কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌপথে লঞ্চ ও স্পিডবোটে ঢাকামুখী যাত্রীদের ভিড় রয়েছে। দীর্ঘ দুই মাসের বেশি সময় লঞ্চ ও স্পিডবোট বন্ধ থাকার পরে পুনরায় চলাচল শুরু হওয়ায় ফেরিতে যাত্রীদের ভিড় কমেছে। তবে লঞ্চ ও স্পিডবোটে যাত্রী নিয়ন্ত্রণে ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ, বিআইডবিøউটিএ কাজ করছে। ব্যারিকেড দিয়ে ধারণক্ষমতা অনুসরণ করে যাত্রী ওঠানো হচ্ছে। লঞ্চে ওঠার আগে দেয়া হচ্ছে হ্যান্ড স্যানিটাইজার। এদিকে বৈরি আবহাওয়ার কারণে গতকাল প্রায় আধা ঘণ্টা এ রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়। এতে বিঘিœত হয় স্পিডবোট চলাচল।
বিআইডবিøউটিএ কাঁঠালবাড়ি ঘাট সূত্র জানায়, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত মার্চ মাসের ২৪ তারিখ দুপুর থেকে কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌপথে ৮৭টি লঞ্চ ও আড়াই শতাধিক স্পিডবোট চলাচল বন্ধ রাখা হয়। ফেরি চালু থাকায় সাধারণ যাত্রীরা ফেরিতে গাদাগাদি করে পদ্মা পাড়ি দিত। কাঁঠালবাড়িতে যাত্রীদের চাপ কিছুটা কম। তবে ব্যক্তিগত যানবাহনের জটলা নেই। প্রশাসন বার বার লঞ্চ ও স্পিডবোট মালিকদের হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও নিরাপত্তাসামগ্রী রাখার আহবান জানিয়েছে। লঞ্চের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় কঠিন হয়ে পড়ছে।
কাঁঠালবাড়ি লঞ্চ ঘাটের বিআইডবিøউটিএর ইন্সপেক্টর আক্তার হোসেন বলেন, লঞ্চে গুনে গুনে যাত্রী দেয়া হচ্ছে। আসন আলাদা না হওয়ায় শারীরিক দূরত্ব মানানো কঠিন। তবে আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি।
গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ও পাবনা জেলার কাজিরহাট নৌ-রুটে অবৈধভাবে চলাচল করছে স্পিডবোট। বিআইডবিøউটিএর অনুমোদন ছাড়াই দেশের বৃহত্তম দু’টি নদী পদ্মা ও যমুনা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাড়ি দিচ্ছেন যাত্রীরা। যাত্রীদের কোন লাইফজ্যাকেট নেই, স্পিডবোটের নেই কোন বৈধ কাগজপত্র, ড্রাইভারদের নেই প্রশিক্ষণ ও সার্টিফিকেট এভাবে চলছে ৩ বছর ধরে।
ঘাট সূত্রে জানা যায়, দক্ষিণ অঞ্চলের প্রবেশদ্বার দৌলতদিয়া ঘাট ও উত্তর অঞ্চলের প্রবেশদ্বার কাজীরহাট এলাকায় দীর্ঘ তিন বছর ধরে এভাবেই চলছে স্পিডবোট। প্রতিদিন দৌলতদিয়া ঘাট থেকে ছয়টি, পাবনার কাজীরহাট থেকে তিনটি স্পিডবোট নিয়মিত যাত্রী পারাপার করছে। মানা হচ্ছে না কোন নিয়ম-কানুন। মালিকদের ইচ্ছেমত চলছে স্পিডবোটগুলো। করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে লঞ্চ চলাচল বন্ধের সাথে স্পিডবোট বন্ধ ছিল। গত রোববার থেকে লঞ্চ চলাচল শুরু হলে তার সাথে পাল্লা দিয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখে গাদাগাদি করে ধারণক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত যাত্রী আনা-নেয়া করছে স্পিডবোটগুলো। মানা হচ্ছে না কোন স্বাস্থ্যবিধি এবং যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্পিডবোট চালক কাজীর হাটের বকুল সরদার (৪৫) বলেন, পাবনার রুপপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এই বোটের মালিক। আমি মজুরিতে কাজ করি। আমার স্পিডবোট চালানোর কোন সার্টিফিকেট নেই। স্পিডবোট মালিক কাদের ব্যাপারি বলেন, তিন বছর ধরে আমরা এই নৌ-রুটে স্পিডবোট চালাচ্ছি, আমাদের কোন বৈধ কাগজপত্র নেই। তবে জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেছি।
বাংলাদেশ নৌ-পরিবহন অধিদফতর আরিচা নৌবন্দরের ট্রাফিক ইন্সেপেক্টর (টিআই) এস এম আশিকুল আলম বলেন, অবৈধভাবে চলাচল করার কারণে কয়েকটি মামলা দেয়া হয়েছে। বিআইডবিøউটিএর আরিচা অঞ্চলের উপ-পরিচালক শেখ মো. সেলিম রেজা বলেন, স্পিডবোট বন্ধ করার জন্য প্রশাসনকে চিঠি দেয়া হয়েছে। দ্রত বন্ধের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন