নদীভাঙন নিয়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের বিখ্যাত গানÑ ‘এ কূল ভাঙে, ও কূল গড়ে/ এই তো নদীর খেলা/এই তো বিধির খেলা/ সকাল বেলা আমির রে ভাই/ ফকির সন্ধ্যা বেলা...। সত্যি নদী ভাঙনে প্রতিবছরই ঘরবাড়ি-জমিজমা সব হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে হাজারও মানুষ।
এবারও বর্ষা আসার আগেই পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে দেশের বিভিন্ন এলাকায় তীব্র হচ্ছে নদীভাঙন। এতে বিলীন হচ্ছেÑ ঘরবাড়ি, ফসলি-জমিসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও বিস্তীর্ণ জনপদ। কুড়িগ্রামে তিস্তার ভাঙনে বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সিরাজগঞ্জে যমুনার ভাঙনে পাল্টে যাচ্ছে জেলার মানচিত্র। এছাড়া এনায়েতপুর মেডিক্যাল কলেজ ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে। পানি বৃদ্ধির ফলে দৌলতদিয়া ফেরিঘাট রয়েছে ভাঙনের কবলে। ভাঙন এলাকার মানুষের অভিযোগ, ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নেই কোনো কার্যকরি পদক্ষেপ। এবারও পুরোমাত্রায় বর্ষা আসার আগে ভাঙন রোধে পদক্ষেপ না নিলে অনেক স্থানে বিস্তীর্ণ এলাকা নদীগর্ভে চলে যাবে এবং গৃহহীন হবে হাজার হাজার পরিবার। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের দাবি, ভাঙন প্রতিরোধে জরুরি পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।
নদী রক্ষায় প্রায় প্রতিবছরই বিভিন্ন প্রকল্প নেয়া হয়। তবে এসব প্রকল্পের কাজ যথাযথভাবে হয় না বলে সাধারণ মানুষের অভিযোগ। এ বিষয়ে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, নদী দখল-দূষণ বন্ধ করা, নাব্যতা ফিরিয়ে আনার জন্য যেসব প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে, তার ৫০ শতাংশও সঠিকভাবে ব্যয় হয় না। এসব প্রকল্পের কমপক্ষে ৭০ শতাংশই সংশ্লিষ্টদের পকেটে চলে যায়।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (সিইজিআইএস) আশঙ্কা, দেশের ১৩টি জেলার ২৮ বর্গকিলোমিটার এলাকা এ বছর ভাঙনের মুখে পড়তে পারে। এর মধ্যে তীব্র ভাঙনের মুখে পড়তে পারে কুড়িগ্রাম, জামালপুর, গাইবান্ধা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, পাবনা, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী, রাজশাহী, ফরিদপুর ও মাদারীপুর। সিইজিআইএসের পূর্বাভাসের তালিকায় না থাকলেও শরীয়তপুর, চাঁদপুর ও মুন্সীগঞ্জ জেলা গত দুই বছর তীব্র ভাঙনের মুখে রয়েছে। এই তিন জেলায় এবারও নদী তীবরর্তী এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে। এই গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি গত বছর দেশের ১৩টি জেলায় ২৪ বর্গকিলোমিটার এলাকা ভাঙনের মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করেছিল। তবে বাস্তবে ভেঙেছে ৩৮ বর্গকিলোমিটার।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যানুযায়ী, গত চার দশকে কমবেশি এক লাখ হেক্টর ভূমি নদীগর্ভে চলে গেছে। তারা ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন নদ-নদীর প্রায় তিনশ’ ‘ভাঙনপ্রবণ’ এলাকা চিহ্নিত করেছে। প্রায় প্রতিবছরই এসব এলাকায় কমবেশি ভাঙন দেখা দেয়। চলতি মৌসুমেও ৫২টি জেলার ২৭২টি স্থানে ভাঙন দেখা দিতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকার শরীয়তপুরের নড়িয়া এলাকায় পদ্মার ভাঙন রোধে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে; কিন্তু অন্যান্য ভাঙন এলাকার দিকে সরকারের তেমন নজর নেই। ভাঙনের এই বিপর্যয়কে নিছক ভূমির হিসেবে দেখলে চলবে না। একেকটি ভাঙন মানে কিছু পরিবার নিঃস্ব হয়ে যাওয়। সকালবেলার অনেক আমির সন্ধ্যাবেলা ফকির হয়ে যাওয়া।
দেশের বিভিন্ন এলাকার নদী ভাঙনের সাম্প্রতিক চিত্র তুলে ধরে আমাদের নিজস্ব সংবাদদাতারা রিপোর্ট পাঠিয়েছেন। তাদের পাঠানো তথ্যের ভিত্তিতে বিশেষ সংবাদদাতা রফিক মুহাম্মদ এ প্রতিবেদন তৈরি করেছেন।
কুড়িগ্রাম থেকে শফিকুল ইসলাম বেবু জানান, বর্ষার আগেই পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে তিস্তা নদী তার ভয়ালরূপ দেখাতে শুরু করেছে। তিস্তার ভাঙনে বিলিন হচ্ছে ঘরবাড়ি, ফসলি জমিসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। আসন্ন ভরা বর্ষার বন্যার আগে ভাঙন রোধে পদক্ষেপ না নিলে দুই জেলার কয়েক হাজার মানুষ নিঃস্ব হয়ে যাবে। কুড়িগ্রামে মেগা প্রকল্পে তিস্তা নদীর ভাঙন রোধে জরুরি বরাদ্দ না থাকায় ক্ষুব্ধ তিস্তা পাড়ের মানুষ।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের তৈয়ব খাঁ এলাকার বৃদ্ধ বখত জামাল বলেন, মাত্র এক যুগে তিস্তা নদীর কড়াল গ্রাসে ৪ বার ভাঙনে বসতভিটেসহ প্রায় আড়াই বিঘা ফসলি জমি বিলীন হয়েছে। বর্তমানে নদীর তীরেই মাথাগোঁজার শেষ সম্বল জমিটুকুও পড়েছে হুমকির মুখে। গত এক সপ্তাহে তিস্তার ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে শত-শত বিঘা আবাদি জমি, গাছপালাসহ শতাধিক বাড়িঘর। ভেঙে গেছে মূল সড়কের ৪০ মিটার। প্রশাসন এবং পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে ভাঙন মোকাবিলায় নানা প্রতিশ্রুতি দেয়া হলেও চোখের সামনে বাড়িঘর ভেঙে যেতে দেখে ক্ষুব্ধ তিস্তাপাড়ের মানুষ।
ইতিমধ্যেই নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে এলজিইডি’র পাকা সড়কসহ পুরান বজরা জামে মসজিদ এবং বেশ কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাড়িঘর বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের মুখে পশ্চিম বজরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবকাঠামো ভেঙে নেয়া হচ্ছে। ৫০-৬০টি বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে পুরান বজরাহাট, পশ্চিম বজরা দাখিল মাদরাসা, চর বজরা পূর্বপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বর্তমানে তিস্তার ভাঙন রোধে অস্থায়ীভাবে জিওব্যাগ এবং জিওটিউব দিয়ে রোধ করার চেষ্ঠা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম বলেন, স্থায়ীভাবে কাজ করার জন্য প্রকল্প পরিকল্পনা কমিশনে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
সিরাজগঞ্জ থেকে সৈয়দ শামীম শিরাজী বলেন, যমুনা নদীতে ক্রমশ পানি বৃদ্ধির ফলে যমুনা ফুলে ফেঁপে উঠছে। উত্তাল যমুনা তাই তর্জন গর্জন করে ভাঙছে নদী, ভাঙছে জনপদ, ভাঙছে হাজারো মানুষের কপাল, যমুনা নদী ক্রমে ক্রমে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে শুরু করেছে। সিরাজগঞ্জে নদী তীরবর্তী সিরাজগঞ্জ সদর, শাহজাদপুর, কাজিপুর, চৌহালী, বেলকুচি এই পাঁচটি উপজেলায় নদীর দুইপাশে ভাঙন শুরু হয়েছে। এর সঙ্গে ভারীবর্ষণের সাথে দক্ষিণা বাতাস যুক্ত হওয়ায় ভাঙন তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। শাহজাদপুর ও চৌহালীতে অব্যাহত ভাঙনে মানচিত্র থেকে মুছে যেতে শুরু করেছে চৌহালী উপজেলা। এরই মধ্যে চৌহালী উপজেলা ভাঙনকবলিত হয়ে টাঙ্গাইল জেলার সাথে যুক্ত হয়েছে। সেই সাথে কাজিপুরে ভাঙনের ফলে জামালপুর জেলার সাথে যুক্ত হয়েছে। দীর্ঘ প্রায় আট বছর যাবত অব্যাহত ভাঙনের মুখে পড়েছে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদ, হাটবাজার, রাস্তাঘাট ও আবাদী জমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা। বিশেষ করে প্রায় পাঁচশ’ কোটি ব্যয়ে নির্মিত এনায়েতপুরে খাজা ইউনুছ আলী মেডিক্যাল কলেজ হুমকির মুখে। ভাঙনরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায়, এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
মাদারীপুর থেকে আবুল হাসান সোহেল জানান, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও বৃষ্টির প্রভাবে, নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় মাদারীপুরের ৪টি উপজেলার আড়িয়াল খাঁ, পদ্মা পালরদী নদীর ভাঙনে বেশ ক্ষতি হয়েছে। থেমে থেমে নদীর ভাঙন চলমান থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ও পরিবারের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত অনেক পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছে। এছাড়াও নদীভাঙনে প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, মসজিদ, কমিউনিটি ক্লিনিক, হাটবাজার, ফসলি জমি, রাস্তাঘাট ভেঙে গেছে। এতে করে মাদারীপুর জেলার ভৌগলিক মানচিত্র ক্রমশ পরিবর্তন হচ্ছে। ভাঙন প্রতিরোধে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড কিছু কিছু স্থানে বালু ভর্তি জিওব্যাগ ফেলেছে। যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই সামান্য। নদী ভাঙনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত শিবচর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা। বিশেষ করে নদী তীরবর্তী ইউনিয়ন চরজানাজাত কাঠালবাড়ী সন্নাসিরচর বহেরাতলা। গত বছর চরজানাজাত ইউনিয়ন পরিষদের কমপ্লেক্স ভবন, চরের বাতিঘর খ্যাত বন্দরখোলা ইউনিয়নের নুরুদ্দিন মাদবরকান্দি এসইএসডিপি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩ তলা ভবন, একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কমিউনিটি ক্লিনিক ও কাজিরসূরা হাট-বাজার পদ্মা নদীতে বিলীন গেছে। এখনও হুমকির মুখে রয়েছে পুরো এলাকা।
ভোলা থেকে মো. জহিরুল হক জানান, জেলার সদরে শিবপুর, ধনিয়া, পূব ইলিশা কাচিয়া, রাজাপুর সদর উপজেলার বিভিন্নস্থানে মেঘনা নদী তীর ভাঙছে। বাপাউবো-২ এর উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. ছালাউদ্দিন জানান চরফ্যাশনের চরমোতাহার, চর কুকরি মুকরির, ঢালচর, চরকছ্ছপিয়া, মনপুরার উত্তর সাকুচিয়া, লালমোহনের লর্ডহার্ডিঞ্জ চাঁদপুর মিয়ারহাট, তজুমুদ্দিন এর চাচড়া, গুরিন্দা এলাকায় নদীতীর ব্যাপক হারে ভাঙছে। এলাকাবাসী জানান নদী ভাঙনের ফলে তারা অনেক সমস্যায় দিন যাপন করছে বিলীন হয়ে যাচ্ছে আবাদি জমি।
লক্ষ্মীপুর থেকে এস এম বাবুল জানান, মেঘনার অব্যাহত ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন গেছে বাড়িঘর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা ও ফসলি জমিসহ রামগতি ও কমলনগ উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা। প্রায় ১৫ হাজার একর ফসলি জমি, সরকারি-বেসরকারি ১৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, আশ্রয়ণ কেন্দ্রের পাঁচটি কলোনি, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ২৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ এবং কয়েক কিলোমিটার কাঁচা-পাকা সড়কসহ অসংখ্য মসজিদ, বিভিন্ন স্থাপনা বিলীন হয়ে গেছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রামগতি উপজেলার বড়খেরী, চরআলগী ও কমলনগর উপজেলার ফলকন, চরলরেন্স, পাটোয়ারীরহাট, সাহেবেরহাট এলাকায় মেঘনার ভাঙনের তাণ্ডবলীলা চলছে। নতুন করে ভাঙন দেখা দিয়েছে কমলনগর উপজেলার নাছিরগঞ্জ, নবীগঞ্জ, লুধুয়া ও রামগতি উপজেলার জনতাবাজার এলাকা, মেস্তী পাড়া হুমকির মুখে রয়েছে বেশ কয়েকটি সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা।
মানিকগঞ্জ থেকে শাহীন তারেক জানান, পদ্মা যমুনা নদীর তীরবর্তী মানুষ এখন ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। গত কয়েকদিনে শিবালয় ও হরিরামপুর উপজেলার শতাধিক পরিবারের বসতভিটি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়াও ভাঙন আতঙ্কে ঘরবাড়ি অন্যত্র স্থানান্তর করছেন আরও অনেকেই। বসতভিটা হারিয়ে এসব পরিবারগুলো অন্যের জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন। সব চেয়ে বেশি ভাঙন দেখা দিয়েছে হরিমারপুরের কাঞ্চপুর ইউনিয়ন ও শিবালয় উপজেলার দক্ষিণ শিবালয় এলাকায়। সরেজমিনে দেখা যায়, কয়েকটি পরিবার তাদের ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন, কেটে নিচ্ছেন জমির গাছপালা। এদের কেউ কেউ একাধিকবার নদী ভাঙনের শিকার হয়েছেন।
মুন্সীগঞ্জ থেকে মঞ্জুর মোর্শেদ জানান, লৌহজং উপজেলায় বর্ষার আগেই পদ্মা তীরবর্তী এলাকায় নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদীতে উত্তাল ঢেউ আর প্রবল স্রোতের কারণে অসময়ের এই ভাঙনে হুমকির মুখে পড়েছে পদ্মা নদী ঘেঁষা উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের ৮টি গ্রামে। ভাঙনকবলিত এলাকাগুলো হচ্ছেÑ কুমারভোগ ইউনিয়নের খড়িয়া, হলদিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ হলদিয়া, কনকসার ইউনিয়নের সিংহেরহাটি, বেজগাঁও ইউনিয়নের সুন্দিসার; বেজগাঁও, গাওদিয়া ইউনিয়নের গাওদিয়া, শামুরবাড়ি ও কলমা ইউনিয়নের ডহরী।
রংপুর থেকে হালিম আনছারী জানান, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢল আর ভারীবর্ষণে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে বিভিন্ন স্থানে তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। অব্যাহত ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তিস্তাপাড়ের মানুষ। গত এক সপ্তাহে তিস্তার পেটে বিলীন হয়ে গেছে রংপুরের গঙ্গাচড়া ও কাউনিয়া উপজেলার শতাধিক ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি। হুমকির মুখে রয়েছে মসজিদ ও বিদ্যালয়সহ আরো অনেক স্থাপনা।
ফেনী থেকে মো. ওমর ফারুক জানান, জেলার মহুরী নদীতে ভাঙন শুরু হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেÑ মানুষের বসতবাড়ি, ফসলি জমি, রাস্তাঘাট। গত সপ্তাহে টানা বৃষ্টি ও ভারতীয় পাহাড়ি ঢলের চাপে ফুলগাজী সদরের উত্তর শ্রীপুর গ্রামের নাপিত কোনা এলাকায় মুহুরী নদীর বেড়িবাঁধের ১৫ মিটার অংশে ভাঙন দেখা দেয়। মুহূর্তেই মানুষের ঘরবাড়ি, বাজারের দোকাট পাটে পানি ঢুকে পড়ে, ক্ষতিগ্রস্ত হয় রাস্তাঘাট, ফসলি জমি ও মাছের ঘের।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন