বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহান স্বাধীনতা দিবস

স্বাধীনতাহীনতায় কেউ বাঁচতে চায় না

মুনশী আবদুল মাননান | প্রকাশের সময় : ২৬ মার্চ, ২০২১, ৯:১৯ পিএম

বাংলাদেশে বসবাসকারী জনগোষ্ঠি সুদীর্ঘ পথপরিক্রমায় স্বতন্ত্র জাতি হিসাবে গড়ে উঠেছে। সেই জাতি দু’ দু’বার স্বাধীনতা অর্জন করেছে। ১৭৫৭ সালে সাত সমুদ্র তের নদীর ওপার থেকে আসা ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি যখন স্বাধীনতা ছিনিয়ে নিয়ে ‘কোম্পানিরাজ’ প্রতিষ্ঠা করে, ইতিহাস সাক্ষী, স্বাধীনতা হরণের সেই কুখ্যাত দিনের পরের দিন থেকেই এদেশের মানুষ স্বাধীনতা পুরুদ্ধারের লড়াই-সংগ্রাম শুরু করে। ফকির বিপ্লবীরা কয়েক বছরের মাথায় ঢাকা ও রংপুরসহ বিভিন্ন স্থানে কোম্পানির বিরুদ্ধে সশস্ত্র লড়াই করে সাফল্য অর্জন করে। ফকির বিপ্লবীরা প্রায় ৮০ বছর এই সশস্ত্র লড়াই চালিয়ে যায়। দুর্ভাগ্যের বিষয়, তাদের লড়াই-সংগ্রাম সাফল্যের মুখ দেখেনি। একই সময়ে নানা জায়গায় ‘কৃষক বিদ্রোহ’, ‘নীল বিদ্রোহ’ সংঘটিত হয়। এসব বিদ্রোহও স্বাধীনতা সংগ্রামেরই অংশ ছিল। হাজী শরীয়তউল্লাহর ফারায়েজি আন্দোলন ও তিতুমীরের জিহাদ আন্দোলন প্রথমে সংস্কার আন্দোলন থাকলেও পরবর্তীতে এ দুটি আন্দোলন স্বাধীনতা সংগ্রামে রূপান্তরিত হয়। আন্দোলন দুটির কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা ও সরকার গঠন পর্যন্ত করা হয়। বলা বাহুল্য, এ প্রয়াসও শেষ পর্যন্ত ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। এরপর আসে সিপাহী বিপ্লবের কথা। গোটা ভারতে সংঘটিত এ বিপ্লবও ব্যর্থ হয়ে যায়। সশস্ত্র লড়াইয়ের মাধ্যমে কোম্পানিশাসনের অবসান ঘটিয়ে স্বাধীনতা অর্জনের ধারার এখানেই সমাপ্তি। এর পরের ইতিহাস নিয়মতান্ত্রিক পথে বা উপায়ে স্বাধীনতা অর্জনের ইতিহাস। সিপাহী বিপ্লব ব্যর্থ হওয়ার পটভূমিতে কোম্পানিশাসনের অবসান ঘটে এবং পুরো ভারত সরাসরি ব্রিটিশ শাসনের অধীনে চলে যায়। নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতির চর্চা শুরু হয় এর পর থেকে। এক পর্যায়ে ১৯৪৭ সালের মধ্য আগস্টে ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্রের অভ্যুদয় হয়। আজকের বাংলাদেশ পাকিস্তানের অংশ হিসাবে স্বাধীনতা লাভ করে। ঐতিহাসিকরা একমত, মুসলমানদের স্বতন্ত্র আবাসভূমি হিসাবে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠায় সবচেয়ে বেশি অবদান ও ভূমিকা ছিল এই বাংলাদেশের মানুষেরই।

তৎকালীন ভারতবর্ষের মুসলমানদের অবিসংবাদি নেতা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ১৯৪৬ সালের কোনো এক সময়ে কোলকাতায় যুবকদের উদ্দেশ্যে এক ভাষণে সেকালের বাংলার সার্বিক অবস্থা, তার সরেজমিন অভিজ্ঞতার আলোকে তুলে ধরে যা বলেছিলেন তার সারসংক্ষেপে করলে দাঁড়ায়: এখানকার সংখ্যাগরিষ্ট মুসলমানেরা হিন্দু জমিদার ও মহাজনদের সর্বমুখী নিপীড়ন, নির্যাতন ও শোষণ-বঞ্চনায় এতটাই বিপন্ন ও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে যে, স্বাধীনতা ভারতের অন্য কোনো এলাকার জন্য না হলেও এই এলাকার জন্য প্রয়োজন। শোষিত, বঞ্চিত ও পশ্চাদপদ এই জনগোষ্ঠীর অস্তিত্ব নিরাপদ ও উন্নয়ন-অগ্রগতি তখনই হবে যখন রাজনৈতিক ক্ষমতা তাদের হাতে আসবে। অত্যন্ত বেদনাদায়ক হলেও বলতে হচ্ছে, পূর্ববাংলা পাকিস্তানের অংশ হিসাবে স্বাধীনতা লাভ করলেও পাকিস্তানের শাসক শ্রেণি এর জনগণের রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতায়নের প্রতি কিছুমাত্র মনোযোগ দেয়নি। উল্টো তাদের রাজনৈতিক অধিকার ও ক্ষমতা হরণের জন্য যা কিছু করা দরকার তার সবকিছুই করেছে। এই সঙ্গে তাদের ভাষার অধিকার, স্বাতন্ত্র্যের অধিকার কেড়ে নিতে চেয়েছে। পূর্বাবাংলাকে শোষণের অবাধ ক্ষেত্র ও তার জনগণকে গোলাম বানাতে চেয়েছে। ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো জনগণের মধ্যে এ উপলব্ধি জাগ্রত হয় যে, ভাষা ও স্বতন্ত্র সংস্কৃতির অধিকার স্বীকার করতে যারা রাজি নয়, তাদের শাসনে রাজনৈতিক অধিকার ও ক্ষমতা অর্জন সম্ভব নয়, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও প্রতিষ্ঠা সুদূরপরাহত। এই উপলব্ধি থেকেই শুরু হয় নতুন করে আন্দোলন-সংগ্রাম। রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠা, গণতন্ত্র কায়েম ও শোষণ-বঞ্চনার অবসানের লক্ষ্যে পরিচালিত আন্দোলন-সংগ্রাম শেষ পর্যন্ত স্বায়ত্তশাসন ও বৈষম্যবিলোপের চূড়ান্ত লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায়। এই আন্দোলন-সংগ্রামের প্রেক্ষাপটে অনুষ্ঠিত হয় ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক পরিষদে নিরংকুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা এবং কেন্দ্রীয় পরিষদে সরকার গঠনের মতো গরিষ্ঠতা নিয়ে বিজয় লাভ করে। নির্বাচনের ফলাফলে প্রদেশ ও কেন্দ্র আওয়ামী লীগেরই সরকার গঠনের কথা। কিন্তু শাসকশ্রেণি ক্ষমতা ছাড়তে মোটেই রাজি ছিলনা। কারণ, এখানকার মানুষ রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতায়িত হোক, তাদের হিস্যা কড়ায়-গন্ডায় বুঝে নিক, এটা তারা চাইতো না। দেখা দেয় সংসদ অধিবেশন আহবান ও ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে টালবাহানা। এরই এক পর্যায়ে’ ৭১ সালের ২৫ মার্চ সেনাবাহিনী নিরস্ত্র জনগণের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে নির্বিচার গণহত্যা শুরু করে। এরপর স্বাধীনতা ঘোষণা ও যুদ্ধ। এছাড়া আর কোনো পথ খোলা ছিল না। নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে। এখানে উল্লেখ করা দরকার, স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রতিবেশী ভারত আমাদের সর্বাত্মক সাহায্য ও সহযোগিতা করে। যুদ্ধের সময় প্রায় এক কোটি মানুষকে আশ্রয় দান করে। এই সাহায্য ও সহযোগিতার ফলে স্বাধীনতা অর্জন তরান্বিত হয়। এ জন্য এদেশের মানুষ ভারতের প্রতি অশেষ কতৃজ্ঞ। যুদ্ধে ৩০ লাখ মানুষ নিহত হয়। আহত হয় অসংখ্য মানুষ। কয়েক লাখ নারী সম্ভ্রম হারায়। সম্পদ-সম্পত্তির অপরনীয় ক্ষতি সাধিত হয়। স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ এদেশের মানুষের দীর্ঘ সংগ্রাম-সাধনার ফল, অপরিসীম ত্যাগের ফল। কারো দান নয়। যদিও ইদানিং ভারতের এক শ্রেণির নেতা বলছেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা নাকি তাদের দান। বিস্ময়কর ব্যাপার, এই মিথ্যাচারের প্রতিবাদ বাংলাদেশ থেকে কেউ করছে না, এমন কি স্বাধীনতার পক্ষ শক্তি বলে পরিচয়ধারীরাও জনগণকে রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতায়িত করা যাতে তারা স্বশাসনের অধিকার লাভ করতে পারে, এমন একটি রাজনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা যাতে জনগণ তাদের রায়ের মাধ্যমে শাসক নির্বাচন, সরকার গঠন বা পরিবর্তন করতে পারে, স্বাধীনতার এটাই ছিল মূল লক্ষ্য। মূল লক্ষ্য বলছি এ কারণে যে, এই লক্ষ্য অর্জিত হলেই কেবল অন্যান্য লক্ষ্য অর্জিত হতে পারে। অর্থনৈতিক স্বাবলম্বিতা, ন্যায়বিচার, সুশাসন, বৈষম্যহীন সমাজব্যবস্থা, শোষণ-বঞ্চনার অবসান ইত্যাদি তখনই সম্ভবপর হতে পারে যখন রাজনৈতিক ক্ষমতা জনগণের হাতে থাকে এবং তারা তাদের পছন্দের সরকার গঠনে নিরংকুশ ভূমিকা রাখতে পারে। গণতন্ত্রই সেই রাজনৈতিক ব্যবস্থা যাতে জনগণ রাজনৈতিক ক্ষমতার অধিকার লাভ করতে পারে, পছন্দের সরকার গঠনে নিয়মক ভূমিকা পালন করতে পারে। গণতন্ত্র জবাবদিহিতামূলক শাসনের নিশ্চয়তা দেয়। প্রশ্ন উঠতে পারে, স্বাধীনতার এত বছরেও কি স্বাধীনতার মূল লক্ষ্যসহ অন্যান্য লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে? জনগণকে রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতায়িত করা, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও অর্থনৈতিক বিকাশ-কোনোটাই কি হয়েছে? স্বাধীনতা যুদ্ধের শুরুতে যে তিনটি লক্ষ্য, যথা: সামাজিক ন্যায়বিচার, মানবিক মর্যাদা ও সাম্য নির্ধারণ করা হয়েছিল, তাদের বাস্তবায়ন কি ঘটেছে? বিদ্যমান বাস্তবতা তো এই যে, জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতা আর জনগণের কাছে নেই। তা হরণ করা হয়েছে। তাদের ভোটাধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। সরকার গঠন ও পরিবর্তনের এখতিয়ারও ছিনতাই করা হয়েছে। গণতন্ত্র এখন সোনার হরিণ। সামাজিক ন্যায়বিচার, মানবিক মর্যাদা ও সাম্য উধাও। জনগণ এক অমানবিক শাসনের করলে পতিত, যেখানে ন্যায়বিচার ও আইনের শাসনের আকাল চলছে। অনিরাপত্তা, গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড ইত্যাদি জীবনের অনিবার্য অনুসঙ্গ। সরকারের প্রচারণায় দেশে উন্নয়নের জোয়ার বয়ে গেলেও বাস্তবে মানুষের মধ্যে বৈষম্য ও ব্যবধান ক্রমবর্ধমান। শোষণ-বঞ্চনার কোনো শেষ নেই। এপ্রেক্ষিতে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে পারে, স্বাধীনতার স্বপ্ন, প্রত্যাশা ও লক্ষ্যসমূহ কি এভাবে অধরাই থেকে যাবে? এজন্য আমাদের কি আরো অপেক্ষা করতে হবে? নামতে হবে কি আন্দোলন সংগ্রামে? এসব প্রশ্নের জবাব একমাত্র ভবিষ্যেতই দিতে পারে।

এবার অন্য একটি প্রসঙ্গে আসা যাক। আমরা অনেক দিন ধরেই জাতিবিভক্তির একটি তৎপরতা লক্ষ্য করছি। স্বাধীনতার পক্ষ ও বিপক্ষ নাম দিয়ে এই বিভক্তির তৎপরতা চালানো হচ্ছে। জাতীয় ঐক্যই স্বাধীনতার প্রধান রক্ষাকবচ। যখন জাতিকে স্বাধীনতার পক্ষ ও বিপক্ষ বলে বিভাজন করা হয় এখন সেই রক্ষাকবচটি দুর্বল হয়ে পড়ে। এটা জাতির জন্য, স্বাধীনতার জন্য একটি অশনি সংকতে। বলা হয়, স্বাধীনতা অর্জন কঠিন: কিন্তু স্বাধীনতা রক্ষা করা তার চেয়ে মোটেই কম কঠিন নয়। আমরা এসব কথা জানি না, এমন নয়। তারপরও জাতিবিভক্তির তৎপরতা কীভাবে চলতে পারে, সেটাই জিজ্ঞাস্য। আমরা অনেকেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ফেরি করছি। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আসলে কি তা উপলব্ধির চেষ্টা কি করছি? জাতি বিভক্তি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নয়, ইস্পাতদৃঢ় জাতীয় ঐক্যই মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম চেতনা। মুক্তিযুদ্ধে বিজয় ও স্বাধীনতা অর্জন প্রশ্নতীত জাতীয় ঐক্য ও ঐক্যবদ্ধ অংশগ্রহণের মাধ্যমেই সম্ভবপর হয়েছিল। জাতিবিভক্তির সর্বনাশা তৎপরতা অত:পর বন্ধ হওয়া উচিৎ। স্বাধীনতা সুরক্ষায় জাতীয় ঐক্যের বিকল্প নেই।

স্বাধীনতার স্বপ্ন, লক্ষ্য ও অঙ্গীকারের বাস্তবায়ন ছাড়া জাতির অগ্রগতি ও প্রতিষ্ঠা পূর্ণাঙ্গ রূপ পেতে পারে না। এজন্য জাতীয় ঐক্য-সংহতি যেমন অপরিহার্য তেমনি ঐক্যবদ্ধ উদ্যোগ ও প্রয়াসও জরুরি। সবচেয়ে বড়কথা, জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতা, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা এবং জবাবদিহিতামূলক শাসন নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন। আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, এখন রাজনৈতিক ক্ষমতা জনগণের কাছে নেই, গণতন্ত্রের চর্চাও দৃশ্যপটে নেই। জবাবদিহিতামূলক শাসনের স্থলে কর্তৃত্ববাদী শাসন চলছে। এ অবস্থা উত্তরণের জন্য এমন উদ্যোগ ও কার্যব্যবস্থা এখনই নিতে হবে যাতে জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে ফিরে যায়, গণতান্ত্রিক রাজনীতি ও মূল্যবোধের চর্চা নিশ্চিত হয়। কর্তৃত্ববাদী শাসনের জায়গায় মানবিক শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। জবাবদিহিতামূলক শাসনই সকল উন্নয়নের চাবিকাঠি। শাসনের উন্নয়ন, বিচারের উন্নয়ন, অবকাঠামোর উন্নয়ন, অর্থনীতির উন্নয়ন, মানবিক মূল্যবোধের উন্নয়ন, সমাজের উন্নয়নসহ সব ধরনের উন্নয়ন সম্ভবযোগ্য ও নিশ্চিত করতে গণতান্ত্রিক ও জবাবদিহিমূলক শাসনের বিকল্প নেই।

স্বাধীনতা জনগণের অর্জন। এই অর্জনের সঙ্গে তাদের আরও অর্জনের আকাক্সক্ষা জড়িত। জাতীয় উন্নয়ন, সমৃদ্ধি, বিকাশ ও প্রতিষ্ঠা তাদের একান্তভাবেই কাম্য। এই প্রত্যাশা বাস্তবায়নের প্রয়োজনে তাদের ফের জেগে উঠতে হবে। যে রাজনৈতিক ক্ষমতা তাদের সকল প্রত্যাশা পূরণের অবলম্বন, তা অর্জনে তাদের সচেষ্ট হতে হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন