শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্তর্জাতিক সংবাদ

 উত্তরপ্রদেশে প্রদীপের নীচেই অন্ধকার!

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৮ নভেম্বর, ২০২১, ৫:১২ পিএম

প্রদীপের নীচে জমাট অন্ধকারই। রূঢ় সেই বাস্তব এ বার তুলে ধরল উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যা। ভোটের ঠিক মুখে এ বারের দিওয়ালিকে স্মরণীয় করে রাখতে শুধু অযোধ্যাতেই ১২ লাখ প্রদীপ জ্বালিয়ে গিনিস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নিজেদের নাম তুলেছিল উত্তরপ্রদেশ সরকার।

যোগী আদিত্যনাথের এই 'দিওয়ালি বাম্পার’ মুগ্ধ করেছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও। শুক্রবারই মোদিকে বলতে শোনা গিয়েছিল, 'অযোধ্যা তার হারানো দ্যুতি ফিরে পেয়েছে।’ কিন্তু প্রদীপ নিভতেই যেন দাঁত-মুখ খিঁচিয়ে বেরিয়ে এল অন্ধকারের দৈত্য। শনিবার থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, হাতে শিশি-বোতল নিয়ে ওই লাখ লাখ প্রদীপের অবশিষ্ট তেল সংগ্রহে নেমেছে বাচ্চা ও মহিলারা।

কিন্তু কেন? নেটিজেনের একটা বড় অংশের দাবি, বাড়িতে রান্নার কাজে লাগাতেই অগ্নিমূল্য ওই সর্ষের তেল জোগাড়ে পথে নেমেছেন গরিব মানুষেরা। সেই ভিডিও শেয়ার করে যোগীকে বিঁধেছেন উত্তরপ্রদেশের সাবেক শিক্ষাসচিব সূর্যপ্রতাপ সিং-ও। তার কথায়, ‘১২ লাখ প্রদীপ জ্বালাতে ৩৬ হাজার লিটার সর্ষের তেল পুড়িয়েছে সরকার। তিনি কিন্তু খুব ভালো করেই জানেন যে, এ রাজ্যের ৩০ শতাংশ মানুষের রোজ খাওয়ার জোটে না। রাজ্যের অর্ধেক শিশু দুধ খেতে পায় না। তাই এমন একটা পরিস্থিতিতে এমন বিপুল সমারোহে দিওয়ালি আয়োজন করে যোগী সরকার ওই গরিব মানুষদেরই ব্যঙ্গ করেছে।’

কিন্তু প্রদীপের তলানি এই তেল কি আদৌ খাওয়ার যোগ্য? এমনকী, এই তেল ভেজাল হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন বছর ছয়েক আগে অবসর নেওয়া আমলা সূর্যপ্রতাপ। তার কটাক্ষ, '৩৬ হাজার লিটার তেল কী ভাবে, কার থেকে কেনা হলো, তা নিয়ে বহু প্রশ্ন থাকতে পারে। সরকারি তরফে দুর্নীতির আশঙ্কাও অমূলক নয়। ভেজালও থাকতে পারে। সে কথা পরে হবে। কিন্তু এই কুড়িয়ে পাওয়া তেলে রান্না করা খাবার খেয়ে কারও বিপদ হলে, তার দায় কিন্তু যোগী সরকারের উপরই বর্তাবে।’

যোগী আদিত্যনাথ ২০১৭-য় যখন ক্ষমতায় এসেছিলেন, উত্তরপ্রদেশে সর্ষের তেল তখন ৭০ টাকা লিটার। মাত্র চার বছরের ব্যবধানে উত্তরপ্রদেশে সেই তেলের দাম এখন ২০০ থেকে ২৬৫ টাকা লিটার। ভোজ্য তেলের এই লাগামছাড়া দামের জন্যই তা জোগাড়ে মেয়ে-শিশুদের এ ভাবে পথে নামতে হয়েছে বলে দাবি নেটিজেনদের। সরযূর তীরে শীতের হাওয়ায় খুব বেশিক্ষণ জ্বলেনি প্রদীপ। আর বাচ্চারা যেন তার অপেক্ষাতেই ছিল। প্রদীপ নিভতেই খালি হাতে সেই তপ্ত সলতে সরিয়ে চলল তেল জোগাড়! গভীর রাত পর্যন্ত।

রাজ্যের সাবেক শিক্ষাসচিবের শেয়ার করা ওই ভিডিওর প্রেক্ষিতে এক জনের মন্তব্য- 'জনগণের করের টাকায় এই বিপুল অর্থধ্বংসের যজ্ঞ না-করে যোগী সরকার যদি রাজ্যের প্রতিটি গরিব পরিবারকে হাফ লিটার করেও তেল দিত, তাহলে একটা দিন ওরা অন্তত ঠিকঠাক রান্না করা খাবার পেত!' সূত্র: টিওআই।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন