রোনাভাইরাসের ধাক্কা সামলে অনেক বিধি-নিষেদের বেড়াজালে গত মাসেই ফুটবল ফিরেছে জার্মানিতে। ক্রিকেটও ফেরার চেষ্টায়। তবে এদেশের মানুষের জন্য আসল ফুটবল বলতে যা বোঝায় সেই স্প্যানিশ লা লিগা ফিরছে আজ রাতেই। এদিন মুখোমুখি হবে সেভিয়া ও রিয়াল বেতিস। লিগ ফেরার ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত দুইটায়। তবে উপমহাদেশের ফুটবল রোমান্টিকদের ‘আসল লড়াই’ দেখতে অপেক্ষা করতে হবে আরো কিছু মুহূর্ত। সমর্থনের বিচারে এশিয়ান ভক্তদের প্রিয় দল বার্সেলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদ যে মাঠে নামবে এর পরই! আগামী ১৩ জুন দিবাগত রাত ২টায় মায়োর্কার মাঠে খেলতে নামবে বার্সা। একদিন পর রাত সাড়ে এগারোটায় এইবারের মুখোমুখি হবে স্পেনের সফলতম ক্লাব মাদ্রিদ।
দীর্ঘ প্রতীক্ষা আর অনিশ্চয়তার ইতি টেনে প্রায় দুই মাস পর মাঠে ফিরতে যাচ্ছে লা লিগা। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের প্রকোপ স্পেনে একটু কমেছে বটে, তবে স্বাস্থ্য ঝুঁকি আছে আগের মতোই। সেসব পাশ কাটিয়েই হতে যাচ্ছে স্পেনের শীর্ষ ফুটবল প্রতিযোগিতাটি। তবে লিগের বাকি সব ম্যাচ হবে দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে। অতি সংক্রামক ভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে একই সঙ্গে থাকবে নানা নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগের মধ্যে গত মাসে প্রথম শুরু হওয়া বুন্দেসলিগার ম্যাচগুলোর মতো নিয়মের ঘেরাটোপে শুরু হবে লা লিগা।
সবকিছু কিভাবে এগোবে, তা সময়ই বলে দেবে। তবে প্রতিযোগিতাটির ইতিহাসে এবারের আসর যে সবচেয়ে ‘অদ্ভুত’ হতে যাচ্ছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে মাঝপথে যে দীর্ঘ বিরতি পড়েছে, ততটা দেখা যায় না দুই মৌসুমের মাঝেও। বাকি ১১ রাউন্ডের ম্যাচগুলো এক মাসের একটু বেশি সময়ে শেষ করার পরিকল্পনা করছে কর্তৃপক্ষ।
ফাঁকা গ্যালারি হোক কিংবা নিয়মের বেড়াজাল-এতসব বাধার মাঝেও যে দুর্দান্ত একটি শিরোপা লড়াই অপেক্ষা করছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। আসরের দুই চিরপ্রতিদ্ব›দ্বী দলের মাঝে ব্যবধান মাত্র ২ পয়েন্টের। শীর্ষে থাকা বার্সেলোনার ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে রিয়াল মাদ্রিদ। আর এত সু² ব্যবধানে শীর্ষস্থান যে সুসংহত নয়, তা ভালোমতোই জানা।
মৌসুমে ঘরের মাঠে সবচেয়ে সফল বার্সেলোনা তাদের ছয়টি অ্যাওয়ে ম্যাচের চারটি খেলবে সেভিয়া, আলাভেস, ভিয়ারিয়াল ও রিয়াল ভাইয়াদলিদের বিপক্ষে। এই দলগুলো তাদের ঘরের মাঠে তুলনাম‚লক বেশি পয়েন্ট হারিয়েছে। পক্ষান্তরে রিয়াল তাদের পাঁচ অ্যাওয়ে ম্যাচের তিনটি খেলবে তুলনাম‚লক কঠিন তিন স্টেডিয়ামে; রিয়াল সোসিয়েদাদ, গ্রানাদা ও আথলেতিক ক্লাব। এই তিনটি দল আসরে ঘরের মাঠে তুলনাম‚লক কম পয়েন্ট হারিয়েছে। সমর্থকদের সামনে তারা ছিল বেশ শক্তিশালী। দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে তারা কেমন করে, সেটা অবশ্য দেখার বিষয়।
শেষ ১১ রাউন্ডে বার্সেলোনা ঘরের মাঠে খেলবে পাঁচটি ম্যাচ, আর রিয়ালের হোম ম্যাচ ছয়টি। এদিক থেকে মাদ্রিদের দলটি একটু সুবিধাজনক অবস্থানে থাকলেও আরেক ক্ষেত্রে আবার উল্টো। দুদলের মুখোমুখি লড়াইয়ের পালা শেষ। তাই উভয় পক্ষের সামনেই সুযোগ আছে বাকি রাউন্ডগুলোয় শতভাগ জয় তুলে নেওয়া। তেমনটা হলে রিয়ালকে হতাশায় ডুবিয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হবে কাতালান ক্লাবটি।
২৭ রাউন্ড শেষে বার্সেলোনার পয়েন্ট ৫৮। রিয়ালের ৫৬। মাদ্রিদের দলটির চেয়ে ৯ পয়েন্ট পিছিয়ে তৃতীয় স্থানে থাকা সেভিয়া শিরোপা লড়াইয়ে পিছিয়ে পড়েছে বটে, তবে পাল্টে যাওয়া পরিস্থিতিতে ঘটতে পারে অনেক কিছুই। শীর্ষ চারে থেকে আগামী মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে জায়গা করে নেওয়ার লড়াইও তো আছে। যে দৌড়ে ভালোমতো আছে রিয়াল সোসিয়েদাদ (৪৬), গেটাফে (৪৬), অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ (৪৫)। খুব একটা পিছিয়ে নেই পরের কয়েকটি দলও।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন