শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

৩ যুগেও কথা রাখেনি কেউ

উদ্বোধনের ১২ দিন পর ভেঙে পড়ে সেতু ভোগান্তিতে ১২ গ্রামের মানুষ

রুবাইয়া সুলতানা বাণী, ঠাকুরগাঁও থেকে | প্রকাশের সময় : ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:০২ এএম

ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলার রাউৎনগর এলাকায় ১২টি গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে কুলিক নদীর ওপর নির্মাণ করা হয় সেতু। সেতু উদ্বোধনের ১২ দিনের মাথায় ভেঙে পড়লেও দীর্ঘ ২৫ বছরেও পুন:নির্মাণ হয়নি। এ কারণে সেতু এলাকার মানুষের দুর্ভোগের অন্যতম কারণ হয়ে দাড়িয়েছে।
সেতুটি ভেঙে পড়ায় নদীর দুই পাড়ের রসুলপুর, বর্ম্মপুর, বসতপুর, চাপর, বিরাশী, বদ্দখন্ড, গোগর, রানীভবানীপুর, লেহেম্বা ও কোচল গ্রামসহ ১২টি গ্রামের মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার লেহেম্বা ও হোসেনগাঁও দুই ইউনিয়নের সীমান্ত ঘেঁষে বয়ে গেছে কুলিক নদী। এলাকাবাসীর তথ্য মতে ঐ দুই ইউনিয়নের সেতু বন্ধন হিসেবে ১৯৮৬-৮৭ সালে ঠাকুরগাঁও পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত¡াবধায়নে ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রায় ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি সেতু নির্মাণ করা হয়ে ছিল। এতে দুই ইউনিয়নের এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের আশা পুরণ হলেও উদ্বোধনের ১২ দিনের মাথায় ভেঙে পড়ে সেটি ১৯৮৭ সালের ভয়াবহ বন্যার তীব্র স্রোতে সেতুটির দু’পাশের দু’অংশ দুমড়ে মুচড়ে ভেঙে নিয়ে যায়। মধ্যখানে পড়ে থাকে অবশিষ্ট প্রায় ৩০-৪০ মিটার সেতুর অবশিষ্ট অংশ এবং বিছিন্ন হয়ে পড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা। তখন থেকেই জনবহুল ঐ দুই ইউনিয়নের মানুষ এ চরম দুর্ভোগের মোকাবেলা করতে করতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। এ নিয়ে ইতোমধ্যে অনেক পত্রপত্রিকায় সংবাদ প্রকাশও হয়েছে।
নদীতে সেতু না থাকায় এলাকার মানুষকে দীর্ঘ ১০ কিলোমিটার অতিরিক্ত পথ ঘুরে রাউৎনগর ও কাঠালডাঙ্গী বাজারে যাতায়াত করতে হয়। অথচ সেতুটি থাকলে আধা কিলোমিটারের মধ্যে বাজারে যাতায়াত করতে পারতো তারা। এ অবস্থায় কৃষি পণ্য হাট-বাজারে নিতে ট্রাক্টর ও ট্রলি পার করতে বিড়ম্বনায় পড়তে হয় স্থানীয় বাসিন্দাদের। নদী পাড় হতে অনেক সময় নদীতেই ট্রাক্টর হতে মালামাল পানিতে পড়ে যায়।
এলাকাবাসীর অভিযোগ নির্বাচনের সময় চেয়ারম্যান ও এমপি প্রার্থীরা এ নদীর সেতুটি সংস্কারের আশ্বাস দিয়ে ভোট নেয়ার পর সব কিছু ভুলে যায়। ফলে দীর্ঘ ২৫ বছরেও এ সেতুটি চলাচলের যোগ্য করা হয়নি। বিকল্প হিসাবে স্থানীয় কিছুসংখ্যক মানুষের প্রচেষ্টায় কাঠ ও বাঁশের সাঁকো তৈরি করে ঠেকা সাড়তে হচ্ছে তাদের এবং পারাপারে পথচারীদের দিতে হয় টাকা। কিন্তু বর্ষা মৌসুমে পানির নিচে সাঁকোটি তলিয়ে যাওয়ায় পথচারীদের দুর্ভোগে শেষ থাকেনা।
নৌকা থাকলেও রাতের বেলা রোগিকে হাসপাতালে নিতে স্বজনদের বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। একই কারণে চিকিৎসকরাও যেতে চায় না সেসব এলাকায়। হোসেনগাঁও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহবুব আলম জানান, এ সেতুটি নিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরে যোগাযোগ করছি। আশা করি হয়ে যাবে।
রাণীশংকৈর উপজেলা প্রকৌশলী তারেক বিন ইসলাম বলেন, এ সেতুটির বিষয়ে বিভাগীয় উন্নয়ন প্রকল্পে আছে। যেহেতু ১০০ মিটারেরও অধিক দৈর্ঘ্য তাই সেখানে টিম এসে মেপে নিয়ে গেছে। তবে কখন হবে আমি তা বলতে পারবো না।
এ ব্যপারে ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের সংসদ সদস্য জাহিদুর রহমান বলেন, আমি সংশ্লিষ্ট দফতরে যোগাযোগ করেছি। কিছুদিন আগে ঐ অধিদফতরের লোকজন এসে সেতুর জন্য মেপে নিয়ে গেছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন