্যকরের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এ সিদ্ধান্ত জানিয়ে আমদানিকারক, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ও সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষের উদ্দেশে নোটিশ জারি করা হয়। নোটিশে বলা হয়, সম্প্রতি চট্টগ্রাম বন্দর থেকে কন্টেইনার ডেলিভারিতে অত্যন্ত ধীরগতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। কোনো কোন আমদানিকারক তাদের আমদানিকৃত কন্টেইনার ২১ দিন বা তারও অধিক সময় ছাড় না নিয়ে বন্দরের অভ্যন্তরে সংরক্ষণ করছেন। এতে বন্দরের স্বাভাবিক অপারেশন কার্যক্রমে বিঘœ ঘটছে। স্বাভাবিক কার্যক্রম নির্বিঘœ রেখে আমদানি-রফতানিকারকদের নিরবিচ্ছিন্ন সেবা দেয়ার লক্ষ্যে অবিলম্বে চট্টগ্রাম বন্দরে স্থিত আমদানিকৃত এফসিএল কন্টেইনারগুলো বন্দরের অভ্যন্তর থেকে দ্রæত খালাস নেয়ার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ করা হয়। অন্যথায় রেগুলেশনস ফর ওয়ার্কিং অব চিটাগাং পোর্ট (কার্গো অ্যান্ড কন্টেইনার) ২০০১ এর ১৬০ ধারার আলোকে কমন ল্যান্ডিং তারিখের পর ২১তম দিন থেকে প্রযোজ্য সø্যাবের অস্বাভাবিক ভাড়ার ওপর চার গুণহারে স্টোররেন্ট আরোপে কর্তৃপক্ষ বাধ্য হবে। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে আগামী ১৫ মার্চ থেকে তা কার্যকর হবে।
জানা গেছে, ওই নোটিশ জারির পর বন্দরে এফসিএল কন্টেইনার খালাস বাড়তে থাকে। ২ মার্চ যখন নোটিশ জারি হয় তখন বন্দরের অভ্যন্তরে কন্টেইনার ছিল ৩৭ হাজার ৮৩ টিইইউএস। আট দিনের ব্যবধানে গতকাল তা ৩৪ হাজারে নেমে আসে। জানা যায়, এমনিতেই জাহাজ ভাড়া এবং বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় আমদানি ব্যয় বেড়েছে। তার উপর বন্দরের পক্ষ থেকে চার গুণহারে ভাড়া আদায়ের হুঁশিয়ারির পর আমদানিকারকরা নড়েচড়ে বসেন। তারা দ্রæত পণ্য খালাসে মনোযোগী হন। তবে এখনো বিপুল সংখ্যক কন্টেইনার বন্দরে রয়ে গেছে। চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেইনার ধারণক্ষমতা ৪৯ হাজার ১০০ টিইইউএস। ধারণ ক্ষমতার কাছাকাছি কন্টেইনার জমা হলে বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম বিঘিœত হয়। কন্টেইনার ডেলিভারি বেড়ে যাওয়ায় কার্যক্রম স্বাভাবিক হচ্ছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, চার গুণহারে ভাড়া বৃদ্ধির নোটিশ দেয়ার পর কন্টেইনার খালাসে গতি এসেছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে বন্দরে জট পরিস্থিতির আপাতত কোনে আশঙ্কা নেই। বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে কন্টেইনার ডেলিভারি নেয়া হলে কর্তৃপক্ষ চার গুণহারে ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্তটি বিবেচনা করতে পারেন বলেও জানান তিনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন