ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব প্রিন্সিপাল মাওলানা ইউনুছ আহমাদ ফ্রান্সে বিভিন্ন মসজিদ, মুসলিম এনজিও বন্ধ এবং মসজিদের ইমামকে বহিস্কারের সিদ্ধান্তে গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।
আজ রোববার এক বিবৃতিতে ইউনুছ আহমাদ বলেন, ফ্রান্সের রাষ্ট্র প্রধান ম্যাঁক্রো তার কৃতকর্মের জন্য মুসলিম উম্মাহর কাছে ক্ষমা না চেয়ে উল্টো মুসলিম উম্মাহর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ফ্রান্সে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় রাসূল সা.এর ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশের পর বিশ্বব্যাপী প্রতিবাদের ঝড় উঠে। এতে ক্ষীপ্ত হয়ে ম্যাঁক্রো পাকিস্তানের নাগরিক লুকমান হায়দার নামক এক ইমামকে ১৮ মাসের জেলের সাজা দেয়ার পাশাপাশি দেশ থেকেও বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত মুসলিম উম্মাহকে বৃদ্ধাঙ্গুল প্রদর্শণের শামিল। তিনি বলেন, ফ্রান্সের এধরণের সিদ্ধান্ত মুসলিম ইম্মাহর ধর্মীয় অনুভুতিতে চরম আঘাত। ফ্রান্স সরকারকে তাদের এধরণের অপরিণামদর্শি সিদ্ধান্ত থেকে ফিরে আসার আহবান জানান।
ফ্রান্স সরকার মুসলিম উম্মাহর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে একের পর এক মুসলিম চেতনাবিরোধী কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি বিশ্বমুসলিম উম্মাহকে ফ্রান্সের এধরণের মানবতাবিরোধী কর্মকান্ড রুখে দাড়ানোর আহবান জানান।
এদিকে, বায়তুল মোকাররমে মূর্তিবিরোধী মিছিলে পুলিশের হামলা ও ১৮ জনকে আটকের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ ও সেক্রেটারী মাওলানা এবিএম জাকারিয়া।
এক বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় বলেন, মূর্তি বিরোধী মাদরাসার ছাত্র-জনতার কর্মসূচিতে পুলিশী হামলা মেনে নেয়া যায় না। তারা অবিলম্বে গ্রেফতারকৃত ১৮জন মাদরাসা ছাত্র এবং ঈমানদার মুসল্লিদের মুক্তির দাবি জানান।
নেতৃদ্বয় বলেন, শাহবাগ ও টিচাগাংয়ে ওলামায়ে কেরামের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ, যুবলীগকে মাঠে নামিয়ে দিয়ে সরকার অত্যন্ত খারাপ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। জণগণ গর্জে উঠলে ছাত্র-যুবলীগ সরকারকে রক্ষা করতে পারবে না। ছাত্র-যুবলীগ সারাদেশে ধর্ষণের রাজত্ব কায়েম করেছে। আর ওলামাদের বিরুদ্ধে এই ধর্ষণলীগ নামিয়ে দিয়ে সরকার অত্যন্ত খারাপ নজির স্থাপন করেছে।
নেতৃদ্বয় বলেন, শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশের হামলা স্বভাবতই প্রশ্ন উঠে, তাহলে কি সরকার নাস্তিক মুরতাদ ও শয়তানী শক্তির পক্ষে অবস্থান নিচ্ছে? ওলামায়ে কেরামের মুর্তি ও ভাস্কর্যের বিষয়ে এতো খোলামেলা বিশ্লেণের পরেও কোন মুসলমান মূর্তি বা ভাস্কর্যের পক্ষে অবস্থান নিতে পারে না। সরকারকে মনে রাখতে হবে, বঙ্গবন্ধুর চামড়া দিয়ে যারা ঢুকঢুকি বাজাতে চেয়েছিল, আজ তারাই আপনার ডানে-বামে ঘাপটি মেরে বসে আছে, তারাই আপনাকে বিপদে ফেলবে। ওলামায়ে কেরাম কখনও এধরণের অন্যায় কাজ করবে না। ভাস্কর্যকে সামনে রেখে ওলামাদের বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থান সুখকর নয়। তারা আরো বলেন, অনেক বুদ্ধিজীবী মূর্তি বিরোধীদের বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা বিরোধী হিসেবে দাড় করানোর অপচেষ্টা করছেন। আপনাদের জানা উচিত, আমরা আপনাদের মতো কথিত ভন্ড দেশপ্রেমিক নই। দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও বঙ্গবন্ধু আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ইতোপূর্বে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা হাইকোর্টের সামনে থেকে থেমিসের মুর্তি অপসারণে যেমন আন্দোলন করেছে, এখন ধোলাইপাড়ে নতুন মুর্তি স্থাপনসহ সারাদেশে নির্মিত মানবমূর্তির বিরোধিতা করছে। এখানে কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তি টার্গেট নয়, বরং ইসলামে নিষিদ্ধ সকল প্রাণী তথা মানবমুর্তির অপসারণ আমাদের ঈমানী দাবী। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম দেশ বাংলাদেশ মূর্তির দেশ হিসেবে বিশ্বে দূর্নাম কামাবে, সেটা মুসলমানরা মেনে নিতে পারে না।-প্রেস বিজ্ঞপ্তি
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন