টানা খরার এবার কাঁঠালের ফলন অর্ধেকে নেমে আসতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কোন রকম চাষ, সেচ, সার কীটনাশক ছাড়া অর্থনীতির জন্য গুরুত্ববহ এই ফলটির ফলন সম্পূর্ণই প্রকৃতি নির্ভর। তবে মোটামুটি সহনীয় পর্যায়ের খরা হলেও এর ফলনে তেমন কোন হেরফের হয় না।
এবার একটানা খবার কবলে পাবনা সিরাজগঞ্জ জয়পুরহাট ও বগুড়া নিয়ে গঠিত বগুড়া কৃষি অঞ্চল। প্রতিবছর এখানে ৪ হাজার ১০৭ হেক্টর জমিতে মোট ৮৯ হাজার ২৩২ মেট্রিক টন কাঁঠাল উৎপন্ন হয়ে থাকে বলে কৃষি দফতর সূত্রে জানা যায়। বগুড়ার কৃষি পরিসংখ্যান সহকারি আজিজার রহমান ইনকিলাবকে জানান, বগুড়া অঞ্চলের ৪ জেলার মধ্যে বগুড়ায় ২২৩০ হেক্টর জমিতে কাঁঠালের গাছ রয়েছে। জয়পুরহাটে ৪৫৪ হেক্টর, পাবনায় ৬৭৫ হেক্টর এবং সিরাজগঞ্জে ৭৪৮ হেক্টর জমিতে কাঁঠালের গাছ রয়েছে।
বগুড়া আবহাওয়া অফিসের রেকর্ডে দেখা যায়, গত ডিসেম্বর থেকে ২৮ এপ্রিল মোট ৪ দফায় বৃষ্টি হয়েছে খুবই কম পরিমাণে। প্রথম তিন দফা বর্ষণে ৫ মিলিমিটার করে ১৫ এবং ২৮ এপ্রিল দিবাগত রাতে ১০ মিলিমিটার মিলিয়ে মোট ২৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এই পরিমাণ বৃষ্টি এক নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত। কারণ সাধারণত এই সময়ে গড়ে ২০০ মিলিমিটার বৃষ্টি খুব স্বাভাবিক ঘটনা।
এমন খরায় এবার গ্রীষ্মকালীন ফল কাঁঠালের উৎপাদন মারাত্মক সঙ্কটে পড়েছে। বগুড়ার কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা জুলফিকার হায়দার বলেন, খরায় আম, জাম, লিচুর পাশাপাশি কাঁঠালের বৃদ্ধি মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়েছে। খরার কারণে কাঁঠালের মোচা (ফুল) যেমন আসেনি তেমনি যতটুকু টিকেছে গাছে তার স্বাভাবিক বৃদ্ধি হয়নি। এর ফলে কাঁঠালের উৎপাদন হয়তো অর্ধেকে নেমে আসবে।
বাজারে দেখা গেছে এবার তরকারি হিসেবে ব্যবহার্য কাঁঠালের আমদানি খুবই কম। অন্যান্য বছরে এই সময়ে কাঁঠালের ব্যাপক আমদানি হতো কমদামের সবজি হিসেবে ক্রেতারা এটা পছন্দও করতো। বগুড়া অঞ্চলের কাঁঠাল স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রাজধানীসহ সারাদেশেই চলে যেত। টাকার অঙ্কে এবার বগুড়ায় প্রায় শতকোটি টাকার আয় থেকে বঞ্চিত হবে গাছ মালিকরা বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন