রোজার প্রতিদান ও মর্যাদা এত বিস্তৃত এবং পরিব্যাপ্ত যে, এর সীমানা নির্ধারণ করা দুরূহ ব্যাপার। হজরত আবু হুরায়রা (রা:) হতে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন : আদম সন্তানের প্রতিটি নেক আমলের সওয়াব দশ গুণ হতে সাতশত গুণ পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়। কিন্তু আল্লাহপাক এরশাদ করেছেন, রোজা এই সাধারণ নিয়মের ব্যতিক্রম। কেননা, রোজা একান্তভাবে আমারই জন্য। সুতরাং আমিই (ইচ্ছামতো) এর প্রতিদান দেব। সিয়াম সাধনার আমার বান্দাহরা আমরাই সন্তুষ্টি লাভের জন্য স্বীয় কামনা বাসনা ও পানাহার পরিত্যাগ করে থাকে। (বোখারি, মুসলিম)। এই হাদিসে ঘোষিত বাণীর মর্মকথা আল কোরআনে সুস্পষ্টভাবে বিবৃত হয়েছে। এরশাদ হয়েছে : যে ব্যক্তি একটি নেক আমল করে তার জন্য অনুরূপ দশটি কাজের পুণ্য নির্দিষ্ট রয়েছে। এটা হলো বৃদ্ধি লাভের নিম্নতম পরিমাণ। হাদিস শরিফে দশগুণ হতে সাতশত গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধির কথা বলা আছে। আল কোরআনে পরিমাণহীন বিনিময় দানের ঘোষণা প্রদান করে এরশাদ হয়েছে: যে লোকেই আল্লাহকে উত্তম ঋণপ্রদান করবে, আল্লাহপাক তাকে উহা বহু গুণে বৃদ্ধি করে দিবেন। অন্য এক আয়াতে এরশাদ হয়েছে : আল্লাহপাক যাকে ইচ্ছা বহুগুণ বৃদ্ধি করে দেন। এতে বুঝা যায় যে, আল্লাহপাক কতগুণ বেশি করে দেবেন, তা নির্দিষ্ট ও সীমাবদ্ধ নয়। তিনি যতো ইচ্ছা অধিক হারে বৃদ্ধি করে দিতে পারেন।
সুতরাং রোজার সওয়াব কত হবে, এর পরিমাণ একমাত্র আল্লাহ ছাড়া অন্য কেউ জানে না। সিয়াম সাধনার মাঝে এমন কিছু বিশেষত্ব রয়েছে যা অন্য কোনো ইবাদতে নেই। কারণ সিয়াম সাধনা একান্তই গোপনীয় ব্যাপার। এ জন্য আল্লাহপাক এর সওয়াব দানের ব্যাপারটি সম্পূর্ণ নিজের ইচ্ছাধীন করে রেখেছেন। রোজা একান্তভাবে আল্লাহর জন্যই হয়ে থাকে। আল্লাহপাকের ঘোষণা : রোজা একান্তভাবে আমারই জন্য হয়ে থাকে এবং আমিই এর বিনিময় প্রদান করব, বাক্যে এই দিকনির্দেশনার প্রতিই ইঙ্গিত করা হয়েছে। আল্লাহপাক আমাদের সিয়াম সাধনা কবুল করুন এবং স্বীয় মর্জি মোতাবেক বিনিময় প্রদান করুন, কায়মনে এ কামনাই করছি- আমিন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন