বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন, বেআইনি অথবা খেয়াল খুশিমতো হত্যাকান্ড, জোরপূর্বক গুম, মিডিয়ায় সেন্সরশিপ, সাইট ব্লক করে দেয়াসহ মানবাধিকারের বিভিন্ন ইস্যুতে কড়া সমালোচনা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ২০২০ সালের ওপর ভিত্তি করে প্রকাশিত মানবাধিকার বিষয়ক বার্ষিক প্রতিবেদনে এমন সমালোচনার তীর ছোঁড়া হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, সরকার অথবা তার এজেন্টরা বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড চালায়, জোরপূর্বক গুম করে বাংলাদেশে। নির্যাতন চালানো হয় এবং নিষ্ঠুর আচরণ করা হয়। অমানবিক অথবা অপমানজনক আচরণ করে অথবা শাস্তি দেয় সরকার বা তার এজেন্টরা। ওই রিপোর্টে আরো বলা হয়েছে, জেলখানার পরিবেশ আরো খারাপ, জেলের ভিতরে জীবন হারানোর হুমকি রয়েছে। খেয়ালখুশিমতো অথবা বেআইনিভাবে আটকে রাখার ঘটনা অব্যাহত আছে। ব্যক্তিগত বিষয়ে খেয়ালখুশিমতো অথবা বেআইনিভাবে হস্তক্ষেপ করা হয়।
সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীদের প্রতি সহিংসতা, সহিংসতার হুমকি আছে ও খেয়ালখুশিমতো গ্রেপ্তার করা হয়। শান্তিপূর্ণ সমাবেশ এবং মুক্তভাবে মত প্রকাশের অধিকারে উল্লেখযোগ্যভাবে হস্তক্ষেপ করা হয়। বেসরকারি সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে ব্যাপক বিধিনিষেধমূলক আইন রয়েছে। তাদের কর্মকান্ডের ওপর বিধিনিষেধ রয়েছে। মুক্তভাবে চলাচলের ওপরও বিধিনিষেধ রয়েছে। বিধিনিষেধ রয়েছে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের ওপর। ওই রিপোর্টে আরো বলা হয়েছে, দুর্নীতি অব্যাহত আছে। নারী ও কন্যা শিশুদের বিরুদ্ধে ক্রিমিনাল সহিংসতা অব্যাহত আছে। তদন্ত ও জবাবদিহিতায় ঘাটতি রয়েছে। আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে হুমকি ও সহিংসতা হয়। নিরপেক্ষ ট্রেড ইউনিয়ন এবং শ্রমিক অধিকারের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য বিধিনিষেধ আছে। আরো আছে শিশু শ্রমের খুব খারাপ অবস্থা।
রিপোর্ট আরো বলা হয়, সংবিধান অনুসারে বাংলাদেশে রয়েছে সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা। এর অধীনে সবচেয়ে বেশি ক্ষমতা থাকে প্রধানমন্ত্রীর হাতে। ২০১৮ সালে যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়েছে, তাতে শেখ হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগ টানা তৃতীয়বার ৫ বছর মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীর পদ ধরে রেখেছেন। কিন্তু ওই নির্বাচনকে পর্যবেক্ষকরা অবাধ ও সুষ্ঠু বলে মনে করেন না। অনিয়ম, যেমন ব্যালট বাক্স ভরাট করা এবং বিরোধী দলীয় পোলিং এজেন্ট ও ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে।
রিপোর্টে আরো বলা হয়, নিরাপত্তা রক্ষায় সমন্বিতভাবে কাজ করে পুলিশ, বর্ডার গার্ডস, সন্ত্রাস বিরোধী ইউনিট, যেমন র্যাব। বেসামরিক কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের ওপর কার্যকর নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে। নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের বিরুদ্ধে বহু নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগ আছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন