পানির অপর নাম জীবণ। পানি ছাড়া কোন জীবই জীবণ ধারণ করতে পারে না। পানি শরীরের বিভিন্ন উপকার করে থাকে। সামান্য ডিহাইড্রেশন বা পানি স্বল্পতা মন ও মানসিকতার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। মানবদেহে দুই-তৃতীয়াংশ পানি দ্বারা পূর্ণ। সুতরাং ডিহাইড্রেশন অধিকাংশ শরীরের কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটাতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে ডিহাইড্রেশন দূর্বলতা, রাগ এবং দ্বিধা ও মানসিকতার সমস্যা, শক্তির সাথে সম্পৃক্ত। আপনার দেহের কোষগুলো যদি ঠিকভাবে কাজ করতে চায় অর্থাৎ আপনি যদি ঠিকমত যথার্থভাবে কাজ করতে চান তাহলে আপনাকে ভালভাবে হাইড্রেটেড থাকতে হবে অর্থাৎ পানি পান করতে হবে।
পানি পান স্বাস্থ্যকর হার্ট রেট এবং রক্তচাপ রক্ষায় সাহায্য করে থাকে। শরীরের সব সিস্টেম ভালভাবে কাজ করে পানি পূর্ণ অবস্থায়। ডিহাইড্রেশনের কারণে মানসিক চাপ, দুর্বলতা, রাগ, নেতিবাচক মানসিকতার সৃষ্টি হতে পারে। মানসিক চাপ থেকে দূরে থাকতে একটু একটু করে পানি খান। যে কোনো কাজের পূর্বে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুণ। পানি পান করার ফলে আপনি দীর্ঘক্ষন স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করতে সক্ষম হবেন। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করলে মাংসপেশীর ক্র্যাম্প থেকে রক্ষা পাবেন। পানি শরীরের জয়েন্টগুলোকেও লুব্রিকেট করে রাখে। আপনার পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা প্রয়োজন লিম্ফ বা লসিকা তৈরি করার জন্য। লিম্ফ শরীরের একটি ফ্লুইড এবং রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার অংশ।
পানি স্বল্পতায় শরীরের চামড়া ঢিলা হয়ে যায়। পানি পান করলে ত্বকের কোষগুলো সজীব থাকে। পর্যাপ্ত পানি পান করার ফলে ত্বকের ভাজগুলো ধীরে ধীরে কমে যায়। ফলে আপনাকে সজীব এবং কমবয়সী দেখাবে।
পানি আপনাকে স্লিম থাকতে সাহায্য করে থাকে। ঠান্ডা পানি পান করলে আপনার বিপাক ক্রিয়া বৃদ্ধি পায় এবং এর ফলে শরীরের ওজন ধীরে ধীরে কমে যায়। ঠান্ডা পানি পান করার পর শরীরের বেশী শক্তি খরচ করতে হয় তাপমাত্রা বাড়ানোর জন্য। এর অর্থ হলো আপনি বেশি ক্যালরি খরচ করছেন। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে অতিরিক্ত ওজনের অধিকারী যুবতীদের সকালের নাস্তার আধা ঘণ্টা আগে দুই কাপ ঠান্ডা পানি পান করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। শুধু সকালের নাস্তা নয় বরং দুপুরের খাবার এবং রাতের খাবারের আগেও একই ধরণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল এবং ৮ সপ্তাহ চালিয়ে যেতে বলা হয়েছিল। সময় শেষে দেখা গেল মহিলাদের ওজন আগের চেয়ে কমে গেছে।
পানি বর্জ্য পদার্থগুলো ভেঙ্গে ফেলে অর্থাৎ ডাইলুট করে এবং অন্ত্র থেকে টক্সিনকে অপসারণে সাহায্য করে। অর্থাৎ পানি শরীর থেকে টক্সিন বের করতে সাহায্য করে থাকে। পানি এবং ফাইবার দুটো মিলে আমাদের কনস্টিপেশন অর্থাৎ কোষ্টকাঠিন্য থেকে রক্ষা করে থাকে। পর্যাপ্ত পানি পান করলে কিডনি স্টোন থেকে রেহাই পাওয়া যায়। তবে ক্রনিক কিডনি রোগীদের ক্ষেত্রে পানি খাওয়া নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে। বিশেষ করে যাদের পায়ে এবং মুখে পানি জমা হয় কিডনি রোগের কারণে তাদের ক্ষেত্রে ডাক্তার নির্দেশিত নির্দিষ্ট পরিমাণ পানি পান করতে হবে। এছাড়া বাকীদের ক্ষেত্রে অবশ্যই বিশুদ্ধ পানি পর্যাপ্ত পরিমাণে পান করতে হবে। মনে রাখবেন পানির কোনো বিকল্প নাই।
ডাঃ মোঃ ফারুক হোসেন
মুখ ও দন্তরোগ বিশেষজ্ঞ
মোবাইল ঃ ০১৮১৭৫২১৮৯৭
ই-মেইল ঃ dr.faruqu@gmail.com
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন