মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ০৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১২ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

ফুটবলে পাগলাটে এক রাত

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৬ অক্টোবর, ২০২০, ১২:০৪ এএম

ধরুন, খুবই সুন্দর কিংবা খুবই বিস্ময়কর কোনো কিছুর মুখোমুখি হলেন। এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে করে না? ইচ্ছে করে না যতটা বেশি সময় পারা যায় উপভোগ করতে কিংবা কৌতূহল মেটাতে? চোখের পলক ফেললেই বুঝি হাওয়ায় মিলিয়ে যাবে। তাই মুহূর্তগুলোকে স্মৃতিতে জমা রাখার আপ্রাণ চেষ্টা থাকে। ক্রীড়া অনুরাগীদের জন্য গতপরশু রাতটি যেন ছিল তেমনই। বিশেষ করে ফুটবলপ্রেমীরা তুলেছেন তৃপ্তির ঢেঁকুর, তাদের চোখে ছিল অবিশ্বাসও!
সূচিগুলোর দিকে একবার নজর দিন। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে খেলতে নেমেছিল ইউরোপের ক্লাব পর্যায়ের পরাশক্তিরা- আর্সেনাল, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, লিভারপুল, ইন্টার মিলান, এসি মিলান, বায়ার্ন মিউনিখ, রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনা। এই তালিকা হতে পারত আরও লম্বা, যদি করোনাভাইরাসের আঘাত ও নিয়মের বেড়াজালে জুভেন্টাস ও নাপোলির মধ্যকার ম্যাচ ভেস্তে না যেত। এতে হয়তো কোনো কোনো ফুটবলপ্রেমী হাঁফ ছেড়েও বেঁচেছেন। ইউনাইটেড, বায়ার্ন ও লিভারপুলের ম্যাচগুলোতে চোখ কপালে তোলার মতো যেসব ঘটনা ঘটেছে (ফেলে দেওয়া চলবে না রিয়াল আর বার্সার ম্যাচ দুটিকেও), তারপর জুভ-নাপোলি লড়াইয়েও তেমন কিছু ঘটলে বাড়াবাড়ি হয়ে যেত বৈকি!
বলার অপেক্ষা রাখে না যে, রিমোটের উপর দিয়ে গেছে বড় ধরনের ঝড়। পলক ফেলা যেমন দায় ছিল, তেমনি একটি নির্দিষ্ট ম্যাচে চোখ আটকে রাখাও ছিল কঠিন। বারবার চ্যানেল পাল্টাতেও হিমশিম খেতে হয়েছে ভক্ত-সমর্থকদের।
অন্য কোনো উপায়ও তো ছিল না। লা লিগার শিরোপাধারী রিয়াল যখন সমতায় ফিরতে মরিয়া হয়ে ওঠা লেভান্তের আক্রমণ সামলাতে ব্যস্ত, তখন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে ইউনাইটেডকে ধরাশায়ী করার আভাস দিয়ে ম্যাচ শুরুর সাত মিনিটের মধ্যে ২-১ গোলে এগিয়ে গেছে টটেনহ্যাম হটস্পার। এরপর হার্টা বার্লিনের বিপক্ষে দুবার লিড নিয়েও পয়েন্ট হারানোর শঙ্কায় থাকা বায়ার্নকে শেষ মুহূর্তে জয় পাইয়ে দিতে একাই চার গোল করেন রবার্ত লেভানদোভস্কি।
সাবেক কোচ হোসে মরিনহোর বর্তমান দল টটেনহ্যামের কাছে ঘরের মাঠ ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে ইউনাইটেডের ৬-১ গোলের হার ও বুন্দেসলিগার বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বায়ার্নের ৪-৩ গোলের রুদ্ধশ্বাস জয়ের রেশ থাকতে থাকতেই মাঠে নেমে পড়ে ইয়ুর্গেন ক্লপের লিভারপুল। কিন্তু তারা কি ঘুণাক্ষরেও ভাবতে পেরেছিল তাদের সামনে কতটা বিব্রতকর পরিস্থিতি অপেক্ষা করছে?
ভিলার মাঠে প্রথমার্ধেই ৪-১ গোলে পিছিয়ে পড়ে অলরেডসরা। হতভম্ব হয়ে পড়লেও বিরতির সময়ে প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়নদের পারফরম্যান্স নিয়ে গবেষণার সুযোগ কারও মিলেছে কই! কারণ জুভেন্টাসের মাঠে তখনও হাজির হয়নি নাপোলি। অথচ পেরিয়ে গেছে খেলা শুরুর সময়।
৭-২ যখন স্কোরলাইন, তখন শেষ বাঁশি বাজায় লিভারপুলের দুর্দশার অবসান (!) হলেও নাপোলির আর দেখা মেলেনি। স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের অনুমতি না মেলায় নিজেদের অঞ্চলের বাইরে ভ্রমণের অনুমতি পায়নি তারা। কিন্তু সিরি আর নিয়ম অনুসারে, ৩-০ গোলের হার মেনে নিতে হয় তাদেরকে।
এসব নাটকীয়তার পর ঘরের মাঠ ন্যু ক্যাম্পে সেভিয়ার সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করেছে বার্সা। দুদলের সামনে অবশ্য পূর্ণ পয়েন্ট তুলে নেওয়ার বেশ কিছু সুযোগ এসেছিল। লা লিগার গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচ দিয়েই ইউরোপের ক্লাব ফুটবলের ঘটনাবহুল একটি রাতের সমাপ্তি হয়েছে।
কিন্তু আদৌ কি শেষ হয়েছে? পেছনে ফিরে তাকিয়েও বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে না? কিন্তু এটাই যে ফুটবল!

এক নজরে ফল
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
আর্সেনাল ২-১ শেফিল্ড ইউনাইটেড
ম্যানইউ ১-৬ টটেনহ্যাম
অ্যাস্টন ভিলা ৭-২ লিভারপুল
স্প্যানিশ লা লিগা
লেভান্তে ০-২ রিয়াল মাদ্রিদ
বার্সেলোনা ১-১ সেভিয়া
ইতালিয়ান সিরি আ
লাৎসিও ১-১ ইন্টার মিলান
এসি মিলান ৩-০ স্পেজিয়া
জুভেন্টাস-নাপোলি (মাঠে গড়ায়নি)
জার্মান বুন্দেসলিগা
বায়ার্ন মিউনিখ ৪-৩ হার্থা বার্লিন

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন