শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

ত্যাগ চাই মর্সিয়া ক্রন্দন চাহি না

এ.কে.এম ফজলুর রহমান মুনশী | প্রকাশের সময় : ৩০ আগস্ট, ২০২০, ১২:০০ এএম

আজ ১০ মুহাররম, যা আশুরা নামে খ্যাত। আশুরা মহান আল্লাহপাকের বহু কুদরতে কামেলার সাক্ষী হয়ে পৃথিবীর ইতিহাসে একটি অনবদ্য স্থান দখল করে আছে। শুধু তাই নয়, হিজরি ৬১ সালের ১০ মুহাররমে দাস্ত কারবালায় যে নির্মম ও নৃশংস হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে, আলে মুহাম্মদ (সা:) এর নিষ্পাপ সদস্যগণের তাজা রক্তে তপ্ত বালু কাকে বিরঞ্জিত করা হয়েছে, তাকে বিশ্ব বিবেক উত্তম কাজ বলে কোনো কালেই স্বীকার করেনি এবং করবেও না। এই দিকনির্দেশনাটি আমরা আল কোরআনে সুস্পষ্টভাবে খুঁজে পাই। এরশাদ হয়েছে : ‘যে সৎকর্ম করে সে তার নিজের জন্যই করে এবং যে মন্দ কর্ম করে তা তার উপরই বর্তায়। অতঃপর তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের দিকেই প্রত্যাবর্তিত হবে। (৪৫ নং সুরা জাসিয়া : ১৫)। এই আয়াতে কারিমায় দু’টি বিষয়কে প্রভাত সূর্যের মতো উদ্ভাসিত করা হয়েছে। যথা: (ক) সৎকর্মশীল ব্যক্তিরা তাদের সৎকর্মের জন্য চিরকাল স্মরণীয় ও বরণীয় হয়ে থাকেন। যেমনটি শুহাদায়ে কারবালার মাঝে প্রত্যক্ষ করা যায়। তারা সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্যই আল্লাহর রাস্তায় জীবন উৎসর্গ করেছেন। তাই, তাদের ত্যাগ ও সহিষ্ণুতার আদর্শ কিয়ামত পর্যন্ত পৃথিবীর মানুষকে আলোর পথের দিশা দিতে থাকবে। এর কোনো অন্যথা হবে না। (খ) আর যে বা যারা মন্দ কর্ম করে, তাদের সে ঘৃণা কর্মের প্রতিফল তাদেরকেই ভোগ করতে হয়। রাজ্যপাট, সহায়-শক্তি কোনো কিছুই তা প্রতিহত করতে পারে না। চিরধ্বংসের ভয়ঙ্কর থাবার নখর তাদেরকে টেনে-হেঁচড়ে কুপোকাত করে দেয়। এই পৃথিবীতে তাদের কোনো চিহৃই অবশিষ্ট থাকে না। যেমনটি আমরা দামেস্কের রাজা জালিম এজিদের ক্ষেত্রে দেখতে পাই। কারবালার পৈশাচিক হত্যাকান্ড সংঘটিত হওয়ার পর বেশি দিন সে বেঁচে থাকেনি। মরণকালে নিজের অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে মোয়াবিয়াকে নিজের উত্তরসূরী নির্বাচিত করে যায়। কিন্তু তার সে সাধ ফুলে ফলে সুশোভিত হতে পারেনি। তারই রঙ্গমঞ্চের সারথীদের ষড়যন্ত্রের ফলে তাদেরই হাতে অকালেই ঝরে যায় এজিদ পুত্রের জীবন। এভাবে এজিদের বংশ চিরতরে নির্বংশের রূপ পরিগ্রহ করে। মন্দ কর্মের অশোম পরিণতির এটি একটি জ্বলন্ত উদাহরণ বৈ কিছুই নয়। মহান রাব্বুল আলামীন ঈমানদার সৎকর্মশীলদের সুসংবাদ প্রদান করে আল কোরআনে এরশাদ করেছেন: এটা তাই, যার সুসংবাদ আল্লাহপাক তাঁর বান্দাদের প্রদান করেন, যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে। ‘বলুন, (হে প্রিয় হাবীব) আমি এর জন্য তোমাদের কাছে আত্মীয়তার সৌহার্দ ছাড়া অন্য কোনো প্রতিদান চাই না। যে পুণ্যময় কর্ম সম্পাদন করে (আল্লাহ পাক বলেন) আমি তার জন্য তাতে কল্যাণ ও নেকী বাড়িয়ে দেই। নিশ্চয় আল্লাহপাক অতি ক্ষমাশীল, বড়ই গুণ গ্রাহী। (৪২ নং সুরা শূরা : আয়াত ২৩)।

আল্লাহপাকের এই শুভ সংবাদের নূরানি শামিয়ানার নিচে আশ্রয় গ্রহণ করে বেদনাবিধুর চিত্তে তাঁর দরবারে আজ আমরা এই ফরিয়াদই করছি। ‘হে আল্লাহ শুহাদায়ে কারবালার আরওয়াহকে আপনি আপনার কুরব ও মানজেলাতের উচ্চ হতে উচ্চতর অধিষ্ঠানে স্থান দান করুন-আমীন’।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন