মহান আল্লাহপাক সারা বছরই মুমিন মুসলমানদের এবাদত বন্দেগীর সওয়াব প্রদান করে থাকেন। তবে রমজান মাসের ফরজ এবাদত ও অন্যান্য নফল এবাদতের সওয়াব তিনি বিশেষভাবে বর্ধিত করে দেন। এতদপ্রসঙ্গে পিয়ারা নবী মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন : ‘হে জনগণ! রমজান মাসের রোজা আল্লাহপাক ফরজ করেছেন এবং এর রাতগুলোতে আল্লাহপাকের সম্মুখে দাঁড়ানোকে নফল এবাদতরূপে নির্ধারিত করেছেন। যে ব্যক্তি এই মাসে আল্লাহপাকের সন্তষ্টি ও রেজামন্দি লাভের আসায় এবং তাঁর নৈকট্য লাভের উদ্দেশে কোনো ফরজ নয়, এমন ইবাদত সুন্নত বা নফল আদায় করবে তাকে অন্যান্য সময়ের ফরজ ইবাদতের সমান সওয়াব দান করা হবে। আর যে ব্যক্তি এই মাসে কোনো ফরজ এবাদত করবে, তাকে অন্যান্য সময়ের ৭০টি ফরজ এবাদতের সওয়াব দান করা হবে।
রাসুলুল্লাহ (সা:) এর এই পবিত্র বাণীর অর্থ ও মর্ম খুবই ব্যাপক ও বিস্তৃত। তবে আমরা এই বাণীর তিনটি তাৎপর্য অতিসহজেই উপলব্ধি করতে পারি। প্রথমত: এই বাণীর দ্বারা তিনি মুমিন-মুসলমানদের রমজান মাসে ফরজ, সুন্নাত মুস্তাহাব ইত্যাদি এবাদত যথাযথভাবে অধিক হারে আদায় করার জন্য উৎসাহিত করেছেন। যে বা যারা এই মাসে অধিক এবাদত বন্দেগী করবে, আল্লাহপাক তাদেরকে বেশি বেশি সওয়াব দান করবেন। এই অধিক সওয়াব দান করা আল্লাহপাকের ফজল ও করম। তিনি যাকে চান এই ফজল ও করমদ্বারা সোভাগ্যশালী করেন। দ্বিতীয়ত: দিন, ক্ষণ, মাস, বছর ইত্যাদি আল্লাহপাকের নিয়মতান্ত্রিক সময় ও কালের পরিচয় বহন করে। তবে সকল সময় ও সকল কালের মর্যাদা এক নয়। কোনো কোনো সময় ও কালের মর্যাদা সে কাল ও সময়ের সাথে সন্নিহিত কাজ বা অনুষ্ঠানের কারণে অধিক মর্যাদাশীল হয়ে থাকে। একইভাবে মাহে রমজানে আদায়কৃত এবাদত বন্দেগীর কারণেই এই মাসের সওয়াব ও বিনিময় আল্লাহপাক পরিবর্ধিত হারে প্রদান করবেন, এটা একান্তই প্রত্যাশিত ব্যাপার।
তৃতীয়ত: মাহে রমজানে আদায়কৃত সকল প্রকার এবাদত বন্দেগী একান্তভাবে আল্লাহপাকের খোশনুদী ও সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে হওয়া বাঞ্ছনীয়। তাই, এই মাসের এবাদতকারী সকলের মন ও দেহ একাত্ম হয়ে আল্লাহপাকের রেজামন্দি লাভের প্রত্যাশায় যত বেশি উন্মুখ হবে, ততই বেশি সওয়াব লাভ করার সোভাগ্য নসিব হবে। আল্লাহপাক আমাদের সেই বরকত দান করুন- আমীন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন