একনাগাড়ে ২২ বছর মালয়েশিয়ার নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী ছিলেন আধুনিক মালয়েশিয়ার রূপকার ডাক্তার মাহাথির মোহাম্মদ, তিনি আত্মজীবনী লিখেছেন। মাহাথিরের লেখা দীর্ঘ বইটির নাম ‘অ্যা ডক্টর ইন দ্য হাউজ’। বাংলা অনুবাদ করলে এরকম দাঁড়ায়, ‘বাড়িতে একজন চিকিৎসক’। তরুণ বয়সে আইনজীবী হতে চাইলেও, পরিস্থিতির কারণে মাহাথির চিকিৎসক হয়েছিলেন। কিন্তু চিকিৎসক হিসেবে তিনি শুধু রোগী দেখেননি, চিকিৎসকের অভিজ্ঞতায় রাজনীতিকেও দেখেছেন। নিজের লেখা বইয়ের মধ্যেই মাহাথির ব্যাখ্যা দিয়ে লিখেছেন, পঞ্চাশ-ষাট বা সত্তরের দশকেও মালয়েশিয়া নামক দেশ ও সমাজকে একটি রোগী বিবেচনা করলে, তার চিকিৎসার জন্য একজন ডাক্তারের প্রয়োজন ছিল। ওই ডাক্তার রাজনৈতিক ডাক্তার। মাহাথির মোহাম্মদ নামক একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ওই রাজনৈতিক ডাক্তারের ভূমিকা পালন করেছিলেন। তাই তিনি তার আত্মজীবনীর নাম দিয়েছেন ‘বাড়িতে একজন চিকিৎসক’। ইংরেজিতে বইটা অনেক দীর্ঘ; যাদের পক্ষে পড়া সম্ভব, তারা যেন এটা পড়েন সেই অনুরোধ রাখছি। এই অনুরোধ রাখার পেছনে একটি কারণ আছে। দুই চার-পাঁচ বছর আগেও বাংলাদেশে পত্রপত্রিকায় এবং টকশোগুলোতে একটি বিষয় বহুলালোচিত ছিল। বিষয়টি ছিল, অর্থনৈতিক উন্নতি আগে, নাকি গণতান্ত্রিক উন্নতি আগে? বাংলাদেশের বর্তমান ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের ব্যক্তিরা এই মর্মে সোচ্চার ছিলেন এবং এখন কর্মের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত করছেন যে, গণতন্ত্র যা-ই হোক না কেন, বাংলাদেশে অর্থনৈতিক উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। এই অগ্রাধিকার বাস্তবায়ন করতে গিয়ে, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার গতি ও স্বচ্ছতা যদি একটু কমেও যায় তাতে কিছু আসে যায় না। বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দলের এরূপ ব্যক্তিরা প্রায়ই সিঙ্গাপুর বা কোরিয়া বা মালয়েশিয়ার উদাহরণ টানেন। এ জন্যই এই কলামের পাঠকদের মধ্যে যারা অধিকতর সচেতন তাদের কাছে অনুরোধ, যেন তারা মাহাথিরের আত্মজীবনী পড়েন। তাহলে তারা নিজেরাই পূর্ণ ধারণা পাবেন, মালয়েশিয়া এবং বাংলাদেশের আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থা ও প্রক্রিয়ার মধ্যে কী মিল আছে এবং কী মিল নেই। তারা এই ধারণাও পাবেন, মালয়েশিয়ার সাবেক নেতা ডাক্তার মাহাথির মোহাম্মদ ও তার পরিবার এবং বাংলাদেশের বর্তমান নেতা শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের বৈশিষ্ট্য এবং কর্মকান্ডের মধ্যে কী মিল আছে এবং কী মিল নেই। একই সাথে পাঠক এটাও অনুভব করবেন, মাহাথির বা লি কুয়ান ইউ বা নেলসন ম্যান্ডেলা বা ইয়াসির আরাফাত বা রজব তৈয়ব এরদোগান, তাদের নিজ নিজ দেশের মাটি ও মানুষের মধ্য থেকেই উঠে এসেছেন। বাংলাদেশেও যদি কোনো ব্যতিক্রমী নেতা আবার উঠে আসতে হয়, তাকে বাংলাদেশের মাটি ও মানুষ থেকেই উঠে আসতে হবে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনেই নিশ্চিতভাবে বাংলাদেশের মাহাথির বা বাংলাদেশের ম্যান্ডেলা লুক্কায়িত আছেন, শুধু আবিষ্কারের অপেক্ষা।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক অসুস্থতার নিরাময় করার জন্যও চিকিৎসক জরুরি। বাংলাদেশ কি রাজনৈতিকভাবে বা সামাজিকভাবে অসুস্থ? আমার মতে, অসুস্থ না বললেও পুরোপুরি সুস্থ নয়। সুস্থতায় ঘাটতি কতটুকু অথবা কতটুকু অসুস্থ, তার উত্তর একেকজন চিন্তাশীল ব্যক্তি বা বিশ্লেষক একেক নিয়মে দেবেন। উত্তরটি পাঁচ পৃষ্ঠার রচনা থেকে নিয়ে ৫০০ পৃষ্ঠার বই করেও দেয়া যাবে। পাঁচ পৃষ্ঠার থেকেও ছোট হলো একটি কলাম। এরকম একটি কলাম লিখেছিলেন একজন প্রথিতযশা সাংবাদিক। তিনি জনপ্রিয় পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক। তার অনেক লেখা থেকে আমি বক্তব্য উদ্ধৃত করতে পারতাম। কিন্তু স্থানাভাবে সব জায়গা থেকে না নিয়ে একটি জায়গা থেকে তার বক্তব্য ধার করে এখানে উদ্ধৃত করছি। ২৫ নভেম্বর ২০১৪, তিনি যে কলামটি লিখেছিলেন, সেই কলাম থেকে উদ্ধৃতি দিচ্ছি। ‘রাষ্ট্র পরিচালনার মতো কঠিন এবং রাজনীতির মতো দুর্বোধ্য বিষয় মোকাবেলা করেও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অনেক ছোটখাটো বিষয়ের সমস্যা সমাধানেও যখন ভূমিকা রাখতে দেখা যায় তখন নেতৃত্বের সঙ্কট উন্মোচিত হয়। দেশে দলীয়করণের প্রতিযোগিতা, প্রশাসনের ওপর মানুষের আস্থা ও সম্মানের জায়গা সরিয়ে দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন নেই। ছাত্র রাজনীতি মেধাবী সৃজনশীল ছাত্রদের কাছ থেকে বহু দূরে সরে গিয়ে, ছাত্র সমাজের আস্থা হারিয়েছে। নিয়োগ বাণিজ্য বা রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ স্বীকৃত হয়েছে। দুর্নীতি দিনে দিনে বহু বেড়েছে। রাজনীতিতে সহনশীলতার উল্টো পথে আগ্রাসী রূপ নিয়েছে প্রতিহিংসা। গুম, খুন মানুষের জীবনকে নিরাপত্তাহীন করেছে। ইয়াবাসহ মাদকের আগ্রাসন একেকটি পরিবারকেই নয়, দেশের একটি প্রজন্মকে অন্ধকার পথে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। সম্পদ সীমিত, জনসংখ্যা বাড়ছে। শিল্প, কলকারখানা থেকে ব্যবসায়বাণিজ্যে বিনিয়োগকারীরা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন। শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বাড়ছে, কর্মসংস্থানের খবর নেই। উন্নয়ন চলছে, দুর্নীতি থেমে নেই। রাজনীতিতে চলছে ভোগ-বিলাসের অসুস্থ প্রতিযোগিতা। তদবির বাণিজ্য সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। মানুষের লোভ-লালসা এতটাই তীব্র যে, রাতারাতি বড়লোক হওয়ার স্বপ্নে বাজিকরদের আস্ফালন চলছে। গণতন্ত্রের নামে রাজনৈতিক দমন-পীড়ন যেমন চলছে, তেমনই আন্দোলনের নামে দেখা দেয় মানুষ হত্যা আর জানমালের ভয়াবহ ধ্বংসলীলা। সাংবিধানিকভাবে জনগণ ক্ষমতার মালিক হলেও রাজনৈতিক শক্তির কাছে মানুষের অধিকার ও সম্মানবোধ দিন দিন পদদলিত হচ্ছে...।’ কলামটি প্রকাশিত হওয়ার ছয় বছর পরও কথাগুলো হুবহু প্রযোজ্য। এরূপ পরিস্থিতি একদিনে সৃষ্টি হয়নি। দীর্ঘদিনের অশুভ পৃষ্ঠপোষকতায় এটা সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমান রাজনৈতিক সরকার এইরূপ পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য এককভাবে দায়ী না হলেও অবশ্যই বৃহদাংশের জন্য দায়ী। তাই এইরূপ পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণও এক দিনে পাওয়া যাবে না এবং নিশ্চিতভাবেই ধরে নেয়া যায়, বর্তমান সরকারের মাধ্যমে এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়।
পরিত্রাণ পেতে হলে অনেক পরিশ্রম করতে হবে। যেকোনো কাজ করতে গেলে শুধু শ্রম দিয়ে হয় না। মেধা, শ্রম, সময় এবং অর্থ এসব কিছুর সমন্বিত বিনিয়োগেই একটা ফল পাওয়া যায়। কিন্তু সবকিছুর আগে প্রয়োজন একটি সিদ্ধান্ত। ইতিহাসের একেক জন মহানায়ক, তার পারিপার্শ্বিকতার পরিপ্রেক্ষিতে এক একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন; সিদ্ধান্তগুলো যুগান্তকারী ছিল। দক্ষিণ আফ্রিকার সংখ্যাগরিষ্ঠ কালো মানুষের মুক্তিদূত নেলসন ম্যান্ডেলার জীবনী থেকে, উত্তর ভিয়েতনামের সংগ্রামী রাষ্ট্রনায়ক হো চি মিনের জীবনী থেকে এবং বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অথবা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জীবনী থেকে অনেক উদাহরণ আমরা টানতে পারি। আগামী দিনের গবেষকরা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বা খালেদা জিয়া বা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জীবনী থেকেও উদাহরণ টানবেন। বর্তমানে যা বাংলাদেশ, ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত সেটিই ছিল ‘পূর্বপাকিস্তান’। ৯ মাসের দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর স্বাধীন বাংলাদেশের নেতৃত্বকেও সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল তারা নিকটতম প্রতিবেশী, একটু দূরের প্রতিবেশী, অনেক দূরের প্রতিবেশী এরূপ রাষ্ট্রগুলোর সাথে কী রকম সম্পর্ক রাখবেন এবং বাংলাদেশের শাসনব্যবস্থা কী রকম হবে। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রাথমিক বছরগুলোতে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো, পরবর্তী দশকগুলোতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও আর্থিক ব্যবস্থাপনাকে প্রভাবিত করেছিল এবং এখনো মাঝে মধ্যে করে। বর্তমান রাজনৈতিক সরকার বলছে, তারা বাংলাদেশকে অগ্রগতি ও উন্নয়নের মহাসড়কে তুলেছে। দৃশ্যমান অনেক উন্নয়ন কর্মকন্ডে আছে। কিন্তু সরকার যে কথাগুলো জনগণকে স্বচ্ছভাবে বলছে না, সেটি হচ্ছে, আপাতত দৃশ্যমান উন্নয়নের বিনিময় মূল্য কী? অর্থাৎ সামাজিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে কতটুকু মূল্য বা কতটুকু ছাড় দিয়ে বা কতটুকু ত্যাগ স্বীকার করে আমরা উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনা করছি?
আমাদের দেশে বিভিন্ন আঙ্গিকে উন্নতি অবশ্যই অনেক হয়েছে, কিন্তু আমাদেরই মতো পরিস্থিতিতে থাকা অন্যান্য দেশের তুলনায় সেটি কম। অন্যভাবে বলা যায়, যতটুকু উন্নতি করতে পারতাম, ততটুকু হয়নি। আমাদের সাফল্য যা কিছু আছে তার জন্য কৃতিত্ব যেমন আমাদের, তেমনই ব্যর্থতাগুলোর জন্য দায়ও আমাদের। এরূপ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ প্রয়োজন। অতীতের ভুল সংশোধন প্রয়োজন। একটি দেশ যেহেতু রাজনীতিবিদরা পরিচালনা করেন, তাই রাজনীতিতেই চিকিৎসা প্রয়োজন।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে গুণগত পরিবর্তন দরকার। বিদ্যমান বহুদলীয় রাজনৈতিক কাঠামোর মধ্য থেকেই এই গুণগত পরিবর্তনের জন্য চেষ্টা করতে হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। আমরা চাই সৎ, সাহসী, শিক্ষিত, মেধাবী ব্যক্তিরা রাজনীতিতে জড়িত হোন। আমরা চাই সৎ, সাহসী, শিক্ষিত, মেধাবী ব্যক্তিরা রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই জনগণের খেদমতের সুযোগ পান। আমরা চাই, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশ এমন হোক যেখানে সৎ, সাহসী, মেধাবী, শিক্ষিত ব্যক্তিরা নির্বাচনে দাঁড়াতে পারেন, জনগণের সামনে নিজেদের উপস্থাপন করতে পারেন এবং জনগণকে আশ্বস্ত করে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পেতে পারেন। যথেষ্ট বা উল্লেখযোগ্যসংখ্যক সৎ, সাহসী, শিক্ষিত, মেধাবী ব্যক্তি যদি পার্লামেন্ট সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হতে পারেন, তাহলে পার্লামেন্ট সদস্যদের মধ্যে একটি গুণগত পরিবর্তন সূচিত হবেই। সে জন্য বাংলাদেশে সাহসী ভোটার প্রয়োজন, যে ভোটাররা সৎ, সাহসী, শিক্ষিত, মেধাবী ব্যক্তিদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন। সে জন্য বাংলাদেশে সাহসী মিডিয়া প্রয়োজন, যে মিডিয়া সৎ, সাহসী, শিক্ষিত, মেধাবী ব্যক্তিদেরকে উৎসাহিত এবং প্রচারণায় পৃষ্ঠপোষকতা করবে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে কাক্সিক্ষত গুণগত পরিবর্তনের আরো কয়েকটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে: প্রথম- মুক্তিযুদ্ধের আদি ও অকৃত্রিম চেতনা এবং ধর্মীয় মূল্যবোধের চেতনা সম্মিলিতভাবে বা যুগপৎ বিদ্যমান থাকবে। দ্বিতীয়- ধর্মীয় নেতারা, মুক্তিযুদ্ধের নেতারা এবং জাতীয় নেতারা, জাতীয় ঐক্যের প্রেরণা হবেন, জাতীয় বিভক্তির কারণ হবেন না। তৃতীয়- সমাজে, সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠিত হবে। চতুর্থ- জ্ঞানভিত্তিক সমাজ ও কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রয়াস শুরু হবে। পঞ্চম- প্রতিহিংসা নয়, পারস্পরিক প্রতিযোগিতাই হবে উন্নয়নের এবং অবদানের কাঠামো। ষষ্ঠ- আর্থিক ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা, সততা এবং প্রতিযোগিতা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সপ্তম- রাজনীতি ও ব্যবসাতে তারুণ্যকে তথা বাংলাদেশের তরুণ সমাজকে উৎসাহিত করতে হবে ও অগ্রাধিকার দিতে হবে। অষ্টম এবং শেষ: বাংলাদেশের মঙ্গল ও কল্যাণ, বাংলাদেশের নাগরিকদের উপকার কোন কোন পন্থায় এবং কিসে কিসে নিহিত এই প্রসঙ্গে পরিকল্পিতভাবে সচেতনতা সৃষ্টির কর্মসূচি চালু করতে হবে।
এই মুহূর্তে চারটি রাজনৈতিক সংগ্রাম চলমান। প্রথম সংগ্রামটি হচ্ছে: ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক সরকারের পক্ষ থেকে পরিচালিত সংগ্রাম, যেন তারা ক্ষমতায় নিজেদের অবস্থান দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর করতে পারে। দ্বিতীয় সংগ্রাম যেটি সহজে অনুভব করা যায় এবং যে সংগ্রামটিতে আপাত দৃষ্টিতে বিপুলসংখ্যক রাজনৈতিক কর্মী বা জনগোষ্ঠীর অংশ জড়িত, সেই সংগ্রামটি হচ্ছে: সঠিক গণতন্ত্রের চর্চা নিশ্চিত করার জন্য তথা সর্বদলীয় অংশগ্রহণে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধানে পার্লামেন্ট নির্বাচন করার জন্য শাসনতান্ত্রিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা পুনরুদ্ধার করার সংগ্রাম। তৃতীয় সংগ্রামটি সহজে দেখা যাচ্ছে না বা অনুভূত হচ্ছে না এবং সংগ্রামীদের কাফেলার জনসংখ্যাও কম; সেই তৃতীয় সংগ্রামটি হচ্ছে- বাংলাদেশের রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আনার জন্য সংগ্রাম। চতুর্থ সংগ্রামটি হচ্ছে: বাংলাদেশের রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আনার জন্য দুর্বল সংগ্রামী কাফেলাকে শক্তিশালী করার সংগ্রাম। এই কাফেলার নেতৃত্ব দিতে সৎ, সাহসী, শিক্ষিত ও মেধাবী মানুষদের এগিয়ে আসতে হবে।
লেখক: চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন