বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

নদীভাঙনে দিশেহার গ্রামের মানুষ

ভাঙনরোধে প্রচুর অর্থ খরচ হলেও দুর্নীতির কারণে সুফল নেই বিলীন হচ্ছে বসতভিটাসহ ফসলি জমি : নদী পাড়ের মানুষের কান্না : জ্বলছে না চুলা চারদিকে জোয়ারের পানিতে একাকার

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৮ জুলাই, ২০২২, ১২:০২ এএম

নদীর প্রবল জোয়ারের তোড়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় বেড়িবাঁধ ভেঙে গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় হাজারো মানুষ দুর্ভোগে পড়েছে। নদী পাড়ের বাসিন্দাদের কাছে এক আতঙ্কের নাম ভাঙন। এতে বসতভিটা জায়গা-জমি সব হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে হাজারোার পরিবার। রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজার, স্কুল-কলেজ, মসজিদ, মাদরাসাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন। আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো খবরে :
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, প্রবল জোয়ারে প্লাবিত হচ্ছে নগরীসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকা। গতকাল টানা তৃতীয় দিনের মত হাঁটুসমান পানিতে প্লাবিত হয় দেশের অন্যতম পাইকারি বাজার নগরীর চাক্তাই, খাতুনগঞ্জও আছদগঞ্জের বিস্তৃত এলাকা। দোকান, আড়ত, গুদামে পানি ঢুকে পড়ে। এতে এসব সওদাগরী পাড়ায় ব্যবসা-বাণিজ্য স্থবির হয়ে পড়েছে। মালামাল ভিজে যাওয়ায় ক্ষতির আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। এছাড়া নগরীর পতেঙ্গা, হালিশহর, আগ্রাবাদ, মাদারবাড়ি, বাকলিয়া, চান্দগাঁও, বহদ্দারহাটসহ বিস্তীর্ণ এলাকায় জোয়ারের পানি উঠে যায়। তাতে ঘরবাড়ি, দোকানপাট, ব্যবসা-বাণিজ্য কেন্দ্র এবং বহুতল ভবনের নিচতলা প্লাবিত হয়। রাতে-দিনে দুই দফা জোয়ারে পানিবন্দি হয়ে পড়ছে নগরী অনেক এলাকা। এতে মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। মহানগরীর পাশাপাশি জেলার উপকূলীয় সীতাকুণ্ড, মীরসরাই, বাঁশখালী ও আনোয়ারার অনেক এলাকা জোয়ারে প্লাবিত হচ্ছে। বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট, ক্ষেতের ফসল, পুকুর, মাছের খামার তলিয়ে গেছে জোয়ারের পানিতে। নোনা পানির প্লাবনে ফসলহানির আশঙ্কায় উপকূলের বাসিন্দারা।

খুলনা ব্যুরো জানায়, জেলার কয়রায় কপোতাক্ষ নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুর্বল বেড়িবাঁধ ভেঙে পাঁচ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। গতকাল ভোরে ভাটার সময় ভাঙন শুরু হয়। দুপুরের জোয়ারে তা প্রকট আকার ধারণ করে। বেড়িবাঁধের প্রায় ৩০০ মিটার ভেঙে নদীতে তলিয়ে গেছে। এদিকে, ভাঙনের ফলে দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের পাঁটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ভেসে গেছে মাছের ঘের ও ফসলী জমি। ভাঙন আতঙ্কে রয়েছেন পাঁচ গ্রামের ৩০ হাজার মানুষ। এদিকে, সকাল থেকেই পানি উন্নয়ন বোর্ড রিং বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে ভাঙন ঠেকাতে কাজ করছে বলে জানা গেছে। এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে এ কাজে যুক্ত রয়েছে।

নোয়াখালী ব্যুরো জানায়, হাতিয়া উপজেলার নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পূর্ণিমার কারনে সৃষ্ট অস্বাভাবিক জোয়ারের নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডের প্রধান সড়কগুলো প্লাবিত হয়েছে, ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ রয়েছে। নিম্নাঞ্চলের ঘরবাড়িও প্লাবিত হয়েছে। বেড়িবাঁধ না থাকায় সহজে জোয়ারের পানি ডুকে প্লাবিত হয় নিঝুমদ্বীপ। জানা গেছে, রোববার দুপুরে জোয়ারের পানি ডুকে পড়ায় নিঝুমদ্বীপে বন্দরটিলা ঘাট-নামারবাজার প্রধান সড়কটি ৩ফুট পানির নিছে তলিয়ে গেছে। ফলে ওই সড়কে চলাচলকারী যানবাহনগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে ঝুঁকি নিয়ে পায়ে হেঁটে অনেকে নিঝুমদ্বীপের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যাতায়াত করছে। গত দু’দিন ধরে প্রতিদিন দুপুর ১২টা থেকে সাড়ে ১২টার মধ্যে মেঘনা নদীর অস্বাভাবিক জোয়ারের কারনে পানি ডুকতে শুরু করে নিঝুমদ্বীপের প্রতিটি এলাকায়। বিকেলে ৪টা থেকে ৫টার মধ্যে পুনঃরায় পানি নামতে শুরু করে। জোয়ারের পানিতে নিম্নাঞ্চলগুলো ৩ থেকে ৫ ফুট পানির নিচে তলিয়ে যায়।

বরিশাল ব্যুরো জানায়, দক্ষিণাঞ্চলের নদ-নদীর পানি হ্রাস পেতে শুরু করলেও এখনো বিপদসীমার ওপরে। গত ৪৮ ঘন্টায় মেঘনা, তেতুলিয়া, বুড়িশ^র, বলেশ^র, কঁচা, কির্তনখোলা, বিষখালী ও পায়রাসহ সবগুলো নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে জানায় পানি উন্নয়ন বোর্ড। ফলে দক্ষিণাঞ্চলের আমন বীজতলাসহ ফসলী জমি প্লাবনের আশংকা এখন নেই। এবার ভরা আষাঢ়ের মত শ্রাবনেও দক্ষিণাঞ্চল জুড়ে স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টিপাতে সব ধরনের ফসল ঝুঁকির মুখে রয়েছে। আমন বীজতলা তৈরীসহ রোপণ পরবর্তি পরিচর্যা ব্যাহত হওয়ায় আবাদ ও উৎপাদন নিয়ে যথেষ্ঠ অনিশ্চয়তা কাজ করছে কৃষকদের মাঝে।

স্টাফ রিপোর্টার, লক্ষ্মীপুর থেকে জানান, মেঘনায় অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও কমলনগর উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে করে দুর্ভোগে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ। নদীতে ভাটা পড়লে পানি কিছুটা নামলেও আবার জোয়ার এলে তা বাড়তে থাকে। অস্বাভাবিক জোয়ারে রামগতি ও কমলনগরে ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। গত দুদিনে নতুন নতুন এলাকা ভাঙনের মুখে পড়ছে বলে জানিয়েছেন নদীপাড়ের বাসিন্দারা। স্থানীয়রা জানান, মেঘনার তীরবর্তী এলাকায় বেড়িবাঁধ না থাকায় অস্বাভাবিক জোয়ারের পানি সহজে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। এতে নদীভাঙনসহ উপকূলীয় বাসিন্দাদের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। কমলনগরের কালকিনি, সাহেবেরহাট, পাটওয়ারীরহাট, চরফলকন, চরমার্টিন, চরলরেঞ্চ ইউনিয়ন এবং রামগতির আলেকজান্ডার, বড়খেরী, চরগাজী, চরআবদুল্লাহ ইউনিয়নের ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়। কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান ইনকিলাবকে জানান, ‘উপজেলার কয়েকটি এলাকা অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এখনও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি।’

কক্সবাজার জেলা সংবাদদাতা জানান, জেলার অথৈ সাগরের মাঝে অবস্থিত কুতুবদিয়া দ্বীপ। এ দ্বীপের ভাঙন ঠেকাতে প্রতি বছর পানি উন্নয়ন বোর্ড কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দিলেও ভাঙন প্রতিরোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন,কাজের দায়িত্ব প্রাপ্ত ঠিকাদার ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা কর্মচারীরা বরাদ্দ দেয়া টাকার সিংহভাগ টাকা লুটপাটের মাধ্যমে ভাগ ভাটোয়ারা হয়ে যাওয়ায় নির্মিত বাঁধ নির্মাণ কাজ শেষ না হতেই আবার ভেঙে যায়। বেড়িবাঁধ ভেঙে জোয়ারের পানি প্রবেশ করল কুতুবদিয়ায়। জোয়ারের তাণ্ডবে উপজেলার কৈয়ারবিল বিন্দা পাড়ায় কাচা বেড়িবাঁধ ভাঙন ধরেছে। অতিরিক্ত জোয়ার থাকবে আরো ৩ দিন। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া না হলে পার্শ্ববর্তী উত্তর কৈয়ারবিল ও ফৈত্যার পাড়ায় উঠবে লবনাক্ত সাগরের পাইন।

ভোলা জেলা সংবাদদাতা জানান, চরফ্যাশনে পূর্ণিমার প্রভাবে নদ-নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে তিন থেকে চার ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে উপজেলার নিম্নাঞ্চলের বেড়িবাঁধের বাহিরের ২৫ টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে প্রায় কয়েক হাজার মানুষ দুর্ভোগে রয়েছে। জানা গেছে, জোয়ারের ঢেউয়ের ঝাপটায় চরমানিকা ইউনিয়নের চর কচ্ছপিয়া, চর ফারুকী, চর হাসিনা, চর লক্ষিসহ বেড়িবাধেঁর বাহিরের বেশ কিছু এলাকার জোয়াররের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেক এলাকা প্লাবিত হয়ে এলাকার কিছু ফসল, নিচু এলাকার ঘড়বাড়ি নষ্ট হয়ে গেছে। চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল নোমান রাহুল ইনকিলাবকে জানান, মূলত পূর্ণিমার কারণেই নদীর পানি কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত চরাঞ্চলসহ নদীসংলগ্ন এলাকাগুলোর খোঁজখবর প্রতিনিয়ত রাখছি। ক্ষয়ক্ষতির কোন খবর পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পটুয়াখালী জেলা সংবাদদাতা জানান, জোয়ারের পানি প্রবেশ করে পটুয়াখালীর কলাপাড়া ও রাঙ্গাবালী , মির্জাগঞ্জ উপজেলার একাধিক গ্রামের হাজার হাজার মানুষ হুমকির মধ্যে জীবন যাপন করছেন। বর্ষা মৌসুম নদ নদীর পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে এ ভাঙন ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। চলতি পূর্নিমার প্রভাবে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে নদ-নদীর পানির উচ্চতা ২ থেকে ৩ ফুট বৃদ্ধি পাওয়ায় গত সপ্তাহে কলাপাড়া উপজেলার লালুয়া ও চম্পাপুর ইউনিয়নের নদী তীরবর্তী এলাকার ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি প্রবেশ করে অন্তত ১৩ গ্রাম প্লাবিত হয়। এছাড়া দু’দফা জোয়ারে পানিতে বন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় ২০ হাজার মানুষ। তলিয়ে যায় শত শত হেক্টর ফসলী জমি। ভেসে গেছে বেশ কিছু ঘের ও পুকুরের মাছ। বড় ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা। এতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে বেড়িবাঁধের বাহিরের বসবাসরত নিম্ন আয়ের মানুষ। পানি উন্নয়ন বোর্ড পটুয়াখালী নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম ইনকিলাবকে জানান, জেলার বাউফল উপজেলার কারখানা নদীর তীরে ৪৫০ মিটারএলাকায় নতুন করে ভাঙন দেখা দিয়েছে।

ফরিদপুর জেলা সংবাদদাতা জানান, জেলার ৯ উপজেলা সদরের পদ্মা, আড়িয়াল খাঁ, মধুমতি, গড়াই নদীর বন্যার পানি কমতে শুরু করছে। কমেনি নদী ভাঙন। স্থানীয়রা জানান, গত ৪ সপ্তাহে শুধু ফরিদপুর সদর গোলডাঙী এলাকার প্রায় ১২০০ বাড়ী ঘর ভেঙে নদীর বুকে বিলিন হয়ে গেছে। সরেজমিন গতকাল এই প্রতিনিধি ভাঙনের তীব্রতা পরিদর্শন করেন। সদর থানার গোলডাঙী এলাকার উস্তাডাঙী এলাকায় ভাঙন তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। কোন ভাবেই থামছে না নদী ভাঙন। বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো. মুজিবর রহমান ইনকিলাবকে জানান, অপরিকল্পিত অসহায় নদী ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করলে সরকারে টাকা এবং এলাকাবাসীর বাড়ী ঘর ফসলি জমি, ফসল, স্কুল মাদরাসা, সরকারি রাস্তার ক্ষতিগ্রস্থ হবে।

কালিগঞ্জ (সাতক্ষীরা) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, সাতক্ষীরার খোলপেটুয়া নদী পাড়ের মানুষের কান্না কিছুতেই থামছে না। চারিদিকে পানি আর পানি। এক চিলতে মাটিও নেই। চুলা জ্বলছে না। মাটি খুঁড়লেই পানি বেরিয়ে আসছে। খোলপেটুয়া নদী ভাঙনে বিপর্যস্ত বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের পশ্চিম দুর্গাবাটি গ্রামের হতদরিদ্র মলিনা রপ্তান, জোসনা সরকার, অনিমা সরকারের রান্নাঘর পানির তলায়। উঁচু করে চুলো বানিয়ে সারছেন রান্নার কাজ। অতিকষ্টে রান্না করতে পারেন মাত্র একবেলা। পানি কিছুটা কমে যাওয়ায় টিউবলের পানিতেই সারতে হচ্ছে গোসলসহ অন্যান্য কাজ। ঘরের ভেতরে খাটের ওপরে রেখেছেন আরেকটি খাট। তার ওপরে রাতপার করছেন। আকস্মিক নদী ভাঙন এলাকার মানুষের জীবন লবণ পানিতে ডুবিয়ে দিয়ে গেছে। এদিকে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা জানান, সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সেখানে রিং বাঁধ নির্মাণ করে ভাঙনের বিস্তৃতি রোধের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সাতক্ষীরা ৪ আসনের সংসদ সদস্য এস এম জগলুল হায়দার, সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মো. হুমায়ুন কবীর, শ্যামনগর উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, পাউবোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন।

সিংগাইর (মানিকগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, সিংগাইরে গাজীখালী নদীর ওপর নির্মিত সেতুটি উদ্বোধনের দুই বছর যেতে না যেতেই বন্যার কবলে নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যায়। পুনঃনির্মাণ না হওয়ায় ধামরাই ও সিংগাইর দুই উপজেলার মানুষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ও চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছে। সিংগাইর উপজেলার তালেবপুর ইউনিয়নের কলাবাগান মাজার সংলগ্ন গাজীখালী নদীতে সেতুটি দীর্ঘদিন ধরে ভাঙা অবস্থায় পরে আছে। যা এখন ১৮টি গ্রামের জনসাধারণের গলার কাটায় পরিণত হয়েছে। সবজি চাষে সমৃদ্ধ এ অঞ্চল। উৎপাদিত সবজি রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করতে হলেও, এ সেতুর কারণে প্রায় ৯ থেকে ১০ কিলোমিটার ঘুরে কাংশা হয়ে সিংগাইর সদর দিয়ে রাজধানীতে যেতে হয়। এলাকার কৃষকদের একদিকে সময় অপচয় ও অন্যদিকে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে তালেবপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. রমজান আলী জানান, নদীটি বড় আর সেতুটি ছোট করে নির্মাণ করার কারনে সেতুটি ভেঙ্গে গিয়েছে। ৪ কোটি ৮৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ওই নদীর উপর বর্ষার পরে নতুন ৫৭ মিটারের সেতু দ্রুত নির্মাণ করা হবে।

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, কলাপাড়ায় নদীতে সাগর মোহনার রাবনাবাদ নদীর উত্তাল ঢেউ একের পর এক আছড়ে পরছে বাঁধের উপর। এতে উপজেলার বালিয়াতলী ইউনিয়নের চরবালিয়াতলী গ্রামের ৪৭/৪ নম্বর পোল্ডারের প্রায় এক কিলোমিটার বেরিবাঁধ ক্ষত-বিক্ষত হচ্ছে। প্রতিদিন দুই দফা জোয়ারের ঢেউয়ের তান্ডবে বাধঁটি চারটি পয়েন্টে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এর ফলে ওই ইউনিয়নের পাঁচ গ্রামে মানুষের মাঝে চরম উদ্বেগ বিরাজ করছে। জরুরী ভিত্তিতে ভাঙন প্রতিরোধে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান গ্রামবাসীরা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন