গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় ওয়াজ মাহফিল করতে এসে আলোচিত ইসলামী বক্তা আবু ত্বহা মুহাম্মদ আদনান এবং তার তিন সহকারীকে অবরুদ্ধের ঘটনা ঘটেছে।
গতকাল সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেই ঘটনার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, ত্বহা ও তার তিন সহকারী মাওলানা শায়েক আবদুল আলিম, মাওলানা মোজাহিদ এবং মাওলানা ফিরোজকে ঘিরে রেখেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ত্বহার ব্যবহৃত মাইক্রোবাসসহ তাদের প্রায় আধা ঘণ্টা অবরুদ্ধ করেন বিক্ষুব্ধ জনতা। পরে মাওলানা মোজাহিদকে রাস্তায় টেনেহিঁচড়ে মারধর করে বিক্ষুদ্ধ জনতা।
গোবিন্দগঞ্জের ওয়াজের আয়োজকরা জানায়, গত ৮ নভেম্বর ত্বহা ও তার সহকারী আবদুল আলিমের সঙ্গে মৌখিক চুক্তি হয় ওয়াজ করতে হবে দুই ঘণ্টা। শনিবার বিকেল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত ত্বহার ওয়াজ করার কথা ছিল। কিন্তু তিনি পৌনে ৫টায় বক্তব্য শুরু করে সোয়া ৫টায় শেষ করে চলে যাচ্ছিলেন। সেসময় কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত হন স্থানীয় ব্যক্তিরা। অবরুদ্ধ করে রাখেন ওই ধর্মীয় বক্তাকে।
স্থানীয় মুসল্লি, মসজিদ কমিটি ও এলাকাবাসী জানায়, ঘটনাটি ঘটে গত শনিবার (১৭ ডিসেম্বর)। সেদিন গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কোচাশহর ইউনিয়নের মোকন্দপুর জামে মসজিদের উদ্যোগে ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
সেখানে ৫০ হাজার টাকা চুক্তিতে প্রধান বক্তা করা হয় ত্বহাকে। গত ৮ নভেম্বর প্রথম দফায় ২০ হাজার টাকা নেন ত্বহার ব্যক্তিগত সহকারী মাওলানা শায়েক আবদুল আলিম। বাকি টাকা ওয়াজ শেষে দেয়ার কথা ছিল।
এরপর থেকেই সোস্যাল মিডিয়ায় শুরু হয়েছে তার পক্ষে-বিপক্ষে সমালোচনা। তবে, বেশিরভাগ নেটিজনরা লিখেছেন, এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
কানিজ ফাতেমা নামে একজন লিখেছেন, বিষয়টা সত্যি দুঃখজনক, যদি এখানে একজন নেতা থাকতেন তাহলে এতক্ষণ অনেক কিছুই ঘটে যেতো। আসলে আমরা মুসলিমরাই এখন নিজেরাই নিজেদের শত্রু মনে করি। আবু ত্বহা আদনান ব্যক্তিগতভাবে কেমন মানুষ জানি না-কিন্তু তার বক্তব্য শুনে অনেকেই জীবনের সঠিক পথ খুঁজে পেয়েছে। মহান আল্লাহ সবাইকে নেক হায়াত দান করুন।
হারেজ মোহাম্মদ ইমন নামে একজন লিখেছেন, অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্যি যে- বর্তমানে কিছু মাহফিল কমিটি ওয়াজের আয়োজন করে জনপ্রিয় বক্তাদের ব্যবহার করে নিজেদের টাকা আয় এবং এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের জন্য। এসব কমিটি কুরআন-হাদিসের বিষয়ভিত্তিক আলোচনার চাইতে লোক দেখিয়ে টাকা কামানোকে গুরুত্ব দিয়ে থাকে। এতে করে সাধারণ মুসলিম শ্রোতা দ্বীনের আসল শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। পাশাপাশি বিজ্ঞ আলেমগণের উচিত মুসলিম উম্মাহর হেদায়াতের উদ্দেশ্যে আলোচনা করা। বিশেষ করে ব্যবসায়ী কোনো কমিটির দাওয়াতে না যাওয়া। শ্রদ্ধেয় আবু ত্বহা মোহাম্মদ আদনান হুজুরের প্রতি এই হামলার প্রতিবাদ ও দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
মো. আব্দুর রহিম নামে একজন লিখেছেন, আল্লাহ তায়ালা অবশ্যই এর উপযুক্ত বিচার করবেন। হে প্রিয় আবু ত্বহা আদনান ভাই কোনো ষড়যন্ত্র, বিপদ ও হামলা আপনাকে থামিয়ে রাখতে পারবে না ইনশাআল্লাহ।
জলিল শেখ নামে একজন লিখেছেন, পৃথিবীর শুরু থেকেই ইহুদির কাজ মুসলমানের পথে বাধা সৃষ্টি করা, যা এখন বাংলাদেশে চলছে।
মাহবুব খান নামে একজন লিখেছেন, জানি না ঘটনা কতটুকু সত্য। যদি সঠিক হয় তাহলে এ রকম বক্তাদের ভ্যাট-ট্যাক্স এর আওতায় আনা হোক।
আনোয়ারুল হাসান সুজন নামে একজন লিখেছেন, যদি এ ঘটনা সত্যি হয় তাহলে তাদেরকে বয়কট করা উচিত।
মোহাম্মদ আফসার হোসাইন ভূঁইয়া নামে একজন লিখেছেন, যারা এ হামলার সাথে জড়িত তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হোক।
এস কে শাহজাহান নামে একজন লিখেছেন, হামলার বিষয়টি লজ্জার, আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এর সাথে বলতে চাই এখনো সময় আছে তাওহীদি জনতা ও আলেমদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, নয়তো এদেশে আলেমদের উপর একের পর এক জুলুম নির্যাতন হবে। এখনই প্রতিবাদ না করলে তার মাসূল এ জাতিকে বড্ড কঠিনভাবে দিতে হবে।
নূর নবী রিল নামে একজন লিখেছেন, প্রিয় বক্তার উপর এমন ন্যাক্কারজনক হামলার বিচার চাই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন