খুলনা ও যশোরের দুঃখ বলা হয় ভবদহ সøুইস গেট। বছরের পর বছর কোটি কোটি টাকা ব্যয় করেও ভবদহ সমস্যার স্থায়ী সমাধান হয়নি। বর্ষা মৌসুমে পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় বিরাট এলাকায় পানিবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন পানিবন্দী ৪০ গ্রামে মানুষ। চলতি বর্ষা শুরুর আগেই দৈনিক ইনকিলাবসহ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার রিপোর্টে আশঙ্কা করেছিল এবারও ভবদহ আবার ডুবতে যাচ্ছে। ভবদহ পানি নিষ্কাশন কমিটিও সংবাদ সম্মেলনে একই শঙ্কার কথা তুলে ধরেছিলেন। সেই শঙ্কাই সত্য হলো। ডুবলো ভবদহ।
ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির উপদেষ্টা ইকবাল কবীর জাহিদ দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, আমরা বারবারই বলেছি ভবদহের ২১ ও ৯ ভেন্টের মাঝখান দিয়ে নদী সংযোগ ও বিল কপালিয়াসহ পর্যায়ক্রমে বিল খুকশিয়াসহ সব বিলে টিআরএম চালু এবং উজানে নদী সংযোগ বিশেষ করে ভৈরবের সাথে মুক্তেশ্বরীর সংযোগ স্থাপন করলে ভবদহের স্থায়ী সমাধান হবে। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্ণপাত করেনি। ভবদহ ডুবে গেল। পানি ঢুকেছে লোকালয়ে।
তার কথা, ভবদহ সমস্যা জিইয়ে রেখে স্বার্থবাদী মহল ও পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রকল্পের পর প্রকল্প গ্রহণ করে অর্থ লোপাটের কারখানায় পরিণত করার কারণেই এই পানিবদ্ধতা। বরাবরই সংশ্লিষ্টরা চরম দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিচ্ছে। এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষের ক্ষোভ, এভাবে পানিবন্দী হতে হচ্ছে আমাদের। কিন্তু স্থায়ী সমাধানের কোন ব্যবস্থা নেই।
সরেজমিনে দেখা যায়, কয়েকদিনের বৃষ্টিতে ভবদহ এলাকায় পানি থৈ থৈ করছে। অভয়নগর উপজেলার ডুমুরতলা, ডহরমশিহাটি, বেদভিটা, বারান্দী ও দিঘলিয়া, মণিরামপুরের সুজাতপুর, পোড়াডাঙ্গাসহ ৪০টি গ্রামে পানি ঢুকেছে। মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। ডুমুরতলা গ্রামের অসিত কুমার বলেন, পানিবন্দি হয়ে খুব কষ্টে আছি। ভবদহ সøুইসগেটের ২১টি কপাটের সব কটি এখন পানির নিচে। পানি বের হতে পারছে না।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী তাওহীদুল ইসলাম বললেন, আমডাঙ্গা ও ভবদহ গেট দিয়ে পানি নামানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ভবদহের প্রজেক্ট সম্পর্কে বলেন, ৮০৭ কোটি টাকার প্রজেক্ট ফাইলটি অনুমোদনের জন্য প্লানিং কমিশনে আটকে রয়েছে। তাছাড়া টিআরএম চালু ও টিআরএম বিরোধী বিনোধ প্রজেক্ট অনুমোদন থমকে আছে।
উল্লেখ্য, ভবদহ সøুইস গেট সংলগ্ন শ্রী, টেকা, হরিহর ও মুক্তেশ্বরী এই ৪টি নদী রয়েছে। সøুইস গেট দিয়ে বিল কেদারিয়া, বিল খুকশিয়া, বিল কপালিয়া, বিল বকর ও বিল আড়পাড়াসহ যশোর ও খুলনা এলাকার বড় ২৭টি বিলসহ ৫৪টি বিলের পানি বের হতে পারছে না। প্রতিটি বর্ষা মৌসুমে বিল তীরবর্তী আশপাশের শত শত গ্রামে পানিবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে ভয়াবহতায় রূপ নেয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন