শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

বাংলাদেশে লাক্ষা পোকার চাষ

মিজানুর রহমান তোতা | প্রকাশের সময় : ১৫ মার্চ, ২০২১, ২:০৮ পিএম

লাক্ষা পোকা একটি অতি ক্ষুদ্র পোকা। দেখতে উকুনের মতো। রেশম ও মৌমাছির মতো লাক্ষা পোকার অর্থনৈতিক গুরুত্ব অনেক। পোকাটি প্রাণীজাত বহুমুখী কর্মশক্তি সম্পন্ন। এর নিঃসৃত রজন জাতীয় পদার্থ ও লাক্ষার উপাদান পারফিউম, অস্ত্র, রেলওয়ে, জাহাজ, ওষুধ, চামড়া ও বৈদ্যুতিক শিল্পসহ বিভিন্ন শিল্প কলকাখানা এবং জুয়েলারীতে চুরিবালা তৈরী,পিতল ও আসবাবপত্রের বার্ণিশে ব্যবহার হয়। ইদানীং এর উপাদান চকলেট, চুইংগাম ও লেবু জাত্যীয় ফলের সংরক্ষণ গুন বৃদ্ধির জন্য কোটিন হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে।

কীটতত্ত্ববিদরা বলেছেন, ভারত, চীন, থাইল্যন্ডে বাণিজ্যিকভাবে লাক্ষা পোকার চাষ হয়ে থাকে। এর মধ্যে আবার ভারত ৭০ভাগ এবং চীন ও থাইল্যান্ড বাকি ৩০ভাগ চাষ হয়। বাংলাদেশে খুবই সামান্য লাক্ষা চাষ হয়। এর বাইরে পৃথিবীর সব দেশেই রয়েছে এর বাজার। সূত্রমতে, বাংলাদেশে অত্যন্ত সম্ভাবনা রয়েছে। এই পোকা চাষে কোন জমির প্রয়োজন হয় না। বরই, বাবলা, কড়ই গাছ লাক্ষা চাষের উপযোগী। কিন্তু নানা কারণে সম্ভাবনাময় লাক্ষা চাষ সম্প্রসারিত হচ্ছে না।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক ড. নাজিরুল ইসলাম দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, লাক্ষা চাষ সম্প্রসারণে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইন্সটিটিউটের কীটতত্ত্ব বিভাগের সিনিয়র সায়েন্টিফিক অফিসার ড. মোঃ মোখলেসুর রহমান জানান, অত্যন্ত সম্ভাবনাময় শিল্পজাত পণ্য লাক্ষা পোকার চাষ সম্প্রসারণের বিরাট সুযোগ রয়েছে। কিন্তু দেশের শুধুমাত্র রাজশাহী ও চাপাইনবাবগঞ্জে সীমাবদ্ধ রয়েছে। বরই, বালা ও কড়ইসহ যেসব গাছে লাক্ষা চাষ হয় তা সারাদেশেই কমবেশি ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। ফল মৌসুমের পরে ফল গাছে লাক্ষা পোকা চাষ করা যায়। তিনি বলেন, বাংলাদেশের গ্রামে প্রায় প্রতিটি বাড়িতে বরই গাছ আছে। পরিকল্পিতভাবে বরই গাছগুলো লাক্ষা চাষের আওতায় আনা হলে বিরাট সুফল পাওয়া যাবে। দেশীয় চাহিদা মিটিয়ে রফতানির বিরাট সুযোগ সৃষ্টি হবে।

কীটতত্ত্ববিদরা জানান, লাক্ষা পোকার ত্বকের নিচে সর্বত্র ছড়িয়ে থাকা একপ্রকার গ্রন্থি থেকে আঁঠালো রস নিঃসৃত হয়। যা ক্রমশ শক্ত ও পুরু হয়ে শোষক গাছের ডালকে আচ্ছাদিত করে ফেলে। পরবর্তীতে ডালের শক্ত আবরণ লাক্ষা বা লাহা হয়। বাংলাদেশের আবহাওয়া লাক্ষা চাষের উপযোগি। সূত্র জানায়, বাংলাদেশে লাক্ষার চাহিদা বছরে ১০হাজার মেট্রিক টন। সেখানে উৎপাদন হয় মাত্র ২শ’ মেট্রিক টন। চাহিদা পূরণ করতে হয় ভারত থেকে আমদানি করে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, বাংলাদেশে লাক্ষা পোকা চাষের সুযোগ কাজে লাগালে এবং ব্যাপকভাবে সম্প্রসারিত হলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রফতানি করা যাবে। কীটতত্ব¡বিদরা জানান, লাক্ষার স্ত্রী পোকার কোষের মধ্যে প্রায় ৪শ’টি ডিম পাড়ে। ৭/৮দিনেই ডিম ফুটে ছোট টকটকে লাল রংএর শিশু লাক্ষার ঝাঁক বেধে বের হয়। ডালের রস চুষে অবশেষে একপ্রকার গ্রন্থি থেকে পাতলা উজ্জ্বল বর্ণের রস নিঃসরণ শুরু করে। পুরুষ পোকা সংগমের পর মারা যায়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
mizanur rahman tota ১৫ মার্চ, ২০২১, ২:৫১ পিএম says : 0
good news
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন