করোনা দুর্যোগে গণপরিবহন ভাড়া বেড়ে যাওয়ায় চট্টগ্রামে বিপাকে পড়েছে স্বল্প আয়ের মানুষ। আয়ের একটি অংশ যাতায়াতে ব্যয় করতে হচ্ছে। এতে জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ছে। ভাড়া নিয়েও রীতিমত নৈরাজ্য চলছে। ৬০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি করা হলেও আদায় করা হচ্ছে আরও বেশি। গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মানারও কোন বালাই নেই। গাদাগাদি করে যাত্রী তোলা হচ্ছে। এতে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে। দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা।
গেল ১ জুন নগরীতে গণপরিবহন চলাচল শুরুর দিনেই বর্ধিতভাড়া আদায় শুরু হয়। সিটি সার্ভিসের সর্বনিম্ন ভাড়া পাঁচ টাকা নির্ধারণ করা হয়। তবে তা মানছে না পরিবহন শ্রমিকরা। বাসে উঠানামা দশ টাকা আদায় করা হচ্ছে কোন কোন রুটে। হিউম্যান হলার এবং টেস্পুতেও আগের চেয়ে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় হচ্ছে।
সিটি সার্ভিসের চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ে এগিয়ে মহানগরী থেকে জেলার বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী বাস, মিনিবাস। যাত্রী কম নিতে হচ্ছে এমন অজুহাতে বেশি ভাড়া আদায় করা হলেও স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। অতিরিক্ত যাত্রী তোলা হচ্ছে। বেড়ে গেছে অটোরিকশা ভাড়াও।
নগরীর ১৬টি রুটে ৭০ ভাগ গণপরিবহন চলাচল করছে। বাকি ত্রিশভাগ রাস্তায় নেই। টানা দুই মাসের বেশি সময় অলস বসে থাকায় অনেক পরিবহন বিকল হয়ে গেছে। এতে পরিবহন সঙ্কটও দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে অফিস শুরু ও ছুটির সময়ে মানুষ গণপরিবহনে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে।
আর তখনই পরিবহন শ্রমিকরা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় শুরু করে। গত কয়েক দিনে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহনের দায়ে বেশ কয়েকটি বাস আটক করা হয়েছে। বাস চালক ও যেসব কারখানার শ্রমিক পরিবহন করা হচ্ছিল সেসব কারখানাকে জরিমানাও করেছেন ভ্রাম্যমান আদালত। তবুও থেমে নেই স্বাস্থ্যবিধি ভেঙ্গে যাত্রী পরিবহন।
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এ মহানগরীর ৭০ লাখ মানুষের বিশাল অংশ গণপরিবহনের উপর নির্ভরশীল। দেশের সবচেয়ে বড় চট্টগ্রাম ইপিজেডসহ তিনটি ইপিজেড এবং শিল্প কারখানার বেশিরভাগ শ্রমিক গণপরিবহনের যাতায়াত করে। হাতে গোনা কিছু কারখানার নিজস্ব পরিবহন আছে। শ্রমিক ছাড়াও কর্মজীবী, নিম্ন এবং মধ্যবিত্তরাও গণপরিবহনে যাতায়াত করেন। ভাড়া বেড়ে যাওয়ায় ব্যয় বেড়ে গেছে। করোনা মহামারীতে মন্দার কারণে এমনিতেই শ্রমিকরা শতভাগ বেতন থেকে বঞ্চিত। মানুষের আয় রোজগারও কমে গেছে। এ অবস্থায় বিপাকে পড়েছে স্বল্প এবং সীমিত আয়ের লোকজন।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ- ক্যাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন বলেন, এমন দুঃসময়ে পরিবহন ভাড়া বাড়িয়ে দেওয়ায় নিম্ন এবং মধ্যবিত্তরা দুর্ভোগে পড়েছে। তদারকি না থাকায় গলাকাটা হারে ভাড়া আদায় হচ্ছে। জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ছে।
তবে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়টি অস্বীকার করে চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পরিবহন মালিক গ্রুপের মহাসচিব বেলায়েত হোসেন বেলাল বলেন, নির্ধারিত ৬০ ভাগের বেশি ভাড়া আদায় হচ্ছে না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্ধেক যাত্রী পরিবহন করতে হচ্ছে। তাছাড়া এখন যাত্রীও কম।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন