বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহান স্বাধীনতা দিবস

পদাবলী

| প্রকাশের সময় : ২৬ মার্চ, ২০২১, ৯:১৯ পিএম

গ্রামীন ক্যান্সার

ফাহিম ফিরোজ

বেড়া কাটিস, ফাটিস
রাতের ভাঁজান্তর, সখান্তর।
আর কামিজ দেখলে, নিচের জংগলে আংগুল ডলিস
লগে জিভকে গাইডেড মিসাইল, নিখুঁত শিকার!

২. চার দোকানে গায়েবি নভেল বানায়। মিয়াভাই
শোনো, এইযে বিয়ান ও রাইতে বেঞ্চে বসে
মন কয়, নিশ্চয়ই কস্টেপ মারছে পাছায়!

৩. মুখে তুলোবন। সবক্ষণ। কিন্ত বোধহীন। পাতা
চিবিয়ে লালরস ফিক্ করে মারে সবার গায়ে
অথচ হার্ট ফাউন্ডেশন ডাকেঃ
আয় শফি, ফজল সূর্য যায়, যায়!

৪. এদিকে পোলাপান, সিগারেট কিনতে এসে
লজ্জায় কাছিমের গলা...
বাপের বন্ধু বলে কথা! নইলে শহর তলীর,
বিখাউজ সালমার ভাড়া করে লুংগি খোলাতাম!

হোসেন আলীর সেই জাউরা নাতি,
সব ল্যাংটা পাগলী যারে ভয় পায়, একদিন সে কয়েই ফেলেঃ
ভালোই যা নইলে টুপি পরামু!

 


প্রেম-অপ্রেমের কবিতা
আলম মাহবুব

হৃদয়ের নয় বোধের জমিনে মানুষ একাকী
প্রেম-অপ্রেমের কবিতা,
যদি কেউ চায় ডোডো পাখি বিকেলের মেঘে,
তাহাদের দিশা ভৌতিক মুখের মতো

পৃথিবীতে বিভাসিত হয় বিবরণ ছাড়াই।
বোধের জমিনে পাখি আর ফুল
জ্যোৎস্নায় মিশে মাঠের মৃত্তিকায়,
ছায়ার ভিতরে থাকে না সে মাথা গুঁজে।

সন্ধ্যার বিনুনি ঘিরে
নদীটির বিহারে সৌন্দর্য আছে ঠিকই নিঃশব্দ আশ্বাদে,
জীবনের রসায়নে তবু স্থবির যৌবনে
নিশ্ছিদ্র কামনায় চাঁদের বঙ্কিম ঠোঁট
গনিতজ্ঞ খেলে যায় কী স্বাভাবিক মোহে।

বোধের জমিনে রক্ত নয়, মাংস নয়
ছায়ার ভিতরে হলুদ পাতায় কামনার রক্তস্রোত,
আর সব অন্ধকার মহাপৃথিবীতে জাগতিক শব্দ করে।

 

 

 

বাঁচতে চাই বহুদিন
মিজানুর রহমান তোতা

বহুদিন বাঁচতে চাই
বাঁচবো, স্বপ্ন তৈরী করবো
শুধু নিজের জীবন নয়
গড়তে হবে স্বপ্নের মানবিক সমাজ।

চাওয়া পাওয়া জীবন ঘুমের দেশে অন্ধকারে বন্দি
কিন্তু পারদ লাগামছাড়া
তৃপ্তি-অতৃপ্তির প্রতিযোগিতায় বাসনা স্বাভাবিক ছন্দে
আকাশচুম্বী বিত্ত-বৈভব সব হয়ে দাঁড়িয়েছে

অথচ সবই ক্ষণিক।
স্বপ্নের মানবিক সমাজ গড়তে সাধ্যমতো চেষ্টা
ইতিহাস হয়--
হয় অমর, দৃষ্টান্ত হয়।

 

 

সাদা কাগজ
রেশম লতা

আমি কিছু সময় ধার কইরেছি
ছায়া থেইকে কবিতা থেইকে আর কিছু জল স্মৃতিরা মাগনা দিছে হাঞ্জাবেলায়;
বুকে ঘাস, সবুজ সবুজ মাথা
ছাঁটাই দরকার বড্ড বেড়ে উইঠেছে

শূণ্য একটা ঢেউ, শূণ্য একটা তীর এবং
শূণ্য একটা জাহাজ!
হা-হা-কার নাচনে হাততালি চাপড়ে সুর তুলে
গড়ায় জল অদৃশ্যের অটকশব্দে।

তোমার প্রদীপ ললাট আজ তেল বিহীন
সলতে ঝিমোয়, জীর্ণে আবিষ্ট আষাঢ় দুপুর চিবুকে পইড়েছে দাগ, পরশে পরশে ভেজাল
হাতে নেশা, পেটে নেশা, শরীরেও নেশার দোল
জামানার বেসোহাগী ঠোঁটে ধূম্রাপনী;

দু-আঙ্গুলে টিপে মারো সাদা কাগজ
তিমিত হৃদয় গিইলে খায় শুকনো পাতা
অভিশাপ... অভিশাপ... অভিশাপ...!

 

 

মাতালের সুরতহাল
জামালউদ্দিন বারী

সরাইখানার বাতি নিভে গেলে
বেসামাল টলতে টলতে
বাড়ি ফেরে লোকটা
পথে যেতে যেতে অনবরত কথার ফোয়ারা

খিস্তির তুবড়ি ফোটানো কখনো সন্তের মত স্থবির
তার মুখে ফোটে আশ্চর্য অভিভাষন
ঘৃনায় মুখ ফিরিয়ে নেয়া নিপাট ভদ্দরলোকেদের সাথে
দিনে দিনে দূরত্ব বেড়ে যায় তার

মন্দিরের পুরোহিত বাবু চার্চের ফাদার
তাবলিগ-খানকার মুরুব্বীরা মুখ ফিরিয়ে নেয়ার পর
কোনো এক জোছনারাতের শেষে
রেললাইনের ধারে জটলা বেড়ে ওঠে

হাড়-মাংশে ছিন্নভিন্ন দেহের কার্নিশে
ভোরের প্রথম আলোয়-বাতাসে
ছড়িয়ে যায় লোবানের মত অ্যালকোহলের ঘ্রান,
মুখে রুমাল চেপে ত্রস্তপায়ে গন্তব্যে

পা বাড়ায় কর্মব্যস্ত মানুষ। ছিন্নভিন্ন বুকের গহীনে থাকা
একটি অনাঘ্রাত স্বপ্নের গল্প জানলো না কেউ কোনোদিন
পুলিশের সুরতহালে শুধুই একটি অপমৃত্যুর ফরমায়েশি স্কেচ
সংবাদপত্রে রিপোর্ট বেরোয় ট্রেনে কাটাপড়া লোকটা মাতাল ছিল।

 

 

অন্ধকারের গল্প
শাহীন রেজা
কোটরজোড়া খুলে তোমাকে দিলাম
চোখ দু’টো এখন কে নেবে, কে?
দৃষ্টিহীন বলেই জ্ঞানহীন মানুষগুলো কান্ড হারায়-
আমি বর্ণ হারিয়ে গন্ধহীন নদীর করতলে আঁকছি উর্মি-লিপি,

আহা ভাটায় ভেসে আসা মাগুর কম জলে কেমন তড়পায়-
আমি তোমার আলোয় ডানামেলা সী-গাল হতে চাই,
আমার ঈশ্বর জানে; অন্ধ আর বোকা মানুষগুলো
কত সহজে ইঁদুর হয়ে যায়-
চলো আমরা ধানক্ষেতের গর্তে লুকাই।

 

 

মন খারাপের এপার ওপার
নিলুফা জামান

অতঃপর এক হাজারটা দিন পেরিয়েছি এই পৃথিবীর পরে...
এক হাজার যুগ অথবা এক হাজার শতক।
আর তুমিও জন্মেছ পুণঃ পুণঃ মৃত্যুর পর --
শুধু আর একটি বার তোমার মুখ দেখবো বলে

প্রতি জীবনেই অনঢ় দাঁড়িয়ে থাকি এক র্জীণ জীবন নিয়ে --
তবুও তুমি আসনি...
সেই কবে ছেড়ে গেছে চলন্তিকা এক্সপ্রেস
ইন্দুপুর জংশন আজ পরিত্ত্যক্ত প্রায় --

কচুরি পানায় ছেয়ে গেছে প্রানের যমুনা
কালপুরুষ, রোহিনী আর এড্রোমিডিয়া পেরিয়েছে কতটা পথ... অথচ আমি!
এখনও ঠায় দাঁড়িয়ে আছি...
সেই একই প্লাটফর্মে অপেক্ষায়।

 

ষোড়শী বালিকা
জুবায়ের দুখু
ষোড়শী এক বালিকা
মুখে— চাঁদের জ্যোৎস্না লেপটে,
হাসে যেনো, দিগন্ত থেকে খসে পড়ে তারা।
সেই ষোড়শী বালিকা

সোনালী আঁশের মতো, লম্বা কেশ ছড়িয়ে
বসন্তের মতো, রূপ রাঙিয়ে
হেঁটে যায় যেনো, চরণ ফেলে হৃদয়ে।
বুক ফাঁটে অথচ মুখ ফোটে না।

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন