জ্বালানি তেল, গ্যাস দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে চরমভাবে ব্যর্থ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীদের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন ইসলামী দলের নেতৃবৃন্দ। বায়তুল মোকাররম উত্তর গেইটে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশ ও পৃথক পৃথক বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন। নেতৃবৃন্দ বলেন, জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির মাধ্যমে জনগণকে বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দেয়া হয়েছে। পার্শ্ববর্তী দেশে পাচারের অজুহাতে জ্বালাতি তেলের মূল্যবৃদ্ধি যৌক্তিক কোনো দাবি নয়। অবিলম্বে জ্বালানি তেলের বর্ধিত মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রি সাধারণ ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখতে পদক্ষেপ নিতে হবে।
ইসলামী যুব আন্দোলন : কেরোসিন ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে গতকাল রোববার বাদ যোহর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেইটে ইসলামী যুব আন্দোলনের উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, বর্তমান সরকার জনগণের কল্যাণ চায় না। তারা নিজেদের কল্যাণ নিয়ে ব্যস্ত। পাচারের অজুহাতে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক। করোনা মহামারির দারুণ দেশের জনগণ অনাহার-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন। নেতৃবৃন্দ বলেন, তেলবাজ সিন্ডিকেটের কারসাজির দরুণই জ্বালানি তেলের দাম বর্ধিত করা হয়েছে। খাদ্য, বস্ত্র, চিকিৎসা ও বাসস্থানের অধিকার দিতে না পারলে বর্তমান সরকারের ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই। তারা অবিলম্বে জ্বালানিত তেলের বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহারের জোর দাবি জানান। সংগঠনের সভাপতি মাওলানা মো. নেছার উদ্দিনের সভাপতিত্বে এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ইসলামী আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, মাওলানা আহমদ আব্দুল কাইয়ূম, মাওলানা লোকমান হোসেন জাফরী, মুফতি মানছুর আহমদ জাকি, মুফতি দেলোয়ার হোসেন সাকি, মুফতিক আব্দুল জলিল, মুফতি শেখ মো. নূরুন্নবী। মাওলানা ইমতিয়াজ আলম বলেন, বর্তমান সরকার রাতের অন্ধকারে ক্ষমতায় এসেছে। এই সরকার চোর ডাকাতের সরকারে পরিণত হয়েছে। তিনি মিছিল বের হতে না দেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে অবিলম্বে জ্বালানি তেলের বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহারের জোর দাবি জানান।
ইসলামী ঐক্যজোট : বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান আলহাজ মাওলানা মো. আব্দুর রকিব ও মহাসচিব অধ্যাপক আব্দুল করিম গতকাল একযুক্ত বিবৃতিতে বলেন, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির জনগণের ওপর বিপর্যয় নেমে আসবে। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে জনগণের নাভিশ্বাস উঠছে। তারা দেশ ও জনগণের স্বার্থে জ্বালানি তেলের বর্ধিত মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের জোর দাবি জানান। নেতৃদ্বয় বলেন, গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির কারণে জনগণকে অর্থনৈতিকভাবে চাপের মুখে ফেলে দেয়া হয়েছে। বর্তমানে কেরোসিন ও ডিজেলের মূল্য ১৫ টাকা বৃদ্ধির অজুহাতে গণপরিহনের ভাড়া বৃদ্ধির পাঁয়তারা করছে। নেতৃদ্বয় বলেন, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকার চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।
বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি : সম্প্রতি জ্বালানি তেল, গ্যাস, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে জনজীবন দূর্বিষহ করে তোলায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীদের পদত্যাগ দাবি করেছে বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। গতকাল রোববার পুরানা পল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংগঠনের মহাসচিব মাওলানা মুসা বিন ইযহার এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সাপ্তাহিক বৈঠকে নেতৃবৃন্দ এসব দাবি জানান। সংগঠন সচিব ও মহানগর আমীর মাওলানা আবু তাহের খানের সঞ্চালনায় এতে আরও উপস্থিত ছিলেন, পার্টির দফতর সচিব মুফতী দ্বীনে আলম হারুনী, প্রচার সচিব মাওলানা আবদুল্লাহ আল মাসউদ খান, শ্রমিক সমাজের আহবায়ক মাওলানা ওয়াহিদুল ইসলাম, সহ দফতর সম্পাদক মাওলানা জহিরুল ইসলাম নিজামী, ইসলামী ছাত্র সমাজের মহাসচিব এহতেশামুল হক সাখী, পার্টির তেজগাঁও থানা আমীর মাওলানা আশরাফুল ইসলাম, বংশাল থানা সেক্রেটারি মাওলানা তালহা বেলালী। নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশের গণমানুষ আজ অতিষ্ঠ দিশাহারা। নিত্যপণ্যের বাজারে চলছে সিন্ডিকেট নৈরাজ্য, অন্যদিকে কৃষক ন্যায্য দাম পাচ্ছে না। এধরনের পরিস্থিতি কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায় না। সভায় বক্তারা অবিলম্বে তেল গ্যাস এর দাম কমানো ও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের ন্যায্য মূল্যে নিশ্চিত করার জোর দাবি জানান।
বাংলাদেশ লেবার পার্টি : কেরোসিন ডিজেল জ্বালানি তেল ও এলপি গ্যাসের দাম অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান ইরান ও ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ফারুক রহমান এক বিবৃতিতে বলেন, জনস্বার্থকে উপেক্ষা করে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিসহ দফায় দফায় বিদ্যুৎ, গ্যাস ও জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। এতে ধনী গরীবের শ্রেণি বৈসাম্য প্রকট আকার ধারন করছে। সরকারের দুর্নীতি, লুটপাট ও অর্থপাচারের কারণে অর্থনীতি ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। নেতৃদ্বয় বলেন, অবিলম্বে ডিজেল, কেরোসিন ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে। তা না হলে জনদুর্ভোগে গণবিস্ফোরণ তৈরী হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন