গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনায় গ্রাম্য সালিশে লাখ টাকা নিয়ে মিমাংসার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার সাপমারা ইউনিয়নের চক রহিমাপুর গুচ্ছগ্রামে এই ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী থানায় অভিযোগ দিলেও তাকে গ্রাম্য সালিশ মানতে বাধ্য করা হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে সালিশকারীরা টাকা নিয়ে ভুক্তভোগীকে সালিশের সিন্ধান্ত মানতে বাধ্য করছে। জানা গেছে, চক রহিমাপুর গুচ্ছ গ্রামের হয়রতের ছেলে আউয়াল মিয়া একই গ্রামের ২২ বছর বয়সী এক গৃহবধূকে গত ২৮ জুলাই ধর্ষণের চেষ্টা করে। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী গৃহবধূ গোবিন্দগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের পর থেকে তাকে মিমাংসা করার জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকে গ্রাম্য মাতব্বরেরা। তিনি অভিযোগ তুলতে রাজি না হলেও গ্রাম্য সালিশের সিন্ধান্ত তাকে মানতে বাধ্য করা হয়।
গত রোববার বিকালে ওই গ্রামের বাবু মিয়ার বাড়ির উঠানে ইউপি সদস্য তুষার মাহদুদের নেতৃত্বে গ্রাম্য সালিশ হয়। সালিশে বাবু মিয়া, আলম, আলতাব সহ স্থানীয় মাতব্বরেরা উপস্থিত ছিলেন। তারা ধর্ষণের চেষ্টাকারী আউয়াল মিয়াকে ধর্ষণের চেষ্টার শাস্তি স্বরুপ জুতা দিয়ে দুটি বাড়ি দেয়া হয়। ভুক্তভোগীকে সালিশের সিন্ধান্ত মানতে বলা হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক মহিলা জানান, এক লাখ টাকা দিয়েছে আউয়ালের পরিবার। ভুক্তভোগীকে দেয়া হয়েছে ২০ হাজার টাকা। ৭৫ হাজার টাকা নিয়েছে সালিশকারীরা। বাকি ৫ হাজার টাকা অভিযোগ তুলতে খরচ বাবদ নেয়া হয়েছে। ভুক্তভোগী গৃহবূধর শাশুড়ি বলেন, ইউপি সদস্য তুষার একজন লোক পাঠিয়ে জোরপূর্বক তার ছেলে বউয়ের কাছ থেকে স্বাক্ষর নিয়ে নেয়। তিনি আইনের মাধ্যমেই ধর্ষণ চেষ্টার বিচার চান বলে আরও জানান।
গ্রাম্য সালিশে ধর্ষণের চেষ্টা মিমাংসার কথা অস্বীকার করে স্থানীয় ইউপি সদস্য তুষার বলেন, আইনগত ভাবে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ গ্রাম্য সালিশে মিমাংসা করার সুযোগ নাই।
অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার উপপরিদর্শক জহিরুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক তদন্তে ধর্ষণ চেষ্টার সত্যতা পাওয়া গেছে। গ্রাম্য সালিশের তথ্য তিনি জানেন না জানিয়ে বলেন, এ বিষয়ে গ্রাম্য সালিশে মিমাংসার সুযোগ নাই। আইন অনুসারেই এজাহার করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন