দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত নিম্নচাপটি গতকাল (শনিবার) আরও শক্তি সঞ্চয় করে পরিণত হয়েছে গভীর নিম্নচাপে। পরের ধাপে এটি আরও জোরদার ও ঘনীভূত হয়ে রূপ নিতে পারে ঘূর্ণিঝড়ে। সম্ভাব্য এ ঘূর্ণিঝড়ের নাম ‘আমফান’। এটি গতকাল শেষ রাত অথবা আজ রোববার নাগাদ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার শঙ্কা জাগাচ্ছে।
করোনার বিপদকালে আরেক দুর্যোগ ও জনদুর্ভোগের শঙ্কা-উৎকণ্ঠা তৈরি করেছে সামুদ্রিক এই নিম্নচাপ। যা ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হতে পারে। এ নিয়ে দেশের সমুদ্র উপকূললীয় চর ও দ্বীপাঞ্চলবাসীর মাঝে বিরাজ করছে দুশ্চিন্তা-অস্থিরতা।
বৈশ্বিক আবহাওয়া সংস্থাগুলো বলছে, সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় ‘আমফান’ ভারতের দক্ষিণ উপকূল হয়ে বাংলাদেশে আঘাত হানতে পারে। তবে যদি আঘাতের আগে দুর্বল হয়ে শেষ মুহূর্তে শক্তিমত্তা হারিয়ে না ফেলে।
গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে বঙ্গোপসাগর উত্তাল রয়েছে। সমুদ্র বন্দরসমূহকে সতর্ক সঙ্কেত দেখানো হচ্ছে। প্রায় সারাদেশে পড়ছে ভরা গ্রীষ্মের খরতপ্ত আবহাওয়ায় ভ্যাপসা গরম। তবে মাঝেমধ্যে মেঘের শীতল ছায়া ও ঝিরিঝিরি বৃষ্টিপাত সাময়িক স্বস্তি দিচ্ছে। গভীর নিম্নচাপে আবহাওয়া বদলাচ্ছে।
সর্বশেষ গতকাল সন্ধ্যায় আবহাওয়ার বিশেষ বুলেটিনে আবহাওয়াবিদ মো. আবদুর রহমান খান জানান, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও এর সংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি আরও সামান্য পশ্চিম, উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে। এটি গতকাল সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১৩৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ, দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১২৯০ কি.মি. দক্ষিণ, দক্ষিণ-পশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১২৯৫ কি.মি. দক্ষিণ, দক্ষিণ-পশ্চিমে ও পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ১২৭০ কি.মি. দক্ষিণ, দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।
গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘন্টায় ৫০ কি.মি., যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ ০ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের কাছে সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে এক নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সঙ্কেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।
আগামী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানা গেছে, দেশের প্রায় সবকটি বিভাগে কিছু কিছু জায়গায় বিক্ষিপ্ত দমকা হাওয়ার সাথে বৃষ্টি-বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে। অনেক জায়গায় আকাশ আংশিক মেঘলাসহ আবহাওয়া থাকতে পারে শুষ্ক। তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে। খুলনা বিভাগসহ মাইজদী অঞ্চলের উপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যায়। তবে কিছু এলাকায় কমে যেতে পারে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় দেশে বৃষ্টি-বজ্রবৃষ্টির প্রবণতা বেড়ে যেতে পারে।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সবক’িট বিভাগের বিভিন্ন স্থানে কমবেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। জ্যৈষ্ঠের গরমের তীব্রতার রাশ টেনে ধরেছে ভর গ্রীষ্মের স্বল্প বৃষ্টি। গত কয়েকদিনের ভ্যাপসা ঘাম ঝরানো গরমের দাপটে সর্দি-কাশি, জ্বর, গলাব্যাথা, ডায়রিয়া, আমাশয়, হাঁপনিসহ মৌসুমী রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন