শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

ত্যাগ চাই মর্সিয়া ক্রন্দন চাহি না

এ.কে.এম ফজলুর রহমান মুন্শী | প্রকাশের সময় : ২৭ আগস্ট, ২০২০, ১২:০০ এএম

মুহাররম মাসের দশ তারিখটি ‘আশুরা’ নামে খ্যাত। এই দিনটি অত্যান্ত বরকত ও ফজিলতে পরিপূর্ণ। এই দিনে মহান আল্লাহপাক যে সকল ঘটনা সংঘঠিত করেছেন, তার সংক্ষিপ্ত বিবরণ নিম্নে পেশ করা হলো। (১) আশুরার দিন পরম করুণাময় আল্লাহপাক পবিত্র লাওহে মাহফুজ ও যাবতীয় সৃষ্ট জীবের রূহ পয়দা করেছেন। (২) সমস্ত দুনীয়ার নদ-নদী, পাহাড়-পর্বত, সাগর-মহাসাগর এই দিনেই সৃষ্টি করা হয়েছে। (৩) মানবজাতির আদিপিতা হযরত আদম (আ:)-কে আল্লাহপাক এই তারিখেই পয়দা করেছিলেন এবং এই তারিখেই বেহেশতে দাখিল করেছিলেন এবং এই দিনেই আল্লাহপাক তাঁর তওবাহ কবুল করেছিলেন। (৪) বেহেশত হতে পৃথিবীতে অবতরণের পর নিজের ভুল ও অপরাধের জন্য কান্নাকাটি করার পর এই তারিখেই আল্লাহপাক হযরত ইদ্রিস (আ:)-কে বেহেশতে নিয়ে গেছেন।

(৫) এই দিনেই হযরত নূহ (আ:) ও তাঁর অল্পসংখ্যক ঈমানদার উম্মতগণ অল্প কয়েক দিনের খোরাক নিয়ে কিস্তিকে শওয়ার হয়েছিলেন এবং তুফান হতে মুক্তিলাভ করেছিলেন। (৬) এই দিনে আল্লাহপাক হযরত ইবরাহীম (আ:)-কে পয়দা করেছিলেন এবং এই দিনেই তিনি নমরুদের অগ্নিকুন্ড হতে নাজাত পেয়েছিলেন। (৭) এই দিনেই হযরত মূসা (আ:) তুর পর্বতে আল্লাহর সঙ্গে কথার্বাতা বলেছিলেন এবং তাওরাত কিতাব লাভ করেছিলেন। আর এই দিনেই পাপাত্মা ফেরাউন নিজের দলবলসহ মূসা (আ:)-এর পশ্চাদ্বাবন করতে গিয়ে বাহরে কুলজুমে ডুবে ধ্বংস হয়েছিল। (৮) হযরত আইয়্যুব (আ:) এই দিনে রোগ হতে মুক্তি লাভ করে ধন-সম্পদ ফিরে পেয়েছিলেন। (৯) হযরত ইয়াকুব (আ:) প্রিয় পুত্র ইউসুফ (আ.)-কে বহু শোক-তাপ সহ্য করার পর এই দিনে ফিরে পেয়েছিলেন। (১০) এই দিনই আল্লাহপাক হযরত ইউনুস (আ:)-কে মাছের পেট হতে উদ্ধার করেছিলেন। (১১) দুর্দান্ত জালেম ও নাফরমান ফেরাউনের কবল হতে রক্ষা পওয়ার জন্য আল্লাহপাক এই দিনেই বনী ইসরাঈলদের জন্য বাহরে কুলজুমে বারটি রাস্তা তৈরি করে দিয়েছিলেন।

(১২) এই দিনেই হযরত দাউদ (আ:)-এর গোনাহ মাফ হয়েছিল এবং এই দিনই হযরত সুলায়মান (আ:) রাজত্ব হাতছাড়া হওয়ার পর পুনর্বার রাজত্ব লাভ করেছিলেন। (১৩) এই দিনেই হযরত ইসা (আ:) পৃথিবীতে আগমন করেছিলেন এবং এই দিনেই তাঁকে আসমানে উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। (১৪) হযরত জিব্রাইল ফিরিশতা এই তারিখে আল্লাহর রহমত নিয়ে হযরত আদম (আ:)-এর নিকট প্রথম উপস্থিত হয়েছিলেন। (১৫) এই দিনেই রাসূলুল্লাহ (স:)-এর প্রিয় দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসাইন (রা:) এবং তাঁর সঙ্গী সহচরগণ হিজরি ৬১ সালে কারবালা ময়দানে অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে শাহাদত বরণ করেছিলেন। (১৬) এই দিন আল্লাহপাক সর্বপ্রথম পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং আসমান হতে সর্বপ্রথম বৃষ্টি নাযিল করেছেন। আর এই দিনেই কোনো এক শুক্রবারে ইসরাফীল ফিরিশতার শিঙ্গার ফুঁৎকারে এই পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে।

হাদীস শরীফে আছে, মদীনায় হিজরত করার পর রাসূলুল্লাহ (সা:) দেখলেন যে, ইহুদীগণ আশুরার দিন রোজা পালন করছে। তিনি তাদেরকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা এই দিনে রোজা রাখছ কেন? ইহুদিগণ উত্তরে বলল, এই দিনে আল্লাহপাক হযরত মূসা (আ:) ও বনী ইসরাঈলদেরকে ফেরাউনের কবল হতে রক্ষা করেছিলেন। আর ফেরাউন সদলবলে বাহরে কুলজুমে ডুবে ধ্বংস হয়েছিল। এর কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য হযরত মূসা (আ:) এই দিন রোজা রেখেছিলেন। আমরা তাঁর স্মৃতি রক্ষার জন্য রোজা পালন করছি। ইহা শ্রবণ করে রাসূলুল্লাহ (সা:) বললেন: তোমাদের তুলনায় আমরা হযরত মূসা (আ:)-এর সাথে বেশি ঘনিষ্ঠ এবং তাঁর স্মৃতি রক্ষার ক্ষেত্রে আমাদের দাবি তোমাদের তুলনায় অনেক বেশি অগ্রগণ্য। সুতরাং তিনি এই দিন রোজা রাখলেন এবং অন্যদেরকেও রোজা রাখার নির্দেশ দিলেন। তিনি এই দিনের সাথে মিলিয়ে আরও একটি দিন রোজা রাখারও হুকুম প্রদান করলেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Md. Masud Khan ২৭ আগস্ট, ২০২০, ৯:৫৯ এএম says : 0
Allah Tumi Mohorromer Usilay Papi Manob Jatike Koronar Hat Theke Mukti Dao. Amin.
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন