ফাহিম ফিরোজ
মুজিবের নৌকা
লোকগুলো ঠিকঠাক কাছা
না মেরেই নৌকা ছুঁতে গেলো! কাদা আর
খানাখন্দে পড়লো সবাই। একি কিম্ভুত
কিমাকার! সারা গায়...। দেখে আর হাসে
জানলা গলিয়ে
খুকির মায়, রবুর খালায়।
দৃশ্যপটে, আজ বুড়া
ব্যাঙও লাফিয়ে ওঠে!
মিয়াভাই, দেখো, শেখো...
জল কেটে কেমন যায়রে
বাঁকানো সুন্দর!
শব্দের তুফান হয়ে সামনে এগোয়।
পলিমাটির রং; সেগুনে নির্মাণ।
জয়বাংলার গতি নিয়ে
বৈঠাধররা খুউব শক্তিশালী!
নইমুদ্দিন কওছে দেখি,
কে থামায় দমায়, এই দুর্দমনীয়
যান, বাংলাদেশে? জ্বালানি তাহার
আঠারো কোটি আগুনে রিয়েক্টর...
পেছনে ও পাশে।
চলে নাও দুইলা দুইলা! বাহে...
জাহানারা আরজু
কেনরে পালাস চর্যার হরিণী আমার
কেনরে তুই আবার ছুটে পালাস চর্যার হরিণী আমার?
যাক না ওরা সব যে যেখানে যাবারÑ তুই থাক বুকজুড়ে
এখানেই আমার। জানি তোকে দিন-রাত ধাওয়া করে শিকারীর দল, বুকে তোর লাগে শর, ঝরে অবিরল শোণিতের ধারা। তোর ওই সজল কাজল দিঠির চেয়ে ওরা চায় রক্ত মাংস সবটাই! কেন যে বিধাতা রূপের অনল আড়ালে রেখেছেন তোকে বৈরী করে তোর ওই সুন্দর দেহটাকেÑ তোর আপন তপ্ত মাংসের রসনার স্বাদে তোরে ঘিরে লোলুপ জিহŸায় ধেয়ে আসে হিংস্র বন্য-বরাহ স্বাপদ, আসে ব্যাধ মনুষ্যকুলের, স্থির লক্ষ্যে হানে শর, থর থর কম্পনে ত্রস্তাভীতূ তুই পলাতকাÑ
কোথায় পালাবি বারবার? সোনার হরিণী তুই, বুকের চত্বর
জুড়ে থাক না আমার। কোথায় রাখব তোকে আড়ালে আবডালে? বিজন বন নেই, অরণ্যানী সব গেছে জ্বলে নগরের
লোভের লালসায়, শাণিত কুঠারের ঘায়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে ওঠে
তোর বাসভ‚মি-দিগন্ত জোড়া শুধু ধু-ধু বালু খরতাপ আজ,
পুষ্প-পত্রহীন নিষ্ফল বনরাজিÑ কোথায় তোকে রাখি ঢেকে সোনার হরিণী আমার? তোর ওই চোখ দু’টোয় শাওনের বাদল ঢল টলমল; যেন উপচানো ব্যথার পেয়ালাÑ দেখনা একবার সে বাদল হয় নাকি আগুনের জ্বালাÑ দেখনা সাহস করে, কেনরে পালাস তুই চোখের আড়ালে বারবার! কেনরে পালাস অধরা সোনার হরিণী আমার? যতটুকু পারি, আমার এ বুক দিয়ে তোকে আমি আগলাবোই প্রতিবার!
মিজানুর রহমান তোতা
তোমাকেই খুঁজছি
আমাকে ইশারায় ডাকছো।
বলছো কাছে এসো।
প্রতিক্ষণে যাকে ম্বপ্ন দেখি।
বাঁকা চোখে মধুর চাহনি।
তুমি যেন সেই তুমি।
আমার স্বপ্নের ছবি।
মিষ্টি হেসে ভেলকিখেলা দেখাও।
কাছে গেলে দুরে সরিয়ে দাও।
বুঝি না মতিগতি।
কখনো বলো, অপূর্ণ সাধকে পূর্ণতা দিতে আদর করে দুষ্টু।
মনে জাগে ফুর্তি।
মনের অজান্তে বিচিত্র সব আচার আচরণ।
মনে হয় তৃঞ্চাকাতর।
সুখানুভূতির তৃপ্ত বাসনা নিরন্তর তাড়িয়ে বেড়ায়।
স্বান্তনা দাও।
আসছি বলে চোখের পলকে মিলিয়ে যাও।
হতাশ ভঙ্গিতে নিখোঁজ হাসি ব্যাথা দেয়।
পড়ন্ত বিকেলে রঙের আকাশে তোমাকে খুঁজছি।
তীব্র নিষ্ঠুরতার ছাপ দেখছি।
বুকের ভেতরটা ব্যাথায় কাতর।
এফোঁড় ওফোঁড় স্বপ্ন আকাঙ্খা।
হৃদয়জুড়ে কল্পনার ছায়া ঘোরে।
দু’চোখ তোমাকেই খুঁজে ফেরে।
হৃদয়ে অনন্য প্রশান্তি স্বর্গীয় সুখ নিয়ে বেঁচে আছি।
আরাফাত বিন আবু তাহের
রসায়ন
মেয়েটা থালা হাতে সুপুরি গুনতে গুনতে বলে যায়- বলতে গেলে কথা তার মাথা চক্কর খায়, চুল দৌড়ে বাতাসে পড়ে আকাশে হাসে সে- অবিরল হেসেই যায়
গলায় জমে ঢোক গেলা লালা
আহা কত ভালো তবু তার নীলকণ্ঠস্বর।
গলার তলে জমে ঘাম গোল গোল মিষ্টান্ন ভাসান; ধ‚মায়িত চোখে সে বলেই যায়-
‘কত কত সুপারি আগে পাইতাম গাছ তলায় সেই সব ভোরে, কত দিন না দেইখ্যা কাটছে পলাইন্না পিরিতি›।
এই শুনে মরণ- গাছের তলায় চোখের পাতা আর্দ্র হয়ে ছেলেটার ঝাপসা লেগে যায় পর লগ্নে লোভার্র্ত আঙুল একটু উজিয়ে দু’ফোঁটা ঘাম মুছতে গেলেই
ময়‚রাক্ষী মেয়েটি শান্ত চোখে বাগের কোণায় চায় ত্বরিত জিভ কেটে দেখায় ভাবির ভয়- ‘খুব সাবধান গো, ভাবি দেখলে মাইরাই ফালাইবো-
মনে মনে ভাবি কত ভালো তোমায় বাসে গো, খালাতো ভাই’।
তিতাশ মাহমুদ
কাছের মানুষ
আমার পল্লবীতে বুকে তোমার প্রেম
কচি ঘাস হয়ে জেগে উঠে
আমার সুন্দর! তুমি কখন কি ঘাশফুল ছিলে? আমার হৃদয়ে শিশিরের শব্দ
তুমি নিরবে নিভৃতে হেঁটে যাও ভেজাপায়
তোমার ধবধবে সাদা গোড়ালি
আমার হৃদয় ভেদ করে আর নিত্য করে আমার বুকের পরে আমি সুখ সামলে যখন নিজেকে আর স্থির রাখতে পারিনা
আঁখিদ্বয় বুঁজো আসে আর প্রভুকে জানাই কৃতজ্ঞতা এবং মনে হয় পৃথিবীর সবচেয়ে সুখীতম পুরুষ আমি!
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন