শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

যশোরে তৃতীয় দিনের মতো ডিসি অফিসের সামনে ভবদহবাসী

শাহেদ রহমান, যশোর থেকে : | প্রকাশের সময় : ১২ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০২ এএম

ভবদহ ও তৎসংলগ্ন বিল এলাকার জলাবদ্ধতা দূর করাসহ ৬ দফা দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো যশোর কালেক্টরেট ভবনের (ডিসি অফিস) সামনে অবস্থান নিয়েছেন জেলার সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দারা।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টা থেকে সেখানে অবস্থান নেন তারা। লাগাতার অবস্থান কর্মসূচিতে আসা মণিরামপুরের কুশখালী গ্রামের ৭০ বছর বয়সী সুলপান গোলদার বলেন, ৯ জনের সংসার। দুই ছেলে পরের জমিতে কিষেন দিতো। এখন তারা বিদেশে (বাইরের জেলায়) গিয়ে দিনমজুরের কাজ করছে। ঘরে-বাইরে-রাস্তায় পানি। এই অবস্থা থেকে আমরা মুক্তি চাই। জীবন বাঁচাতে ডিসি অফিস চত্বরে শতশত মানুষ একই কথা বলেন কুলটিয়া ইউনিয়নের ডাঙ্গা মহিষদিয়া গ্রামের পঞ্চাশোর্ধ্ব রাশিদা বেগম। ঘরবাড়ি-রান্নাঘরে পানি থই থই করছে। আমাদের এলাকায় পানিতে ডুবে চার শিশু মারাও গেছে। এইরকম অবস্থায় মানুষ কীভাবে বেঁচে থাকতে পারে। তাই পানি সরানোর এই দাবিতে আমরা ডিসি অফিসে আসছি। ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির আহŸায়ক রণজিৎ বাওয়ালি বলেন, মাননীয় হাইকোর্টের রায় রয়েছে, আমাদের প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন- নদী বাঁচলে দেশ বাঁচবে। কিন্তু আমরা দেখছি, এই অঞ্চলের মানুষের প্রাণের দাবি জল নিষ্কাশনের সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি টিআরএম (জোয়ারাধার) প্রকল্প বাদ দিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড নদী হত্যার জন্যে সেচ প্রকল্প চালু করেছে। আমরা অবিলম্বে এই সেচ প্রকল্প বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছি।
তিনি বলেন, ২০১৭ সালে জাতীয় কর্মশালায় গৃহীত ৯৬ শতাংশ মানুষের দাবি ছিলো বলি কপালিয়া টিআরএম চালুর। কিন্তু সেই দাবি অগ্রাহ্য করে পাউবো (পানি উন্নয়ন বোর্ড) নদীকে হত্যা করতে সেচ প্রকল্প চালু করেছে।
আমরা বলেছি, এই সেচ প্রকল্প ভবদহ অঞ্চলের পানি নিষ্কাশনে কোনো কাজে আসবে না। একমাত্র কার্যকর পদ্ধতি হচ্ছে টিআরএম চালু। আমরা চাই আগামী মাঘী পূর্ণিমার আগেই বিল কপালিয়ায় টিআরএম চালু করা হোক, আমডাঙ্গা খাল সংস্কার, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক। এই অঞ্চলের মানুষের প্রাণের দাবি ৬ দফা নিয়ে আমরা লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি।
তিনি বলেন, আগামী ১ থেকে ২ দিনের মধ্যে আমাদের প্রাণের দাবি যদি মেনে নেয়া না হয়, তাহলে আমরা আরো কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো। অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানান, জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের নেতৃবৃন্দ। সংগঠনের সভাপতি সুকুমার দাস, সাধারণ সম্পাদক সানোয়ার আলম খানসহ নেতৃবৃন্দ ভবদহবাসীকে গণসংগীতের মাধ্যমে উজ্জীবিত করেন।
অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে অন্যদের মধ্যে ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির উপদেষ্টা ইকবাল কবির জাহিদ, গাজী আব্দুল হামিদ, চৈতন্য কুমার পাল, নাজিম উদ্দিন, অধ্যাপক অনিল বিশ্বাস, রাজু আহমেদ, উত্তম গাইন, আব্দুল আজিজ, প্রভাস ঘোষ, প্রশান্ত মন্ডল, ফারুক আহম্মেদ, প্রণয় মন্ডল প্রমুখ বক্তৃতা করেন।

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন